বিধিবহির্ভূতভাবে মেডিকেল ও ডেন্টাল কোর্স পরিচালনা করায় ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (ইউএসটিসি) কর্তৃপক্ষকে ১০ কোটি টাকা জরিমানা করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। পাস করে যাওয়া বিদেশী শিক্ষার্থীদের সনদের স্বীকৃতি দিতে বিশেষ বিবেচনায় এই জরিমানা করা হয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মেডিকেল শিক্ষা সংক্রান্ত কমিটির সুপারিশের আলোকে এই জরিমানা করা হয়।
মঙ্গলবার (১৪ই ফেব্রুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বৈঠকেও এ কথা প্রকাশ করা হয়। এর ফলে এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে যাওয়া তিনটি ব্যাচের দেশী-বিদেশী শিক্ষার্থীদের সনদের সরকারি স্বীকৃতি মিলবে। বেশ কিছুদিন ধরে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের সনদের স্বীকৃতির দাবিতে রাজপথে আন্দোলন করে আসছিল। এ নিয়ে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরাও সমস্য সমাধানে সরকারের ওপর চাপ তৈরি করছিল। সূত্র জানায়, কিছু শর্তসাপেক্ষে ইউএসটিসির মেডিকেল ও ডেন্টাল কোর্স চালু রাখারও অনুমতি দেয়া হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) যুগ্ম সচিব ড. ফখরুল ইসলাম। বুধবার (১৫ই ফেব্রুয়ারি) রাতে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টিকে জরিমানা করার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে শ্রীলংকা, নেপাল, ভারত ও ভুটানসহ বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীরা এমবিবিএস ও বিডিএস কোর্সে লেখাপড়া করে আসছিল। আইন অনুযায়ী কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই দুটি কোর্স পরিচালনা করতে পারে না। কিন্তু ইউএসটিসি কর্তৃপক্ষ সরকারের নির্দেশনা উপেক্ষা করে মামলার জোরে কোর্স দুটি পরিচালনা করে আসছিল। কিন্তু কোর্স পরিচালনার ব্যাপারে আইনি জটিলতা থাকায় বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) সনদের স্বীকৃতি দিচ্ছিল না।
এর ফলে মিক্ষার্থীরা পেশাগত প্র্যাকটিস ও চাকরি পাচ্ছিল না। পরবর্তী উচ্চশিক্ষার জন্যও ভর্তি হতে পারছিল না।
এ সংক্রান্ত কমিটির সদস্য ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দীন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘ইউএসটিসি সরকারি সিস্টেম না মেনে মেডিকেল ও ডেন্টাল কোর্স পরিচালনা করেছিল। তারা অনেক বিদেশী শিক্ষার্থীকে লেখাপড়া করিয়েছে। বিদেশে দেশের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে শিক্ষার্থীদের সনদের স্বীকৃতি দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তবে এর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়টির কাছ থেকে জরিমানা আদায়ের সুপারিশ করেছে কমিটি।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে উপস্থিত ইউজিসির যুগ্ম সচিব ড. ফখরুল ইসলাম বলেন, দেশী-বিদেশী শিক্ষার্থীদের শিক্ষার সনদ কে দেবে- মঙ্গলবারের বৈঠকে সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে সেটা হতে পারে। তবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এটা ঠিক করে দেবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইউজিসি বারবার ইউএসটিসিকে এ ব্যাপারে সতর্ক করেছে। কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে। তদন্তও হয়েছে। কিন্তু তারা বলেছে, আইন মেনে বিশ্ববিদ্যালয় চালাবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা তারা করেনি।