বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত পল্লীর দরিদ্র পরিবারের তিন মেধাবী শিক্ষার্থী রাকিবুল আলম রাফি, সোমা দাস ও নাজমুল হাসান। শত বাঁধা পেরিয়ে এবারের উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষায় তিনজনেই অভাবনীয় সাফল্য বয়ে এনেছেন।
দারিদ্রতাকে হার মানিয়ে ভালো ফলাফল অর্জন করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। তবে দরিদ্রতার মধ্যে এইচএসসিকে জয় করেও উচ্চ শিক্ষা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য স্বপ্ন দেখলেও পরিবারের অর্থনৈতিক অস্বচ্ছলতা তাদের সেই স্বপ্ন অন্ধকারে ঢেকে দিচ্ছে।
দরিদ্রতার মধ্যে দিয়েও এইচএসসিকে জয় করা নিম্ন-মাধ্যবিত্ত পরিতারের তিন সন্তান রাকিবুল আলম রাফি, সোমা দাস ও নাজমুল হাসান এর সাথে তাদের স্বপ্ন নিয়ে কথা হয় দৈনিক শিক্ষা ডটকম এর সাথে। তারা জানিয়েছেন তাদের স্বপ্ন আর সম্ভাবনার কথা।
রাকিবুল আলম রাফিঃ এইচএসসি পরীক্ষা জিপিএ-৫ পেয়েও অর্থাভাবে উচ্চ শিক্ষা গ্রহন নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকা রাফি বাবুগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত রাকুদিয়া গ্রামের দিনমজুর শহিদুল আলম মামুনের পুত্র। বাবুগঞ্জ সরকারী আবুল কালাম ডিগ্রি কলেজ থেকে চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়া রাফি এসএসসিতেও জিপিএ-৫ পেয়েছিল। বাবার একার আয়ে ছয় সদস্যর সংসারে রাফি ভাল ফলাফল করলেও অর্থভাবে এখন তার উচ্চ শিক্ষা নেয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। রাফি উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে ডাক্তার হতে চায়।
সোমা দাসঃ বাবুগঞ্জের বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ সাকোকাঠী গ্রামের মৃত জীবন দাসের কন্যা সোমা দাস। জন্মের পর বাবাকে হারিয়ে অভাবের সংসারে বড় হওয়া সোমা এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছিলো। মা অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে কোনমতে সংসার পরিচালনা করছেন। যে কারনে অর্থাভাবে জীবনে কোনদিন প্রাইভেটও পরতে পারেনি সোমা। তার পরেও থেমে থাকেনি সোমার উচ্চ শিক্ষায় জীবন গড়ার যুদ্ধ। চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষায় আগরপুর ডিগ্রি কলেজ থেকে বাণিজ্য বিভাগ থেকে সোমা দাস জিপিএ-৪.১৭ পেয়েছে। সোমা উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে অধ্যাপনায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চান। কিন্তু অর্থাভাবে তার উচ্চ শিক্ষা অর্জনের স্বপ্ন অন্ধকারে হারিয়ে যাচ্ছে।
নাজমুল হাসানঃ চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষায় রাশেদ খান মেনন মডেল স্কুল এ্যান্ড কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে উপজেলা সদরের খানপুরা এলাকার দিনমজুর দেলোয়ার হোসেনের পুত্র নাজমুল হাসান। এসএসসিতেও জিপিএ-৫ অর্জন করেছিলো সে। এখন তার স্বপ্ন উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে ব্যারিষ্টার হওয়ার। কিন্তু অস্বচ্ছল পরিবারে অর্থাভাবে তার সেই স্বপ্ন কতটা বাস্তবে রুপ নিবে সেটাই নাজমুল ও তার পরিবারের দুশ্চিন্তার কারন হয়ে দাড়িয়েছে।