প্রায় ৫৩ হাজার আবেদনকারীর মধ্যে লিখিত পরীক্ষায় উপস্থিত মাত্র সাড়ে আট হাজার তবু ফল প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের নিয়োগ কর্তারা। আবেদনকারীরা ২০১৩ খ্রিস্টাব্দে চাকরির জন্য আবেদন করেছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই জানতে পারেননি ২০১৬ খ্রিস্টাব্দের ১৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত লিখিত পরীক্ষার খবর। এই সুযোগে কর্তৃপক্ষ নিজেদের লোক নিয়োগ দেয়ার পাঁয়তারা করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নিয়োগ কমিটিতে থাকা শিক্ষা ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করেছেন পরীক্ষাবঞ্চিত আবেদনকারীরা।
অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ১৯শে জানুয়ারি বৃহস্পতিবার ফল প্রকাশ করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বিভাগীয় নির্বাচন কমিটি। নিয়োগপ্রাপ্তরা অধিদপ্তর, সরকারি স্কুল, মাদ্রাসা ও কলেজে পদায়ন পাবেন।
গত ১৭ ডিসেম্বর শরীরচর্চা শিক্ষক, গবেষণা সহকারি ও সহকারি গ্রন্থাগারিক কাম ক্যাটাগলারসহ তৃতীয় শ্রেণির কয়েকটি পদে লিখিত পরীক্ষা নেয় অধিদপ্তর। আগের পরীক্ষায় দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ থাকায় ওই পরীক্ষা বাতিল হয় তাই মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে এবারের পরীক্ষার দায়িত্ব দেয়া হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএকে। এতে পরীক্ষার খরচ বেড়ে যায় চারগুণ।
নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো: মেজবাহ উদ্দিন বুধবার দৈনিকশিক্ষাডটকমকে জানান, “হ্যাঁ উপস্থিতি একটু কম হয়েছে ”। মেজবাহ কীভাবে নিয়োগ কমিটিতে তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। অতীতে দেখা গেছে, উপ-পরিচালক (সাধারণ প্রশাসন) নিয়োগ কমিটিতে থাকেন। এই পরীক্ষার শুরুতে তাকে রাখা হলেও পরে বাদ দেয়া হয় অজ্ঞাত কারণে।
জানতে চাইলে মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. এস এম ওয়াহিদুজ্জামান বুধবার দৈনিকশিক্ষাডটকমকে বলেন, “আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি পরীক্ষার তারিখ সবাইকে জানানোর। তারপরও এত কম উপস্থিতি। আবেদনের দীর্ঘদিন পর পরীক্ষা তাই হয়তো আবেদনকারীর আগ্রহ হরিয়ে ফেলেছেন।
এত কম পরীক্ষার্থী উপস্থিত তাই নতুন করে আবেদন আহবান করবেন কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে মহাপরিচালক বলেন, এই পরীক্ষা আগে একবার হয়েছে। দুর্নীতির অভিযোগে তা বাতিল হয়ে এবার দ্বিতীয়বার হতেই এত সময় লাগলো। তৃতীয়বার নিতে গেলে আর কতো দেরি হবে তা কে জানে?
আবেদনকারীরা বলেছেন, অনেকেই জানতে পারেননি পরীক্ষার খবর। অপরদিকে যারা নিয়োগের জন্য লাখ লাখ টাকা দিয়েছিলেন তারা প্রতিদিন অধিদপ্তরে গিয়ে খোঁজ নেন পরীক্ষা ও ফলাফলের। তাদের তদবিরটা বেশি। আবার যারা সাড়ে তিন বছর আগে নিয়োগ দেয়ার জন্য টাকা নিয়েছিলেন প্রার্থীদের কাছ থেকে তাদের অনেকেই অবসরে এবং অন্যত্র বদলি হয়ে গেছেন।
নিয়োগে বি সি এস সাধারণ শিক্ষা সমিতির কতিপয় নেতার সংশ্লিষ্ট থাকাসহ নানা অনিয়মের অভিযেগে ২০১৩ খ্রিস্টাব্দের নেয়া নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল হয়। মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ এস মাহমুদের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে পরীক্ষা বাতিলের সুপারিশ করা হয়।
এছাড়াও দুর্নীতি দমন কমিশন কয়েকদফা চিঠি দিয়ে জানতে চায় বি সি এস শিক্ষা সমিতি কীভাবে মা্উশি অধিদপ্তরের নিয়োগে সংশ্লিষ্ট হলো? অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চেয়ে দুদকের সর্বশেষ চিঠি আসে গত বছরের জুন মাসে।