‘একইসাথে দুই প্রতিষ্ঠান প্রধান’ সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার নির্দেশ - দৈনিকশিক্ষা

‘একইসাথে দুই প্রতিষ্ঠান প্রধান’ সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার নির্দেশ

ডুমুরিয়া (খুলনা) প্রতিনিধি |

একই ব্যক্তি দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসেবে চাকুরি করার অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় কারণ দর্শাও নোটিশ প্রদানের পর ঐ ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চিঠি দিয়েছেন বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড। শেখ আব্দুল হান্নান নামে ঐ ব্যক্তি খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার থুকড়া ইসলামিয়া ওয়াজেদিয়া দাখিল মাদরাসার সুপার আবার যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার এবিজিকে ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত।

একই ব্যক্তি দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করার অভিযোগ এনে এস এম গোলাম সরোয়ারসহ কতিপয় ব্যক্তি লিখিত অভিযোগ করেন। দৈনিক শিক্ষায় গত ৩১ আগস্ট বিষয়টি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে শিক্ষা বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়।

এলাকাবাসি ও সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়; মাদ্রাসা সুপার শেখ আব্দুল হান্নান ১ সেপ্টেম্বর ১৯৯৬ খ্রিস্টাব্দ থেকে থুকড়া ইসলামিয়া ওয়াজেদিয়া দাখিল মাদরাসার সুপার হিসেবে নিয়োগ পান। নিয়োগ পাওয়ার পর থেকেই তিনি স্বেচ্ছাচারিভাবে মাদ্রাসার কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। স্থানীয় অভিভাবক, পরিচালনা পরিষদের কাউকে তিনি পাত্তা দেননি। এমনকি ২০১৫ খ্রিস্টাব্দে মাদ্রাসার পরিচালনা পরিষদের মেয়াদ শেষ হলেও কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেনি। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানে কমিটি না থাকায় মাদ্রাসার সার্বিক বিষয় অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়।

প্রতিষ্ঠানের দাতা সদস্য ও সাবেক সভাপতি এসএম গোলাম কুদ্দুস বলেন; আমাদের অতি কষ্টে গড়া মাদ্রাসাটি সুপার এক হাতেই নষ্ট করে ফেলছে। তার স্বেচ্ছাচারিতার কারণে গত তিন বছর ধরে মাদ্রাসায় নিয়মিত কমিটিতো দূরে থাক এডহক কমিটিও নেই। বিধিমোতাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার স্বাক্ষরে শিক্ষক কর্মচারিদের বেতন ভাতা উত্তোলন করতে হচ্ছে। প্রতিষ্ঠান এখন অচলাবস্থায় চলছে।

অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২০১৬ খ্রিস্টাব্দের ২৪শে জানুয়ারি এক স্মারকে ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার তদন্তপূর্বক মতামতসহ একটি প্রতিবেদন দাখিল করেন। তদন্ত প্রতিবেদনে সুপার শেখ আব্দুল হান্নান (ইনডেক্স নং- ৩৬৫১৮২) এর বিরুদ্ধে একই সময়ে দুটি প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করার অভিযোগ প্রমানিত হয়। তিনি থুকড়া ইসলামিয়া ওয়াজেদিয়া দাখিল মাদরাসার সুপার দাবি করেন। আবার যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার এবিজিকে ফাজিল মাদরাসা অধ্যক্ষ হিসেবে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ১জি/২৪৭/বি:/০৮/১৪৪০/২- বিশেষ এর বিরুদ্ধে ২০১৫ খ্রিস্টাব্দের ২৫শে ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট বিভাগে রিট পিটিশন দাখিল করেন। যার নং ২৬৮০/২০১৫।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড সুপার শেখ আ: হান্নানকে একই সাথে দুটি প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করার কারণে তার বিরুদ্ধে কেন বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পত্র প্রেরণ করা যাবে না সে বিষয়ে ১০ দিনের মধ্যে সন্তোষজনক জবাব দাখিলের জন্য কারণ দর্শানো নোটি প্রাদন করে। কিন্তু সুপার শেখ আঃ হান্নান নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জবাব দেননি বরং পরবর্তিতে জবাব প্রদানের জন্য ১ মাসের সময় চেয়ে আবেদন করেন। যা মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের নিকট সন্তোষজনক প্রতীয়মান হয়নি।

এমতাবস্থায় একই সময়ে দুটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকা, সরকারি দপ্তরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা এবং বোর্ড কর্তৃক প্রদত্ত সময়ের মধ্যে জবাব প্রদান না করাসহ সুপার শেখ আঃ হান্নান (ইনডেক্স নং ৩৬৫১৮২) এ হেন কার্যকলাপ বেসরকারি মাদরাসা শিক্ষকের চাকুরি বিধি ১৯৭৯ এর পরিপন্থি হওয়ায় তার বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ জানিয়ে ২৬ অক্টোবর মহাপরিচালক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, ঢাকা। পরিচালক, বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস) নিলক্ষেত, ঢাকাসহ দুটি প্রতিষ্ঠানের সভাপতি বরাবরে পত্র প্রেরণ করেছেন মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড।

এ বিষয়ে শেখ আব্দুল হান্নান বলেন; নিয়োগবিধি অনুযায়ী ২০১৩ খ্রিস্টাব্দের ৫ জানুয়ারি কেশবপুর উপজেলার এবিজিকে ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ হিসেবে নামে মাত্র যোগদান করি। তবে থুকড়া ইসলামিয়া ওয়াজেদিয়া দাখিল মাদরাসার সুপার পদে পদত্যাগ বা ছাড়পত্র নেইনি। সেখানে অধ্যক্ষের কোন দায়িত্বও নেইনি। তবে মানবাধিকারের প্রশ্নে আমি এমপিওভুক্তির জন্য মহামান্য হাইকোর্টে একটি রিট করি। সেখানে থুকড়া ইসলামিয়া ওয়াজেদিয়া দাখিল মাদরাসার ছাড়পত্র বা পদত্যাগপত্র না থাকায়  ২০১৭ খ্রিস্টাব্দের ১২ই এপ্রিল আমার রিট খারিজ করে দেন। মহামান্য হাইকোর্টের রায়ের পর এককভাবে আমি থুকড়া ইসলামিয়া ওয়াজেদিয়া দাখিল মাদরাসার সুপার পদেই আছি। আমাকে হেয় প্রতিপন্ন ও ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে একটি মহল আমার বিরুদ্ধে লেগেছে।

শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0072920322418213