শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আদেশ অনুযায়ী নিবন্ধনধারীদের মধ্য থেকে প্রার্থী বাছাইয়ে লিখিত (ঐচ্ছিক বিষয়) পরীক্ষায় একাধিক প্রার্থীর প্রাপ্ত নম্বর সমান হলে বয়সে সিনিয়রদের অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। এতেও সমাধান না হলে এসএসসি বা সমমান পরীক্ষার ফলাফল বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। এতেও সমাধান না হলে সংশ্লিষ্ট পদের জন্য প্রযোজ্য সর্বোচ্চ ডিগ্রির ফলাফল বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। এন্ট্রি লেভেলে শিক্ষক নিয়োগের লক্ষ্যে নিবন্ধনধারী আবেদনকারীদের মধ্য থেকে প্রার্থী বাছাইয়ে মন্ত্রণালয়ের এমন আদেশ অনুযায়ী কাজ করেছেন বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্টরা। এভাবেই তারা মেধা তালিকা প্রকাশ করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষক নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের একাধিক কর্মকর্তা দৈনিকশিক্ষাডটকমকে এ খবর নিশ্চিত করেছেন।
আবেদনকারীদের মধ্যে কেউ কেউ বলেছেন যারা বয়সে নবীন তারা কোনো বিরতি ছাড়াই পড়াশোনা শেষ করে নিবন্ধন পরীক্ষা দিয়েছেন শিক্ষক হওয়ার লক্ষ্যে। সুতরা নবীনরা অপেক্ষাকৃত মেধাবী। প্রার্থী বাছাইয়ে বয়সে সিনিয়রদের অগ্রাধিকার দেয়ায় বৈষম্যের শিকার হলো নবীনরা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ অধ্যক্ষ পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ মাজহারুল হান্নান দৈনিকশিক্ষাডটকমকে বলেন, প্রার্থী বাছাইয়ের যদি অগ্রাধিকার দিতেই হয় তবে নবীনদেরই অগ্রাধিকার থাকা উত্তম ছিলো।
অপরদিকে নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের দায়িত্বশীলরা বলেছেন, কোনো সিদ্ধান্তে সবাই খুশী হতে পারবে না। কেউ খুশি হবে কেউ অখুশী হবে। তবু সিদ্ধান্ত তো একটা নিতে হবে। ইচ্ছে করে যারা বয়স কমিয়ে জন্ম সনদ নিয়েছেন তারা হতাশ হয়েছেন।
নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের অফিসাররা বলেছেন, ১ম থেকে ১২তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্যে যারা এন্ট্রি লেভেলে [প্রভাষক, সহকারি শিক্ষক, মৌলভী শিক্ষক ইত্যাদি] বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা পদের জন্য আবেদন করেছেন শুধু তাদেরকেই মেধা তালিকায় স্থান দেয়া হয়েছে। ২০০৫ থেকে ২০১৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এ ধরণের মোট ১২টি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। নিয়োগ পরীক্ষা অংশগহনের জন্য প্রাক-যোগ্যতা নির্ধারণী এ পরীক্ষায় ২০০ নম্বরের পরীক্ষা নেয়া হয়েছিল। ১০০ আবশ্যিক ও ১০০ নম্বর ঐচ্ছিক বিষয়ে পরীক্ষা দিয়েছেন তারা। সাধারণভাবে ঐচ্ছিক মানে হলো প্রার্থী যে বিষয়ে সর্বোচ্চ ডিগ্রি/মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেছেন অথবা যে বিষয়ে অনার্স-মাস্টার্স করে প্রভাষক পদের জন্য পরীক্ষা দিয়েছিলেন।
কর্মকর্তারা বলেন, পনের হাজারের বেশি পদে জন্য ১৪ লাখের বেশি আবেদন জমা পড়েছে। এক প্রার্থী একাধিক আবেদন করেছেন। মেধা তালিকা তৈরির সময় দেখা গেছে একাধিক প্রার্থী লিখিত [ঐচ্ছিক] পরীক্ষায় সমান নম্বরধারী। এমন প্রার্থীদের মধ্যে বাছাইকালে প্রথমে বয়সে যারা সিনিয়র তাদেরকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। এরপর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল। সবশেষে সংশ্লিষ্ট পদের জন্য প্রযোজ্য সর্বোচ্চ ডিগ্রির ফলাফল বিবেচনা করা হয়েছে।
যদি কোনো প্রার্থী ইংরেজি বিষয়ে অনার্স/মাস্টার্স ডিগ্রিধারী হন এবং তিনি হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাওয়া জন্য আবেদন করেন এবং তাকে একই মেধার একাধিক প্রার্থীর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হয় তবে প্রথমে তার বয়স তারপর এসএসসির ফল এবং সবশেষে ঐ প্রার্থীর ইংরেজি বিষয়ের অনার্স/মাস্টার্স পরীক্ষার ফলাফল বিবেচনায় নেয়া হয়েছে।