রাজধানীসহ সারাদেশের কয়েকডজন কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা এবার এসএসসি উত্তীর্ণদের তালিকা সংগ্রহ করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে আবেদনের জন্য ফ্রি এসএমএস করে দিচ্ছে। কলেজ কর্তৃপক্ষ ওই শিক্ষার্থীকে কৌশলে সংশ্লিষ্ট কলেজকে পছন্দের তালিকায় রাখতে বাধ্য করছে। আবার কোথাও কোথাও ভর্তিচ্ছুদের না জানিয়েই এস্এমএস-এর মাধ্যমে আবেদন করে দিচ্ছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
ট্রাস্ট কলেজের অধ্যক্ষ বশির আহমেদ ভুইয়া বলেন, অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীদের এসএমএস করিয়ে দেওয়া হয়। তালিকায় অখ্যাত ও নিম্নমানের কলেজ রাখা হয়। এ কারণে শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ন্যাশনাল কলেজের অধ্যক্ষ শহীদুল আলম একই অভিযোগ করে বলেন, অনেক প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ বাড়ি বাড়ি গিয়ে শিক্ষার্থীদের ফ্রি এসএমএস করে দেওয়ার নামে প্রতারণা করছে।
ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের বড় গোপালদী গ্রামের শুকুর মাহমুদ স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছে, এসএসসি পরীক্ষার শেষ দিন স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে প্রবেশপত্র নিয়ে নেয়। ৯ মে থেকে অনলাইনে কলেজে ভর্তির নিবন্ধন শুরু হলে শিক্ষার্থীরা নিবন্ধন করতে গিয়ে দেখে, তাদের নামে আগেই নিবন্ধন করা হয়ে গেছে। অর্থাৎ ওই প্রতিষ্ঠান থেকে আগেই তাদের নামে নিবন্ধন করে রাখা হয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দের কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে না।
এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা এবার আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে মোট ৯ হাজার ৮৩টি কলেজে ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে। এ সব কলেজে একাদশ শ্রেণিতে আসন রয়েছে প্রায় ২১ লাখ।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভর্তি নীতিমালা অনুযায়ী গত ৯ মে থেকে দেশব্যাপী একযোগে চলছে একাদশ শ্রেণির ভর্তি কার্যক্রম। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি (আইআইসিটি) এবং কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ এবার একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন গ্রহণ ও প্রক্রিয়াকরণে কারিগরি সহয়তা দিচ্ছে।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা জানান, আবেদনের ফি কেটে নেওয়া হচ্ছে মোবাইল ফোনেই। আর ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা দেশের যে কোনো প্রান্ত থেকে কোনো রকমের ঝামেলা ছাড়াই আবেদন করতে পারছে অন্তত ১০টি কলেজে। এতে শিক্ষার্থীদের সময় ও অর্থ সাশ্রয় হচ্ছে। কোনো ভোগান্তি নেই। তবে একাধিক অভিভাবকের অভিযোগ, অনলাইনে আবেদন ফি কম হলেও মোবাইল এসএমএসের মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থীকে ১০টি কলেজে আবেদন করতে ১ হাজার ২০০ টাকা দিতে হচ্ছে। এ অর্থ বাড়তি। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এভাবে বাড়তি অর্থ কোন্ কাজে ব্যয় হবে তা প্রকাশ করার দাবি জানান আমিনুল ইসলাম নামে এক অভিভাবক।
নীতিমালা অনুযায়ী, প্রথম পর্যায়ে ভর্তি ২০ জুন শুরু হয়ে শেষ হবে ২২ জুন। এরপর ২৮ ও ২৯ জুন ভর্তি করা হবে। শুধুমাত্র পুনঃনিরীক্ষণে ফলাফল পরিবর্তিত শিক্ষার্থীদের পুনরায় ৩০ থেকে ৩১ মে আবেদন গ্রহণ করা হবে। এই শিক্ষার্থীদের সিলেকশন নিশ্চয়ন করা হবে ৬ থেকে ৮ জুন পর্যন্ত।
প্রথম পর্যায়ের নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ফল প্রকাশ করা হবে ৫ জুন। দ্বিতীয় পর্যায়ে ফল প্রকাশ করা হবে ১৩ জুন এবং তৃতীয় পর্যায়ের ফল প্রকাশ করা হবে ১৮ জুন। এ ছাড়া ১৩ জুন দ্বিতীয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের সিলেকশন নিশ্চয়ন ও তৃতীয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীর সিলেকশন নিশ্চয়নের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ১৯ জুন।