নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন শিক্ষার্থী এক সেমিস্টার অনুপস্থিত থাকলে ছাত্রত্ব বাতিল করা হবে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। রোববার (১০জুলাই) বিকেলে এক জরুরি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এতে উঠে এসেছে, কোনো ছাত্র-ছাত্রী এক সেমিস্টারও অনুপস্থিত থাকতে পারবেন না। তাদের নিয়মিত হতে হবে। চলমান সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিকাণ্ডে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থীর নাম উঠে আসার পর এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ও ইতোমধ্যে উঠে এসেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে জঙ্গিবাদী বইসহ নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি (এনএসইউ) কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। নানা কারণে সমালোচিত ও আলোচিত বিশ্ববিদ্যালয়টির গ্রন্থাগারে জঙ্গিবই, জমি কেনায় অনিয়ম, ভর্তি বাণিজ্য, সাধারণ তহবিল থেকে ট্রাস্টিদের আর্থিক সুবিধা গ্রহণ ও বিদেশ ভ্রমণ, ট্রাস্টি বোর্ডের কয়েক সদস্যের স্বেচ্ছাচারিতা ও আদালতে এ নিয়ে মামলা-মোকদ্দমাসহ নানা বিষয়ে সম্প্রতি তদন্ত করে ইউজিসি।
তদন্তকালে ইউজিসি দল এনএসইউর গ্রন্থাগার পরিদর্শন করে। পরিদর্শনকালে নিষিদ্ধ জঙ্গি তৎপরতামূলক হিযবুত তাহ্রীরের বই গ্রন্থাগারে পাওয়া যায়। এ বই গত বছরের ১৩ আগস্ট সর্বশেষ ইস্যু করা হয়।
তদন্ত কমিটি বলেছে, গ্রন্থাগারে এ ধরনের বই রাখা বেসরকারি আইনের ৬ (১০) ধারার লঙ্ঘন। স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, জাতীয় স্বার্থ ও শিক্ষার্থীদের স্বার্থের পরিপন্থী বিবেচিত হওয়া এনএসইউর গ্রন্থাগারের সংরক্ষিত নিষিদ্ধ সব বই পুড়িয়ে ফেলার নির্দেশ দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করেছে ইউজিসি। প্রতিবেদন পাওয়ার পর মন্ত্রণালয় নর্থসাউথ ভার্র্সিটি কর্তৃপক্ষকে জঙ্গিবাদী ও স্বাধীনতা বিরোধী বইগুলো পুড়িয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে বলে বিশ্বস্তসূত্রে জানা গেছে। প্রতিবেদনের কপি দৈনিকশিক্ষাডটকম’র হাতে রয়েছে।
কমিশনের তদন্তে দেখা গেছে, ইউজিসির অনুমোদনের বাইরে একাধিক সেকশন চালু করে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করা হচ্ছে এনএসইউতে। প্রায় সাড়ে ১৭ হাজার শিক্ষার্থীর এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চাপের মুখে বের করে দেওয়া হয়েছে উপাচার্য আমিন উদ্দিন সরকারকে। তিনি বিদেশে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর থেকে নিযুক্ত এই উপাচার্য চার বছরের জন্য এ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ পেয়েছিলেন।
ইউজিসির দুই সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটির প্রধান কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ইউসুফ আলী মোল্লা। অপর সদস্য ছিলেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগের উপপরিচালক জেসমিন পারভীন। গত ১১ অক্টোবর এ তদন্ত প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়। তদন্তকালে ইউজিসির তদন্ত দল এনএসইউর লাইব্রেরিতে নিষিদ্ধ ঘোষিত হিযবুত তাহ্রীরের বই পেয়েছে।