চলমান এইচএসসি পরীক্ষার একটি মূল্যায়ন করা উত্তরপত্রের ছবি ও প্রাপ্ত নম্বর নিয়ে ফেসবুকে শোরগোল শুরু হয়েছে। বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের ইংরেজি ১ম পত্রের পরীক্ষার খাতা পরীক্ষক কর্তৃক মূল্যায়ন করার পর ওই উত্তরপত্রের বেশকিছু ছবি সম্প্রতি ফেসবুকের একটি গ্রুপে প্রকাশ করা হয়। একাধিক ছবিযুক্ত ওই পোস্টটি একাধিক ফেসবুক আইডিধারী সংগ্রহ করে তাদের নিজস্ব একাউন্টে পোস্ট করতে থাকেন। কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার Farhabi Islam Rafi নামের একজনের ফেসবুক আইডি থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে ছবিগুলো।
ফেসবুক থেকে পাওয়া ছবিতে দেখা যায় উত্তরপত্রটি বরিশাল বোর্ডের এক ছাত্রীর। ওই ছাত্রী তার আশানুরুপ পরীক্ষা দিতে না পারায় সে উত্তরপত্রের মূল্যায়নকারীর কাছে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ করে দেয়ার অনুরোধ জানায়। উত্তরপত্রের প্রতি পৃষ্ঠায় বাংলা তা লেখেন তিনি। তবে ফেসবুকে পোস্ট করা ছবিগুলো থেকে দেখা যায় সে পরীক্ষায় ১৮ পেয়েছে। উত্তরপত্রে তিনি লেখেন, “স্যার আপনার মেয়ে মনে করে পাস করিয়ে দিয়েন। আমরা অনেক গরীব, ফেল করলে বাবা স্ট্রোক করে মারা যাবেন।” “আমার বাবা অসুস্থ তাই, প্রাইভেট পড়তে পারিনি।যদি ফেল করি তাহলে আর পড়াবে না।”
এ নিয়ে বিভিন্ন ধরণের কমেন্ট দিয়ে ছবিগুলো পোস্ট করছে একাধিক আইডিধারী। ওই সব পোস্টে আবার কেউ কেউ ওই পরীক্ষার্থীকে পাস করিয়ে দেয়া আবার কেউ কেউ এর বিরুদ্ধে কথা বলছে।
এ ধরণের একটি পোস্ট দৈনিক শিক্ষার হাতে আসলে পোস্টটি আপলোডকারী ব্যাক্তির সাথে যোগাযোগ করা হলে সে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কথা বলতে রাজি হন। এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী কুষ্টিয়া ভেড়ামারার ওই আইডিধারী এই পোস্টটি “মাইরালা গ্রুপ” নামে একটি ফেসবুক পেজ থেকে সংগ্রহ করেছে। পরে সে এটি তার নিজস্ব আইডিতে পোস্ট করেছে।
ওই আইডিধারীর তথ্য অনুযায়ী “মাইরালা গ্রুপ” নামে ওই ফেসবুক পেজে অনুসন্ধান চালালে উত্তরপত্রের ছবি যুক্ত আরও কয়েটি পোস্ট দৈনিক শিক্ষার নজরে আসে।
বরিশাল বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ইংরেজি পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন করার জন্য পরীক্ষকদের দেয়া হয়েছে কয়েকদিন আগে। সে হিসেবে খাতা মূল্যায়ন শেষ হওয়ার কথা।
বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মু: জিয়াউল হক বলেন, উত্তরপত্র ফাঁসের বিষয়ে দৈনিক শিক্ষার প্রতিবেদনটি আমি ব্যাক্তিগতভাবে দেখেছি। এখন এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নেয়া হবে। পাশাপাশি উত্তরপত্র ফাঁসের সাথে যারা প্রকৃতভাবে জড়িত তাদেরকে খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনা হবে।
পরীক্ষার খাতা গোপন বিষয়। ফল প্রকাশের ৬ মাস পর্যন্ত তা সংরক্ষণ করা হয়। কিন্তু চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষা তো চলছে। খাতা তো মূল্যায়নের জন্য পরীক্ষকদের হাতে রয়েছে। সেই খাতার ছবি কীভাবে ফেসবুকে আসল?
২রা এপ্রিল এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়।