জাতীয় পত্রিকায় ‘সরকারি বিধি মোতাবেক’ নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেখে ২০০৭ খ্রিস্টাব্দে রাজশাহী সদরের ভবানীগঞ্জ কারিগরি কলেজের ল্যাবরেটরি সহকারী পদে আবেদন করেছিলেন রোজিনা বেগম। যথাযথ নিয়োগ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই তিনি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে এ পদে নিয়োগ পান। এরপর পার হয়ে গছে দীর্ঘ ১০ টি বছর। ২০১০ খ্রিস্টাব্দে কলেজটি এমপিওভুক্ত হয়। তবে রোজিনা বেগমের আর ‘সরকারি বিধি মোতাবেক বেতন পাওয়া হয়নি। এমপিওভূক্ত হতে পারেননি তিনি। কারণ ২০১০ খ্রিস্টাব্দের ৪ ফেব্রুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এমপিওভুক্তির নীতিমালায় ‘ল্যাব সহকারী’ এবং ‘সহকারী লাইব্রেরিয়ান’ পদ দুটি বাদ দেওয়া হয়। এতে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর এই দুটি পদে সারাদেশে কর্মরতদের আর সরকারি বেতন-ভাতা (এমপিও) দেয়নি।
একই কারণে বাদ পড়েছে নেত্রকোনা সদরের নন্দীপুর কারিগরি ও বাণিজ্য কলেজের সহকারি লাইব্রেরিয়ান মো. শাজাহান সিরাজের। সরকারি বিধি মোতাবেক নিয়োগ পাওয়ার পরও তার পদটি ২০১০ খ্রিস্টাব্দের এমপিওভুক্তির জনবল কাঠামোতে বিলুপ্ত করে দেওয়ায় তিনিও এমপিওভুক্ত হননি।
এভাবে সারাদেশের ১৫৪ টি এমপিওভুক্ত বেসরকারি কারিগরি ও বাণিজ্য কলেজের ৩০৮ জন সহকারী লাইব্রেরিয়ান ও ল্যাব সহকারী ৭ থেকে ১৬ বছর ধরে কোনো সরকারি বেতন পাচ্ছেন না। নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে দেওয়া স্বল্প বেতনে কোনো রকমে তারা পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বিধি মোতাবেক নিয়োগ পা্ওয়ার পরও জনবল কাঠামোতে না থাকার কারণে এমপিওবঞ্চিত হচ্ছেন। তারা সবাই ২০০০ থেকে ২০০৯ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে নিয়োগ পেয়েছেন।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ কারিগরী (বিএম) কলেজ অধ্যক্ষ সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মাসুদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, স্মারকলিপি জমাদেয়াসহ অনেক তদবির করা হয়েছে ইতিমধ্যে। শিক্ষামন্ত্রী ইতিবাচক থাকলেও অদৃশ্য কারণে এসব পদে এমপিওভুক্ত করা হচ্ছে না। উর্ধবতন কর্তৃৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেও আবেদন করা হয়েছে।
জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো: আলমগীর বলেন, তিনি এ পদে নতুন যোগ দিয়েছেন। বিষয়গুলো সম্পর্কে তিনি পুরোপুরি অবহিত নন। ভালোভাবে জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।