এমপিওভুক্তি: খুলনায় ঘাটে ঘাটে দুর্নীতি - দৈনিকশিক্ষা

এমপিওভুক্তি: খুলনায় ঘাটে ঘাটে দুর্নীতি

দৈনিক শিক্ষা ডেস্ক: |

এমপিওভুক্তি ও বদলির ক্ষেত্রে হয়রানির নানা অভিযোগ উঠেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) খুলনার আঞ্চলিক কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। মোটা অঙ্কের ঘুষ দিয়ে অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ পাওয়া ও অনুমোদনহীন বিষয়ের শিক্ষক, ভুয়া সনদধারী শিক্ষকরা এমপিও পেয়ে যাচ্ছেন। আবার কাগজপত্র সঠিক থাকলেও শিক্ষকদের ঘাটে-ঘাটে দিতে হচ্ছে ঘুষ। বদলির ভয় দেখিয়ে শিক্ষকদের কাছ থেকে টাকা আদায় এবং কোচিং বাণিজ্যের নামে টাকা আদায়েরও অভিযোগ উঠছে মাউশির আঞ্চলিক উপপরিচালকদের বিরুদ্ধে। তবে কেউই নাম প্রকাশ করে এসব ব্যাপারে অভিযোগ করার সাহস পাননি। বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি খুলনার আঞ্চলিক সমন্বয়কারী ও জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ সাহা বলেন, বিকেন্দ্রীকরণ ও ডিজিটাল হওয়ার পর দুর্নীতি বন্ধ হওয়ার কথা। তবে বাস্তবে তা হয়নি। দেখা যায়, এমপিওর আবেদনে যা ত্রুটি নয়, তাও ত্রুটি হিসেবে ধরা হচ্ছে। পরে লেনদেনের মাধ্যমে আবেদনকারী এমপিও পেয়ে যান। ভুক্তভোগীরা ভয়ে অভিযোগ করেন না।

খুলনার মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষকরা অভিযোগ করেন, এমপিওর কাজ হাতে পেয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে মাউশির আঞ্চলিক কার্যালয়। এই কার্যালয় হয়ে উঠেছে ঘুষের হাট। আগে এমপিওর জন্য কেবল মাউশিতে ঘুষ দেওয়া লাগলেও পরিস্থিতি এখন ভয়াবহ। মাসিক পে-অর্ডার বা এমপিওভুক্তির ক্ষেত্রে এখন চার স্তরে ঘুষ দিতে হয়। স্কুল-কলেজ থেকে উপজেলা শিক্ষা অফিস, উপজেলা থেকে জেলা শিক্ষা অফিস, জেলা থেকে আঞ্চলিক শিক্ষা অফিস, আঞ্চলিক শিক্ষা অফিস থেকে মাউশিতে ফাইল অনুমোদন করাতে হয়। অনলাইনের পাশাপাশি হার্ডকপিও জমা দিতে হয়। সব ক্ষেত্রেই হতে হয় হয়রানি।

শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলা পর্যায়ে একজন শিক্ষককে এমপিও পেতে ঘুষ দিতে হয় ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। আর কাগজপত্রে সামান্যও ঘাটতি থাকলে ঘুষের পরিমাণ কয়েকগুণ বেড়ে যাচ্ছে। আঞ্চলিক শিক্ষা কার্যালয়ের উপপরিচালকদের হাতে এমপিওর নিয়ন্ত্রণ থাকায় এই কার্যালয়টি হয়ে উঠেছে ঘুষের হাট।

সূত্র জানায়, ২০১৬ সালে নিয়ম ভেঙে মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার কাজীপুর মাথাভাঙ্গা নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ১৩ শিক্ষক-কর্মচারীকে এমপিওভুক্ত করার অভিযোগ ওঠে মাউশির খুলনা আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপপরিচালক টিএম জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে। নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সর্বোচ্চ পাঁচজন শিক্ষক ও দু’জন কর্মচারীর এমপিওভুক্তির বিধান রয়েছে। কিন্তু ওই স্কুলে ১৩ জনকে এমপিওভুক্ত করা হয়। এ ক্ষেত্রে মোটা অঙ্কের ঘুষ-বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠে। পরে জানা যায়, স্কুলটিতে অতিরিক্ত শাখা খোলার যে কাগজ দেখিয়ে অতিরিক্ত শিক্ষকদের এমপিও দেওয়া হয়েছে, তা ভুয়া। কাগজে দেখানো হয়েছে, ২০০২ সালে অতিরিক্ত শ্রেণি শাখা খোলার অনুমোদন দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরপর ২০০৫ সালে অনুমোদন দেয় যশোর বোর্ড। অথচ আগে দেওয়ার কথা বোর্ডের, এরপর মন্ত্রণালয়ের। প্রতিটি ক্লাসেই তিনটি শাখা দেখানো হয়েছে। অথচ মাউশি অধিদপ্তর ওই স্কুলে খোঁজ নিয়ে জেনেছে, তাদের একটি সেকশনের শিক্ষার্থীই নেই। পরে তাদের এমপিও বাতিল করা হয়।

ঘুষ-বাণিজ্যে অতিষ্ঠ হয়ে যশোর জেলার ২০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলনা আঞ্চলিক কার্যালয়ের বিরুদ্ধে মাউশি অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে আছে রায়পুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ, নাভারণ কলেজ, হামিদপুর আল-হেরা ডিগ্রি কলেজ, রঘুনাথ নগর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মুক্তিযোদ্ধা ডিগ্রি কলেজ ও এবিসিডি মাধ্যমিক বিদ্যালয়। শিক্ষকরা অভিযোগ করেন, ঘাটে-ঘাটে ঘুষ না দিলে এমপিও পাওয়া যায় না। উপজেলা, জেলা ও আঞ্চলিক কার্যালয় এই তিন জায়গায় ঘুষ দিতেই হয়।

তবে ঘুষ-বাণিজ্যের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষার খুলনার উপপরিচালক টিএম জাকির হোসেন।  তিনি বলেন, গাংনী উপজেলার কাজীপুর মাথাভাঙ্গা নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের কাগজপত্র জাল থাকায় তাদের সবার এমপিও বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া যশোরের ২০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভিযোগ ছিল মিথ্যা। এক হুজুর সব স্কুলের সিল বানিয়ে নিজে সই করে এসব অভিযোগ পাঠিয়ে ছিলেন। তিনি বলেন, ডিজিটাল পদ্ধতিতে ঘুষের কোনো সুযোগ নেই। সব কাজ অনলাইনে সম্পন্ন হয়। কোচিং বাণিজ্য বন্ধ করতে কিছু শিক্ষককে বদলি করা হয়েছে। তারাই বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করাচ্ছেন।

সূত্র: দৈনিক সমকাল

দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.003525972366333