অভিন্ন সিলেবাসে পাঠদানকারী এমপিওভুক্ত কলেজ শিক্ষকদের সঙ্গে সরকারিদের পার্থক্য পর্বতপ্রমাণ। সরকারি কলেজে কর্মরতগণের পদোন্নতির ক্রমধারায় শিক্ষাপ্রশাসনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে চরম শিখরে উত্তীর্ণ হওয়াসহ আমলাতন্ত্রের শীর্ষপদ (সচিব) অলংকৃত করবার উদাহরণ ও সুযোগ রয়েছে।
এমপিওভুক্ত কলেজের একজন প্রভাষক থেকে সহকারি অধ্যাপক পদায়নে অনুপাত নামক কালো আইনে অধিকাংশের পথচলা দূর্ভাগ্যের কাঁদায় আটকে আছে! কলেজে অধ্যাপনারতদেরকে সসম্মানে ‘অধ্যাপক’ বলা হলেও তাদের জন্য ‘সহকারী অধ্যাপক’ পর্যন্ত পদোন্নতির সামান্য সুযোগ থাকলেও নেই ‘সহযোগী’ বা ‘অধ্যাপক’ হওয়ার উপায়!
যে চাকরি বা প্রতিষ্ঠানে ‘সহ’ ‘উপ’ ‘যুগ্ম’ ‘সাব’ ‘জুনিয়র’ ইত্যাদি উপসর্গযুক্ত পদবি থাকে সেখানেই চূড়ান্তধাপে পূর্ণ-পদবিধারী থাকেন। পরিচালকের উর্ধ্বতন হিসেবে মহাপরিচালক, সচিবের উর্ধ্বতন হিসেবে থাকেন সিনিয়র সচিব। এমপিওভুক্ত কলেজে সহযোগি অধ্যাপক বা অধ্যাপকের পদ না থাকায় জিজ্ঞাসা, ‘সহকারী অধ্যাপকগণ’ কোন উর্ধ্বতন কর্মকর্তার সহকারি? জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশিকায় সহযোগি অধ্যাপক ও অধ্যাপক পদের শর্তসাপেক্ষ সীমিত সুযোগের কথা থাকলেও তাতে রাষ্ট্রীয়ভাবে অর্থায়ণ করা হয় না।
কাজেই, অনুপাত প্রথায় আটকে যারা ‘প্রভাষক’ পদেই জীবন-যৌবন হারিয়ে, আর্থিকক্ষতির শিকার হয়েছেন তাদেরকে জ্যেষ্ঠতাক্রমানুসারে ‘সহকারি অধ্যাপক’ ‘সহযোগি অধ্যাপক’ ‘অধ্যাপক’ হিসেবে ‘সম্মানসূচক’ পদোন্নতি দেওয়া হোক এবং অনতিবিলম্বে অমানবিক অনুপাত প্রথা বাতিল হোক এটাই সবার আকাঙ্খা।
এমপিওভুক্ত কলেজের অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ হতে চাইলে প্রার্থীকে নতুন করে চাকরি খুঁজতে হয়। চাকরি পেলে আগের পদ ছাড়তে হয়। এখানেও পদোন্নতির মাধ্যমে অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষের পদ পূরণের লক্ষে এমপিওভুক্তদের জ্যেষ্ঠতাক্রমের একটি প্যানেল বা ‘ফিটলিস্ট’ তৈরি করা প্রয়োজন, যাতে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই ঐ পদগুলো পূরণ করা যায়। অথবা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিভিন্ন বিভাগ, বিষয়ের চেয়ারম্যান, হল প্রভোষ্ট, ডিন যে প্রক্রিয়ায় মনোনীত হন ঐ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে অধ্যক্ষ উপাধ্যক্ষের পদগুলো পর্যায়ক্রমিক পদায়নের মাধ্যমে পূরণ করা যেতে পারে। কেননা, ‘নিয়োগবানিজ্যে’র কালোছায়া থেকে নিঃষ্কৃতির জন্যই গঠিত হয়েছে এনটিআরসি’।
মো. আলী এরশাদ হোসেন আজাদ: প্রভাষক, কাপাসিয়া, গাজীপুর।
[মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়]