এমপিও দুর্নীতি: মহাপরিচালকের সঙ্গে বিতর্কে জড়ালেন পরিচালক - দৈনিকশিক্ষা

এমপিও দুর্নীতি: মহাপরিচালকের সঙ্গে বিতর্কে জড়ালেন পরিচালক

মুরাদ মজুমদার |

দৈনিক শিক্ষায় প্রকাশিত এমপিওভুক্তিতে দুর্নীতির বিষয়ে জানতে মাধ্যমিক শাখার পরিচালককে তলব করেছেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. এস এম ওয়াহিদুজ্জামান। মহাপরিচালকের প্রশ্নের সদুত্তর দিতে না পেরে অযথা তর্কে লিপ্ত হয়েছেন মাধ্যমিক শাখার পরিচালক অধ্যাপক মো: এলিয়াছ হোসাইন। প্রত্যক্ষদর্শীরা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে এ খবর নিশ্চিত করেছেন।

শিক্ষা বিষয়ক দেশের একমাত্র জাতীয় পত্রিকা দৈনিক শিক্ষাডটকম-এ ৭ই জুন প্রকাশিত “অভিনব এমপিও জালিয়াতি: কোড পরিবর্তন চলছে দেদার” শীর্ষক প্রতিবেদনটি শিক্ষা প্রশাসনের শীর্ষমহলসহ সারাদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এমন পরিপ্রেক্ষিতে মহাপরিচালক বৃহস্পতিবার (৮ই জুন) সকালে জরুরী বৈঠক ডাকেন মহাপরিচালক। বৈঠকে এমপিও সফটওয়্যারসহ সার্বিক দায়িত্বপ্রাপ্ত মাধ্যমিক শাখার পরিচালক এলিয়াছ হোসাইনকে তার কক্ষে ডেকে পাঠান।

পরিচালক এলিয়াছ উপ-পরিচালক মোস্তফা কামালকে সঙ্গে নিয়ে মহাপরিচালকের কক্ষে সাড়ে নয়টার দিকে হাজির হন। মহাপরিচালকের কক্ষে আগে থেকেই উপস্থিত ছিলেন অধিদপ্তরের পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) অধ্যাপক মোহাম্মদ শামছুল হুদা, পরিচালক (মনিটরিং এন্ড ইভ্যালুয়েশন) অধ্যাপক ড. মো: সেলিম মিয়া, উপ-পরিচালক ও সহকারি পরিচালক মাদ্রাসা শাখা ও আরো কয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারি।
একজন পরিচালক বলেন, “ডিজি স্যার, [মহাপরিচালক] নিজ মোবাইল ফোন থেকে দৈনিক শিক্ষায় প্রকাশিত গতকালের এমপিওদুর্নীতির প্রতিবেদনটি দেখান এলিয়াছ সাহেবকে। মহাপরিচালক জানতে চান কীভাবে এমন জালিয়াতি হয়? আপনারা কি করেন? এসব দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে।”

“পত্র-পত্রিকায় এমপিও দুর্নীতি নিয়ে এত প্রতিবেদন প্রকাশ হয় আপনি সেগুলো দেখে ব্যবস্থা নেন না কেন? এই যে দৈনিক শিক্ষায় লিখলো হাতীশাইল স্কুলে কোড পরিবর্তন করে এমপিওভুক্ত করছে। এই যে সরকারের টাকা অপচয় করার কথা লেখা হচ্ছে, এসব অপচয় বন্ধ করার জন্যই সরকার আমাদের এখানে বসিয়েছেন,” এলিয়াছকে উদ্দেশ্য করে বলেন মহাপরিচালক।

মহাপরচালক বলেন, ‘আমি অভিযোগ পাই উপজেলা শিক্ষা অফিসাররা শিক্ষকদের বলেন “আমিই ডিজির প্রতিনিধি, আমিই নিয়োগকর্তা, আমিই এমপিওদাতা” সুতরাং আমাকে খুশি না করে কিছুই হবে না।”

তিনি এলিয়াছকে উদ্দেশ্য করে আরো বলেন, “এমপিও দুর্নীতি হচ্ছেই কিন্তু আপনি কিছুই করতে পারছেন না। উপজেলা, জেলা ও অঞ্চলে এত দুর্নীতি হয় তাহলে অনলাইন পদ্ধতিতে অধিদপ্তরের একটা মনিটরিং রাখতে হবে। অথবা আবার ডিজি অফিসেই নিয়ে আসা যায় কিনা তা ভেবে দেখেন।”

এর জবাবে এলিয়াছ বলেন, “শিক্ষা ভবনের অধিকাংশই চোর, ঘুষখোর। এমপিও এখানে আনা যাবে না। বিকেন্দ্রকরণই থাকবে।”

গতকাল দৈনিকশিক্ষায় প্রকার্শিত প্রতিবেদনে উল্লেখিত রাজশাহীর তানোর উপজেলার হাতীশাইল স্কুলের কোড পরিবর্তন সম্পর্কে এলিয়াছ মহাপরিচালককে বলেন, “ওটা ভুলক্রমে হয়েছে হয়তো। সংশোধন করে দেব।”

মহাপরিচালকের আনা অভিযোগের প্রতিউত্তরে বির্তকে লিপ্ত হয়ে এলিয়াছ বলেন, “উপজেলা ও জেলা শিক্ষা অফিসাররা ভালো। তারা সফটওয়ারের মাধ্যমে কাজ করেন। কোনো দুর্নীতির সুযোগ নেই।”

এক পর্যায়ে ক্ষুব্ধ হয়ে মহাপরিচালক এলিয়াছকে বলেন, “এমপিও দুর্নীতি নিয়ে ধারাবাহিকভাবে দৈনিক শিক্ষায় প্রতিবেদন প্রকাশ হচ্ছে। শিক্ষা প্রশাসনসহ উচ্চমহলে এটা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।”

এমপিও দুর্নীতি বিষয়ক আলোচনায় মহাপরিচালকের সঙ্গে সহমত প্রকাশ করে পরিচালক শামছুল হুদা বলেন যে, তার নিজ এলাকার স্কুলেও এমপিওভুক্ত হতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে ঘুষ দিতে হয়েছে।

একইভাবে পরিচালক মো: সেলিম মিয়া বলেন, তার এলাকায়ও এমপিও জালিয়াতির খবর পাওয়া যায়। উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে ঘুষ না দিলে কাজ হয় না। মহাপরিচালকসহ অন্যান্যদের সামনেই দুই পরিচালকের উদ্দেশ্যে এলিয়াছ হোসেন বলেন, “আপনারা এমপিওর কিছুই জানেন না। সবকিছু হয় সফটওয়ারে। কোনোভাবেই দুর্নীতি করা সম্ভব নয়।”

মহাপরিচালকের কক্ষে উপস্থিত অপরাপর উপ-পরিচালক ও সহকারি পরিচালকগণ মহাপরিচালকের সঙ্গে একমত পোষণ করলেও এলিয়াছ হোসেন তাদেরকে কথা বলার খুব একটা সুযোগ দেননি। জুনিয়র হওয়ার কারণে তাদেরকে কথা বলার সুযোগ দেননি বলে জানা যায়।

বৈঠক শেষে এলিয়াছ সিনোসিস আইটি, সেসিপের উপ-পরিচালক শিপন কুমার ও ইএমআইএস সেলের মো: জামিলুর রহমানকে নিয়োগ রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন।

আরও পড়ুন….

অভিনব এমপিও জালিয়াতি: কোড পরিবর্তন চলছে দেদার

ইনডেক্স চুরি করে এমপিওভুক্তি অব্যাহত

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0032069683074951