শর্তসাপেক্ষে এমপিও প্রত্যাশী ও অধিদপ্তরে কাগজপত্র প্রেরণকারী ৪৬২ জনের আবেদনের মধ্য থেকে বাদ দেয়া হচ্ছে দাখিল ও আলিম মাদ্রাসার গ্রন্থাগারিক ও সহকারি গ্রন্থাগারিকদের। বাদ দেয়ার তালিকায় আারো রয়েছে জুনিয়র স্কুলে নিয়োগ নেয়া সহকারি গ্রন্থাগারিকদের । এ দুই ধরণের মাদ্রাসা ও জুনিয়র স্কুলে গ্রন্থাগারিক ও সহকারি গ্রন্থাগারিকের কোনো পদ সৃষ্টি করা হয়নি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অনুযায়ী এমপিওবিহীন সহকারি গ্রন্থাগারিকদের যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর। জেলা শিক্ষা অফিসারদের কাছ থেকে নেয়া তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি করা তালিকায় ঠাঁই পেয়েছে ৪৬২ জন সহকারি গ্রন্থাগারিক। এদের অধিকাংশই দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সনদ নিয়ে নিয়োগ নিয়েছেন গত চার বছরে। আবার কেউ কেউ শিক্ষা অধিদপ্তর ও জেলা শিক্ষা অফিসারদের ম্যানেজ করে নিয়োগ ও এমপিওভুক্তির আবেদনের অনেকদিন পর আবেদনের ফাইলে অন্য বিশ্ববিদ্যায়ের ডিপ্লোমা সনদ ঢুকিয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এদেরকেই সম্প্রতি এমপিওভুক্তির সুপারিশ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর।
শর্তের তারিখ বর্ধিত করে ইতিমধ্যে চিঠিও দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষা অধিদপ্তরের দুজন উপ-পরিচালক ও সহকারি পরিচালক দৈনিকশিক্ষাডটকমকে জানান, জুনিয়র স্কুল ও দাখিল এবং আলিম মাদ্রাসায় গ্রন্থাগারিক ও সহকারি গ্রন্থাগারিকের পদই সৃষ্টি করা হয়নি। এছাড়াও শিক্ষা মন্ত্রণালয় তিন বছর আগে আলাদা চিঠি দিয়ে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন মাদ্রাসায় সহকারি গ্রন্থাগারিক নিয়োগ দেয়া যাবে না।
তবে, ফাজিল ও কামিল মাদ্রাসায় বিধি মোতাবেক গ্রন্থাগারিক পদে নিয়োগ ও এমপিওভুক্তিতে কোনো বাধা নেই।
কর্মকর্তারা জানান, সবকিছু জানার পরও কতিপয় দুষ্টুলোক জুনিয়র স্কুলে এবং দাখিল আলিম মাদ্রাসায় সহকারি গ্রন্থাগারিক হিসেবে নিয়োগ নিয়েছেন। বাশার নামের এক বাটপার অধিদপ্তরের বিভিন্ন কক্ষে ঘোরঘুরি করছেন এমপিওপ্রাপ্তির আশায়।
কর্মকর্তারা বলেন, জেলা ও উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে প্রাপ্ত তথ্য যাচাই বাছাই করে জুনিয়র স্কুল ও মাদ্রাসার আবেদন বাদ দেয়া হবে।
বাংলাদেশ সহকারি গ্রন্থাগারিক সমিতির সভাপতি মো: মিজানুর রহমান ও মহাসচিব এ এফ এম কামরুল হাসান দৈনিকশিক্ষাডটকমকে জানান, সরকার কর্তৃক অনুমোদিত পদে বৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্তদের এমপিওভুক্তির দাবি জানাচ্ছি।
জানা যায়, গত বছরের সেপ্টম্বর মাসে তৈরি করা তালিকায় রয়েছেন চারশ বাষট্টি জন সহকারি গ্রন্থাগারিক। এদের এমপিওভুক্তির জন্য সরকারের বার্ষিক খরচ হবে ১০ কোটি সাত লাখ টাকার বেশি।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ২০১৩ খ্রিস্টাব্দের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যোগদানকারী এবং শিক্ষা অধিদপ্তরে আবেদন প্রেরণকারী এমপিওবিহীন সহকারি গ্রন্থাগারিকের সংখ্যা চারশত ৬২ জন। এদের বেতন, ভাতা ও চিকিৎসার জন্য সরকারের বার্ষিক মোট ব্যয় দশ কোটি সাত লাখ যোল হাজার টাকা।
এদের বার্ষিক বেতন বাবদ সরকারের ব্যয় আট কোটি ৮৭ লাখ চার হাজার টাকা এবং বার্ষিক বাড়ী ভাড়া ৫৫ লাখ চুয়াল্লিশ হাজার টাকা ও বার্ষিক চিকিৎসা ভাতা সাতাশ লাখ ৭২ হাজার ও দুটি উৎসব বোনাস বাবদ ৩৬ লাখ ৯৬ হাজার টাকা।