অভিজ্ঞতার ভুয়া সনদ দিয়ে অধ্যক্ষ পদে চাকুরি নেওয়ার পর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্তে ধরা পড়ার পর ২০০৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে চাকুরিচ্যুত কাজী ফারুক এখনও জাতীয় শিক্ষক কর্মচারী ফ্রন্টের নেতা দাবি করেন। আবার বিদেশীদের কাছে তার পরিচায় একটি এনজিওর মালিক হিসেবে।
এই কাজী ফারুক বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরেকবার ‘কথিত’ আন্দোলনের সময় বাড়িয়ে নেন। এর আগে ফেব্রুয়ারির ১ম সপ্তাহে সংবাদপত্রে বিবৃতি দিয়ে বলেছিলেন, ওই মাসের ২য় সপ্তাহের মধ্যে নতুন স্কেলের ঘোষণা না দিলে ফেব্রুয়ারির শেষ থেকে লাগাতার আন্দোলন্ শুরু করবেন। আজ ২ মার্চ আবার সংবাদ সম্মেলন করে হুমকি দিয়েছেন ৩১ মার্চের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি না করলে এপ্রিল থেকে ‘আন্দোলন’।
তার লিখিত বক্তব্যে কয়েকটি ‘হাস্যকর’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে আগামি ৬-৮ মার্চ শিক্ষামন্ত্রী বরাবর সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে, শিক্ষক নেতা রফিকুল ইসলাম দৈনিকশিক্ষাকে জানান, সারাজীবন দেখে এবং শুনে আসছেন সংবাদ সম্মেলনে দাবি জানালে তা সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ হয় এবং মন্ত্রী-সচিবসহ সরকারের উপরিমহলের নজরে আসে। একারণেই সংবাদ সম্মেলন। আজ কাজী ফারুক স্যার এক ‘উদ্ভট’ কর্মসূচি দিলেন। আর তা হলো সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্য শিক্ষামন্ত্রীর কাছে লিখিত আকারে পেশ! এটা নিছক লোক দেখানো এবং হাস্যকর বলে দাবি করেন রফিকুল ইসলাম।
চট্টগ্রামের একটি কলেজের এমপিওভুক্ত শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, সারাদেশের শিক্ষকদের সমালোচনার মুখে কাজী ফারুকের পিওন অমিতাভকে বাদ দিয়ে নুরুন্নবীকে দিয়ে প্রেস রিলিজ পাঠানোর কাজ করছেন। সাবেক সেই পিওন অমিতাভকে ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের সেকশন অফিসার পদে চাকরি পাকা করেছেন গতকাল মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়রিট প্রথম সিন্ডিকেটের মাধ্যমে।
রফিকুল বলেন, এরশাদ জমানায় ‘চিনিচোর-খ্যাত’ মন্ত্রী কাজী জাফরের ভাই কাজী ফারুক।
কাজী ফারুকের ‘লোকদেখানো’ কর্মসূচির ঘোষণার মধ্যে রয়েছে, ১২ মার্চ উপজেলা সদরে সমাবেশ শেষে মিছিল সহকারে ইউএনও’র মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ, প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে ১৯ মার্চ জেলা সদরে মানববন্ধন ও ২৪ মার্চ বিভাগীয় সদরে সংবাদ সম্মেলন করে বিভাগীয় কমিশনারদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপিত মোহাম্মদ আজিজুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হককে ধরে এনে বসিয়ে রাখতে সক্ষম হয়েছেন তিনি।
এমপিও শিক্ষকরা কবে থেকে নতুন স্কেল সুবিধা হাতে নগদ পাবেন তা কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারেন না।