বছর শেষে প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির হিসেব নিকেশ নতুন কিছু নয় । পুরনো বছরে কী পেলাম আর কী পেলাম না এবং নতুন বছরে কী পাবো-সে প্রাপ্তি ও প্রত্যাশার যোগ বিয়োগ অনেকটা আমাদের মনো সংস্কৃতির বিষয় । তাতে পাওয়ার চেয়ে না পাওয়ার বেদনা বড় হয়ে ওঠে । আর সে না পাওয়াটা যদি কারো একান্ত পাওনা বা ন্যায্য অধিকার হয়ে থাকে, তবে সে দুঃখ বলার জায়গা কোথাও বাকি থাকে না । ২০১৬ সালে দেশের পাঁচ লক্ষ এমপিও শিক্ষক- কর্মচারী তাদের অতি ন্যায্য দু’টো অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন । এমনিতে নিত্য বঞ্চনা তাদের প্রাত্যহিক সাথী । কিন্তু, এ দু’টো অধিকার না পাবার ব্যথা তাদের সর্বাধিক ব্যথিত করেছে । হ্যাঁ, বলছিলাম দেশের
এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের বৈশাখি ভাতা ও ইনক্রিমেন্টের কথা ।
তারা কেন এ দু’টো ন্যায্য অধিকার পাননি- সেটুকু ও কেউ তাদের একটা দিন আজ পর্যন্ত বুঝিয়ে বলেনি । কেউ এ ও বলেনি- এবার দেয়া যায়নি , আগামীতে না হয় দেখা যাবে ।
কত সালাম আর কত সম্মান এদের ! এরা জাতি গঠনের কারিগর ! এদের বৈশাখি ভাতা কিংবা ইনক্রিমেন্টের কী দরকার ! এক দল লোক এদের দেবার চেয়ে না দিয়ে আনন্দ পায় বেশী ।
শিক্ষকদের কেবলি মুখে তোষণ বাদ দিয়ে কোনদিন যে সত্যিকারের মর্যাদা দেয়া হবে- সে অজানা বিষয় । এ কেবল আমাদের দেশেই ।
আমাদের শিক্ষকদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করার জন্য সরকারি-বেসরকারি বিভাজন উঠিয়ে দেয়া আবশ্যক । একত্রে সব স্কুল-কলেজ জাতীয়করণ করে উন্নত দেশের কাতারে সামিল হবার পথ প্রশস্ত করা দরকার । নতুন বছরের সূচনায় এমপিও শিক্ষকদের বৈশাখি ভাতা এবং ইনক্রিমেন্টের বিষয়টি অবিলম্বে ফয়সালা করা অপরিহার্য । তারা প্রায় একটি বছর ধৈর্য ধরেছেন । নতুন বছর তাদের দাবী আদায়ে স্বোচ্চার হবার আহ্বানটুকু জানাতে চায় ।
অধ্যক্ষ মুজম্মিল আলী: অধ্যক্ষ, চরিপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ , কানাইঘাট , সিলেট ও দৈনিকশিক্ষার সংবাদ বিশ্লেষক।