ননএমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করার ইচ্ছা নাই, নাকি সামর্থ নাই, নাকি নন এমপিওদের কষ্টের কোন খবর জানা নাই? হলদে পাখিদের জবাব কোনটি? নাকি কোন জবাব না দিয়েই হলদে পাখিরা উড়ে যাবেন?
হলদে পাখিরা এত রক্ত দিয়ে কোথায় রং করছেন? ভয় লাগে না? খারাপ লাগে না? ওগুলো তো মানুষের রক্ত! ননএমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যোগদানকারীদের শরীর থেকে প্রতিদিন রক্ত ঝরিয়ে নিচ্ছেন। তাদের কি অপরাধ?
রক্ত ঝরানোর ফলে ওদের শরীরে রক্ত স্বল্পতা হয়েছে। হলদে পাখি আপনাদের ঠোঁট, পালক এমনিতেই তো দৃষ্টি নন্দন। তারপরও রক্ত স্বল্পতা শরীরে হাড়ি ঝুলিয়ে রেখেছেন রক্তের জন্য।
বাসেদ সাহেব নন এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একজন যোগদানকারী। তার শরীরে দুটো হাঁড়ি ঝুলিয়ে রেখেছেন হলদে পাখিরা। বাসেদ সাহেব কনকনে শীতে ঘুমাতে চাচ্ছেন বিছানায়। শরীরে হাঁড়ি থাকার কারণে বিছানায় ঘুমাতে পারছেন না। বাসেদ সাহেবের ৩ বছরের ছোট্ট খোকা কান্না করছে বাবার সঙ্গে ঘুমাবে। তার স্ত্রীও দাঁড়িয়ে আছেন এক পাশে। খোকাকে দিয়ে তিনি আরেক পাশে ঘুমাবেন বলে। খোকার বাবাকে খোকা বার বার ডাকছে। খোকার পাশে খোকার মাও দাঁড়িয়ে আছেন। খোকার কান্নায় মায়ের অশ্রু ঝরছে। অবশেষে খোকা কেঁদে কেঁদে ঘুমিয়ে পড়ল। কান্নার মধ্যে দিয়ে ঐ খোকা বড় হচ্ছে। বাসেদ সাহেব কি কোন সুযোগ পাবেন না তার খোকার ইচ্ছা পূরণের?
বাসেদ সাহেব চেয়ে আছেন খোকার সঙ্গে ঘুমাবেন। সময়ের ব্যবধানে এক দিন খোকা বড় হবে। তখন আর বাবার সঙ্গে ঘুমানোর জন্য খোকা কান্না করবেনা। খোকার ইচ্ছা পূরণ করতে পারলো না বলে বাসেদ সাহেবের চোখে, মুখে, হৃদয়ে অনেক কান্না। আর কত কান্না ঝরাবে হলদে পাখিরা? বাসেদের কান্নার শব্দে ঘুমন্ত খোকা জেগে উঠলো। বাবার সঙ্গে ঘুমানো হয়নি এই কথা মনে করে তার খোকা আবার কান্না করতে লাগলো। খোকা কাঁদছে, বাসেদ কাঁদছে, তার স্ত্রীও কাঁদছে। এভাবে আর কত রাত ধরে তারা কাঁদবে?
হলদে পাখিরা উড়ে যাচ্ছেন? কথাগুলো শুনেন। দুখের কথা। হলদে পাখিরা উড়ে যাবেন না। কথাগুলো একটু শুনুন। উড়ে যায়েন্না………………………….।
লেখক: মমিনুল হক সবুজ, সাংবাদিক, বাগমারা, রাজশাহী।
[মতামতের জন্য দৈনিক শিক্ষা সম্পাদক কোন ভাবে দায়ী নয়।]