কমলগঞ্জে ফরম পূরণে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিভিন্ন খাত দেখিয়ে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি আদায় করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সিলেট শিক্ষাবোর্ড নির্ধারিত ফি সর্বসাকুল্যে ১৫২০ টাকা হলেও উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন খাত ও ফি দেখিয়ে শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ২৬৭০ টাকা থেকে ২৯৫০ টাকা পর্যন্ত আদায় করেছেন।
অতিরিক্ত ফি আদায়ের মধ্যে তেতইগাঁও রশিদ উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয় একটি। চলতি বছরে এই বিদ্যালয় থেকে মোট ১৮৯ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবে। এই বিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রেশন ফি নেয়া হয়েছে সর্বসাকুল্যে ২৬৭০ টাকা থেকে ২৯৫০ টাকা পর্যন্ত। বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক এ টাকা নেয়া হয় বলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল মতিন জানান। তবে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির তিন সদস্য সিদ্দেক মিয়া, সামছু মিয়া, আলী হোসেন অতিরিক্ত ফি আদায়ের ব্যাপারে কমিটি কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন।
বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি আবদুল ওয়াহিদ বলেন, ফরম পূরণে বাড়তি ফি নেয়ার সুযোগ নেই। কমিটির সদস্যরাই অতিরিক্ত ফি নেয়ার অভিযোগ করেছেন বললে তিনি বলেন, আমি বুঝতে পারছি না কেন তারা এটা করছে। সিলেট শিক্ষাবোর্ড রেজিস্ট্রেশন ফি নির্ধারণ করে দিলেও মুন্সীবাজার কালী প্রসাদ উচ্চ বিদ্যালয়ে অতিরিক্ত রেজিস্ট্রেশন ফি আদায় করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে অভিভাবকদের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবক জানান, এ বিদ্যালয়ে কোচিং ফি, সেশন ফি ইত্যাদি অজুহাতে ২ হাজার ৮৭০ টাকা আদায় করা হয়েছে। চলতি বছরে এই স্কুল থেকে মোট ২৯৯ জন এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবে। অতিরিক্ত ফি আদায় প্রসঙ্গে কালি প্রসাদ স্কুলের প্রধান শিক্ষক সত্যেন্দ্র পাল নান্টু বলেন, বোর্ডের নির্ধারিত ফি ছাড়াও কেন্দ্র, কোচিং ও অন্যান্য ফি রয়েছে। সব মিলিয়ে ২৬০০ টাকা আদায় করা হয়েছে।
মাধবপুর উচ্চবিদ্যালয় থেকে এ বছর পরীক্ষায় অংশ নেবে ২২৮ জন শিক্ষার্থী। এ বিদ্যালয়ে ফি আদায় করা হয়েছে ২৭৫০ টাকা করে। তবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুস সোবহান বোর্ড নির্ধারিত ফিসহ সর্বসাকুল্যে ২ হাজার টাকা নেয়ার কথা জানিয়েছেন। পতনউষার উচ্চ বিদ্যালয়ে ফি নেয়া হয়েছে ২৯০০ টাকা। এ প্রসঙ্গে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফয়েজ আহমদ বলেন, বোর্ড নির্ধারিত ফি ছাড়াও সেশন, কোচিংসহ অন্যান্য ফি বাবত ২৫০০ টাকা নেয়া হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, একইভাবে অতিরিক্ত ফি নেয়া হয়েছে শমসেরনগর এটিএম উচ্চবিদ্যালয়, ভাণ্ডারীগাঁও উচ্চবিদ্যালয়, আবুল ফজল উচ্চবিদ্যালয়, হাজী উস্তার গালর্স উচ্চ বিদ্যালয়সহ কমলগঞ্জের অন্যান্য বিদ্যালয়ে।
বোর্ডের বার্ষিক ক্রীড়া মঞ্জুরি ফি বিদ্যালয় প্রতি ৩০০ টাকা হলেও বিদ্যালয়গুলো শিক্ষার্থী প্রতি ৩০০ টাকা করে আদায় করা হয়েছে। অতিরিক্ত ফি আদায় প্রসঙ্গে কমলগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পারভীন আক্তার বলেন, এখানে আমি নতুন। এ বছর রেজিস্ট্রেশন ফি কত নির্ধারিত করা হয়েছে নিশ্চিত নয়। সরকার নির্ধারণের পরও প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির সিদ্ধান্ত মোতাবেক ফি নেয়া হয়। এটা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রধানরাই ভাল বলতে পারবেন। অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।