টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ভারতেশ্বরী হোমসের ছাত্রী ও এসএসসি পরীক্ষার্থী মেহিয়া আক্তার বাবলী (১৭) আত্মহত্যার ঘটনার তিন দিনেও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। ঘটনাটি হত্যা না আত্মহত্যা এ নিয়ে নানা রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। বাবলীর মা বাদী হয়ে তার এক বান্ধবী ও বান্ধবীর মা এবং বাবলীর কথিত প্রেমিকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
বৃহস্পতিবার ( ২২ ফেব্রুয়ারি) বাবলীর মা পারুল বেগম মির্জাপুর থানায় এ অভিযোগ দায়ের করেন বলে জানান থানার অফিসার ইনচার্জ এ কে এম মিজানুল হক মিজান। বাবলীর পিতার নাম মো. বখতিয়ার রানা এবং মাতার নাম পারুল বেগম এবং রাজধানী ঢাকার সায়দাবাদ এলাকায় তারা বসবাস করেন।গত বুধবার রাতে মির্জাপুর উপজেলা সদরের বাইমহাটি গ্রামে তার বান্ধবী জয়ার সঙ্গে পরীক্ষা দিতে এসে মো. লোকমান মিয়ার বাসায় বাবলী আত্মহত্যা করে। পুলিশ ওই বাসার একটি কক্ষ থেকে গলায় ফাঁস লাগানো ঝুলন্ত অবস্থায় বাবলীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্ত শেষে গতকাল বৃহস্পতিবার তার লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে।
আজ শুক্রবার বাবলীর মা পারুল বেগম জানায়, সে ভারতেশ্বরী হোমস থেকে ২০১৮ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী হিসেবে পরীক্ষা দিচ্ছে এবং আবাসিক হলের ছাত্রী ছিল। তিনি অভিযোগ করেন, তার মেয়ে বাবলী ভারতেশ্বরী হোমসের আবাসিক হলে থাকা অবস্থায় কিছুদিন আগে হোস্টেলের ডাইনিং হলে রান্না নিয়ে তার কন্যার সঙ্গে শিক্ষক ও রান্না ঘরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এ নিয়ে হোমস কর্তৃপক্ষ আবাসিক হল থেকে বাবলীকে বের করে দেন। এরপর বাবলীর বাবা-মা তাকে নিয়ে চরম বিপাকে পরেন তারা। একই অভিযোগে বাবলীর বান্ধবী আছিয়া খাতুন জয়াকেও হোমস কর্তৃপক্ষ হোস্টেল থেকে বের করে দেন। এদিকে এসএসসি পরীক্ষা চলায় গত ১ এপ্রিল থেকে তার বান্ধবী জয়া ও জয়ার মায়ের সঙ্গে থেকে মির্জাপুর পৌর সদরের লোকমান মিয়ার বাসা ভাড়া নিয়ে মির্জাপুর এ কে পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে থাকে। গত বুধবার রাতে ওই বাসার একটি কক্ষে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় বাবলীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে মির্জাপুর থানা পুলিশ।
আবাসিক হল থেকে বের করে দেওয়ার বিষয়ে ভারতেশ্বরী হোমসের অধ্যক্ষ মিসেস প্রতিভা রানী হালদার সাংবাদিকদের জানান, বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ভারতেশ্বরী হোমসের নিয়মানুসারে বাবলী ও তার বান্ধবী আছিয়া খাতুন জয়াকে হোমসের আবাসিক হল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। বাবলী ও জয়া এখন হোমসের আবাসিক হলের ছাত্রী নয়। তারা বাহিরে থেকে পরীক্ষা দিচ্ছে। কি কারণে বাবলী আত্মহত্যা করেছে এটা তার পরিবারের ব্যাপার হোমসের বিষয় নয়।
এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কে এম মিজানুল হক মিজানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, গলায় ফাঁস লাগানো ঝুলন্ত অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করা হয়েছিল। বাবলীর মা পারুল বেগম এ বিষয়ে বান্ধবী জয়া ও জয়ার মা এবং এক ছেলে বন্ধু তথা কথিত প্রেমিকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ময়না তদন্ত শেষে বাবলীর লাশ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।