এসএসসি পরীক্ষার ফরমপূরণে শিক্ষাবোর্ড নির্ধারিত ফি’র চেয়ে কয়েকগুণ বাড়তি টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রামের ১৫টি স্কুলের বিরুদ্ধে। স্কুলের বিভিন্ন খাতে খরচের অজুহাত তুলে সর্বনিম্ন তিন হাজার থেকে দশ হাজার টাকা পর্যন্ত বাড়তি আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পেয়ে ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড।
অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ তদন্ত করছেন চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিব শওকত আলমের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি কমিটি।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, এসএসসি পরীক্ষার ফরমপূরণে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ এনে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে ১৫টি মাধ্যমিক স্কুলের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ক্ষুব্দ কয়েকজন অভিভাবক।
স্কুলগুলোর মধ্যে আছে, নগরীর আবুরহাট উচ্চ বিদ্যালয়, পূর্ব বৈরয়া টিএমসি উচ্চ বিদ্যালয়, ষোলশহর পাবলিক স্কুল, কিশলয় আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, বাংলাদেশ রেলওয়ে স্টেশন কলোনি উচ্চ বিদ্যালয়, খাজা আজমেরী স্কুল, মেহেরুন নেছা ফয়েজ উচ্চ বিদ্যালয় ও সরাইপাড়া সিটি করপোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়, সীতাকুণ্ডের কুমিরা আবাসিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও ভাটিয়ারি হাজী টিএসি উচ্চ বিদ্যালয়, রাঙ্গুনীয়া উপজেলার রাজাভুবন উচ্চ বিদ্যালয়, সাতকানিয়া উপজেলার চরতী দুরদুরী উচ্চ বিদ্যালয়, চকরিয়া উপজেলার শহীদ আবদুল হামিদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, উখিয়া উপজেলার ডেইলপাড়া নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়, রাঙামাটি উপজেলার বাঙালহালিয়া উচ্চ বিদ্যালয়।
মো. নুরুল হক নামে এক অভিভাবক জানান, ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় বোর্ড নির্ধারিত ফি ২ হাজার টাকার মতো। সেখানে সাড়ে ৫ হাজার টাকা দিয়ে ফরম পূরণ করা হয়েছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না।
চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শাহেদা ইসলাম বলেন, কোন স্কুলকে বাড়তি টাকা আদায় করতে দেওয়া হবে না। নগরী ও উপজেলার ১৫টির বেশি স্কুলের বিরুদ্ধে এসএসসির ফরমপূরণের সময় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা আদায়ের অভিযোগ এসেছে। অভিযোগের বিষয়ে শিক্ষাবোর্ডের তদন্ত কমিটি তদন্তের নেমেছে। তদন্ত রিপোর্টের প্রেক্ষিতে ওইসব স্কুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে প্রয়োজনে অভিযুক্ত স্কুলের বিরুদ্ধে স্বীকৃতি বাতিলেরও সুপারিশ করা হবে।
চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. মাহবুব হাসান জানান, এসএসসির জন্য ৩০০ টাকা কেন্দ্র ফিসহ তিন বিভাগের ফি নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। বিজ্ঞান বিভাগে নিয়মিত শিক্ষার্থীর কাছ থেকে কেন্দ্র ও ব্যবহারিক ফিসহ সর্ব্বোচ্চ ২ হাজার ৩২০ টাকা ও অনিয়মিত ২ হাজার ৪২০ টাকা, ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় নিয়মিত শিক্ষার্থীর কাছ থেকে কেন্দ্র ও ব্যবহারিক ফি’সহ সর্ব্বোচ্চ ১ হাজার ৯০০ টাকা ও অনিয়মিত ২ হাজার টাকা এবং মানবিক বিভাগের নিয়মিত শিক্ষার্থীর কাছ থেকে কেন্দ্র ও ব্যবহারিক ফিসহ সর্ব্বোচ্চ ১ হাজার ৯০০ টাকা ও অনিয়মিত ২ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
শওকত আলম জানান, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মডেল টেস্ট, উন্নয়ন ফিসহ নানা খাত দেখিয়ে ৪-৫ গুণ টাকা বেশি আদাযের অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা তদন্ত করছি। সত্যতা পেলেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।