একশ’ টাকা ‘চুরি’র অপবাদ দিয়ে সুমাইয়া (৮) নামে এক কওমি মাদ্রাসাছাত্রীর মুখে গামছা বেঁধে ১৬০টি বেত্রাঘাত দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার (১০ই আগস্ট) রাতে বরিশালের গৌরনদী উপজেলা সদরের খাদিজাতুল কোবরা (রা.) মহিলা কওমি মাদ্রাসার আবাসিক হলে।
নির্যাতিতা ছাত্রীর মা রেনু বেগম জানান, শুক্রবার (১১ই আগস্ট) সকালে মাদ্রাসার এক ছাত্রী গোপনে তাকে ফোন করে জানায় মাদ্রাসার তিন নারী শিক্ষক সুমাইয়াকে রাতে মারধর করেছেন। খবর পেয়ে তিনি সকালে সুমাইয়াকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন।
এসময় মাদ্রাসার সুপার খাদিজা বেগম (বড় খালামনি হিসেবে পরিচিত) তাকে জানায়, অপর এক ছাত্রীর একশ’ টাকা চুরির ঘটনায় সুমাইয়াকে শাসন করা হয়েছে। তবে কোন ছাত্রীর টাকা চুরি হয়েছে তা তিনি বলতে পারেননি।
রেনু বেগম আরও অভিযোগ করেন, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে একশ’ টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে মাদ্রাসার সুপার, মেজ খালামনি ও বাংলা খালামনি তার মেয়ে সুমাইয়ার মুখে গামছা বেঁধে নির্যাতন করে।
বড় খালামনির নির্দেশে মুখে গামছা বাঁধার পর মাদ্রাসার আবাসিক হলের মেজ খালামনি গুনে গুনে তাকে ৬০টি ও বাংলা খালামনি ১০০টি বেত্রাঘাত করেছেন বলে আভিযোগ করেন তিনি। এতে তার মেয়ে গুরুতর অসুস্থ হওয়ার পরেও তাকে রাতের খাবার দেয়া হয়নি। এ ব্যাপারে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও তিনি জানান।
অভিযোগের ব্যাপারে মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা জাহিদুল ইসলামের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, যেকোন অপরাধ করলে কওমি মাদ্রাসায় শাস্তি দেয়ার বিধান রয়েছে। এ আইন সারাদেশের কওমি মাদ্রাসাগুলোতে প্রচলিত। তাই টাকা চুরির ঘটনায় ছাত্রী সুমাইয়াকে মাদ্রাসার খালামনিরা (শিক্ষক) শাসন করেছে বলে তিনি স্বীকার করেন।
এ ব্যাপারে গৌরনদী মডেল থানার ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘এ ঘটনায় এখনও কেউ থানায় অভিযোগ করেননি, অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’