কওমি মাদ্রাসা শিক্ষার মানোন্নয়ন ও কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাকে যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ সম্পর্কে প্রস্তাবিত শিক্ষা আইনে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছে একটি কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড। শনিবার সকালে বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া (বেফাক) নামে পরিচিত এই কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে এ বিষয়ে এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সারাদেশে প্রায় ২০টি কওমি মাদ্রাসা বোর্ড রয়েছে এরমধ্যে ফেফাক সর্ববৃহৎ।
শিক্ষা আইন-২০১৬ এর খসড়াটি নিয়ে অনুষ্ঠিত সভায় বেফাক সহসভাপতি মাওলানা মোস্তফা আজাদ সভাপতিত্ব করেন। সভায় খসড়াটির তৃতীয় অধ্যায়ের মাদ্রাসা শিক্ষার ‘খ’ এর ৩ নম্বর ধারার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সবাই। সভাশেষে সংবাদ মাধ্যমকে তথ্য সরবরাহ করেন তারা।
উক্ত ৩ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, ‘সরকার কওমি মাদ্রাসা শিক্ষার মানোন্নয়ন ও কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাকে যুগোপযোগী করিবার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করিবে’। কিন্তু ধারাটির বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের পক্ষে থেকে কোনো সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে বেফাকের বক্তব্য হচ্ছে, এদেশের কওমি মাদ্রাসাগুলো যুগ যুগ ধরে প্রয়োজনীয় বাংলা, ইংরেজি, অংক, ইতিহাসসহ কুরআন, হাদীস, আকায়েদ ও ফেকাহ, উসূলে ফেকাহ, তাফসীর ও আরবি সাহিত্যের উপর যুগোপযোগী উচ্চতর শিক্ষা দিয়ে মানুষকে সত্যিকার মানুষ হিসেবে তৈরি করার খিদমত আঞ্জাম দিয়ে আসছে। এসব মাদ্রাসার স্বকীয়তা ও সতন্ত্র বৈশিষ্ট কারো অজানা নয়। এতএব কওমি মাদ্রাসার সেই স্বকীয়তা বিলুপ্ত হয় এমন কোনো সিদ্ধান্ত অতীতেও বেফাক মেনে নিতে পারেনি এবং ভবিষ্যতেও মেনে নিতে পারবে না।এ বিষয়ে বেফাক শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও সরকারের মনযোগ আকর্ষণ করে। সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন সহসভাপতি মুফতী মুহাম্মাদ ওয়াক্কাস, মহাসচিব মাওলানা আব্দুল জব্বার জাহানাবাদী, মাওলানা নূরুল ইসলাম, মাওলানা জোবায়ের আহমদ চৌধুরী, মুফতী ওমর ফারুক, মুফতী নূরুল আমীন, মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম ও মাওলানা মুনীরুজ্জামান প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০-এর সুপারিশের আলোকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক শিক্ষা আইন ২০১৬ এর খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে। জনমত যাচাইয়ের জন্য উক্ত খসড়াটি মন্ত্রনালয়ের ওয়েবসাইটে গত ৩ এপ্রিল ২০১৬ প্রকাশ করা হয়েছে। আগামীকাল খসড়ার ওপর মতামত প্রদানের সময় শেষ হচ্ছে।