খুলনার কৃতি সন্তান বিশিষ্ট গণিতবিদ ও কম্পিউটার বিজ্ঞানী ড. মো. মোজাজারুল ইসলামের সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে্ আয়োজিত স্মারক বক্তৃতা ও বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠান আজ শনিবার (২৮ মে) সকালে খুলনা শহরের উমেশ চন্দ্র পাবলিক লাইব্রেরিতে অনুষ্ঠিত হয়।
স্মারক বক্তা রাজশাহীর বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর নুরুল হোসেন চৌধুরী। বক্তৃতার শিরোনাম : আমাদের ইতিহাসের আলোকে দেশপ্রেম(১৭৫৭-১৮৫৭)।
প্রধান অতিথির ভাষণ দেন খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুস সামাদ। সভাপতিত্ব করেন খুলনা সাহিত্য পরিষদের সভাপতি এড. আবদুল্লাহ হোসেন। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন মোজহারুল ইসলাম ও শার্লী ইসলাম ফাউন্ডেশনের সদস্য মো. আব্দুর রউফ।
স্মারক বক্তৃতায় প্রফেসর ড. নুরুল হোসেন বলেন, “দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে ব্রিটিশ পরাধীনতার নাগপাশ হতে এদেশকে মুক্ত করার জন্যে সর্বপ্রথম কৃষক শ্রমিক এবং সাধারণ মানুষই সংগ্রাম করেছিলো। দেশের ক্রান্তিকালে যেকোন অপশক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাড়ানোই হল দেশপ্রেম”।
প্রধান অতিথির ভাষণে জনাব মোঃ আবদুস সামাদ বলেন, “ একটি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে পলাশীর প্রান্তরে ইংরেজরা আমাদের স্বাধীনতা হরণ করেছিলো, কিন্তু কেন আরো একটি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে আমরা ইংরেজদেরকে এ দেশ থেকে অপসারণ করে আমাদের স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনতে পারিনি?”
তিনি আরও বলেন, “ড. মোঃ মোজাহারুল ইসলাম আমাদের ইতিহাসেরই একজন মানুষ। কেননা তাঁর ব্যবহারিত কম্পিউটারটি বাংলাদেশের প্রথম কম্পিউটার যা এখন যাদুঘরে রক্ষিত।”
এরপর খুলনার বারোটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বারো জন মেধাবী শিক্ষার্থীকে ড. মোঃ মোজাহারুল ইসলাম শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হয়।
সভার শুরুতেই মওলানা মুহাঃ রহমাতুল্লাহ এর পরিচালনায়, ড. মোঃ মোজাহারুল ইসলাম, তাঁর স্ত্রী শার্লী ইসলাম সহ প্রয়াত সকলের আত্মার শান্তি কামনা করে দোয়া করা হয়। সভায় উপস্থিত সুধীজনকে স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য দেন আয়েশা হান্নান এবং ড. মোঃ মোজাহারুল ইসলামের সংক্ষিপ্ত জীবন বৃত্তান্ত উপস্থাপন ও সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন ড. মোঃ মোজাহারুল ইসলাম ও শার্লী ইসলাম ফাউন্ডেশনের সভাপতি প্রফেসর মোহাম্মদ মাজহারুল হান্নান।
মোজহারুল ইসলামের ভাই বাংলাদেশ অধ্যক্ষ পরিষদের সভাপতি ও দৈনিকশিক্ষার উপেদেষ্টা সম্পাদক অধ্যাপক মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম জানান ২০০৯ সালের ৩ এপ্রিল ক্যামব্রিজে নিজ বাসভবন থেকে সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের তাঁর দায়িত্ব পালনের জন্য যাচ্ছিলেন, ঠিক তখন সেন্ট জনস কলেজের সামনে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
কম্পিউটার বিজ্ঞানী ড. মো. মোজাজারুল ইসলাম নিজে ছিলেন জ্ঞানের একনিষ্ঠ সাধক। তাঁর স্বপ্ন ছিল আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম জ্ঞানের আলোয় আলোকিত হোক। তাইতো তিনি তাঁর শিক্ষকতা জীবনের অর্জিত অর্থের সঞ্চয় থেকে খুলনা বিশ্ববিদ্যায়ের তাঁর প্রয়াত স্ত্রী’র স্মরণে শার্লী ইসলাম লাইব্রেরি নির্মাণে প্রায় কোটি টাকা প্রদান করেন।
এছাড়াও, ১৯৬৪ সালে পূর্ব পাকিস্তানের প্রথম কম্পিউটারটি তিনি নিজেই পরিচালনা করতেন।