করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলায় বিএ-এমএ করছে পাকিস্তানিরা - দৈনিকশিক্ষা

করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলায় বিএ-এমএ করছে পাকিস্তানিরা

গাউস রহমান পিয়াস |

১৯৫৩ সাল। তখনো ঢাকায় শুকায়নি সালাম-রফিক-জব্বারের রক্তের দাগ। পাকিস্তান সরকার করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু করে বাংলা বিভাগ। ৬৫ বছর ধরে বিভাগটি বিরতিহীন চলছে এবং বাংলায় অনার্স-মাস্টার্স করে বের হচ্ছে পাকিস্তানিরা। শুধু তাই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়টিতে উর্দু বিভাগ চালু হয়েছিল আরো দুই বছর পর, ১৯৫৫ সালে। অধুনা পাকিস্তানের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব মডার্ন ল্যাংগুয়েজ বাংলা ভাষায় ‘ফাংশনাল কোর্স’ চালু করেছে।

২০১৬ সালের ২৭ নভেম্বর পাকিস্তানের ডেইলি টাইমসের সাংবাদিক আরশাদ ইউসাফজাইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচীনতম ও অগ্রণী বিভাগুলোর অন্যতম বাংলা বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৫৩ সালে। সেই থেকে বিভাগটি বিএ (সম্মান) ও এমএ (স্নাতকোত্তর) এবং সার্টিফিকেট কোর্স পরিচালনার মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ বিভাগ হিসেবে চলছে।

করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ওয়েবসাইট uok.edu.pk/faculties/bengali। বর্তমান চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবু তাইয়্যাব খান। পাকিস্তানের এই শিক্ষাবিদ এই বিভাগ থেকেই বাংলায় স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়ে পরে এখানেই ডক্টরেট করেন।

বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক আবু তাইয়্যাব ডেইলি টাইমসকে বলেন, করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগ সৃষ্টির লক্ষ্য ছিল বাংলা ভাষা এবং এর ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির জ্ঞান এ দেশে তুলে ধরা। তিনি আরো বলেন, এই বিভাগ চালু হওয়ার ফলে শিক্ষার্থীরা বাংলা সাহিত্য সার্থকভাবে অনুধাবন ও মূল্যায়ন করতে পারছে।

বিভাগটিতে বাংলা সাহিত্যের ওপর প্রায় দুই হাজার গ্রন্থ রয়েছে। বছর দুই আগে প্রকাশিত করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসপেক্টাসে বলা হয়, ‘দেয়ার আর এবাউট টু থাউজেন্ড বুকস অন বেঙ্গলি লিটারেচার ইন দ্য সেমিনার লাইব্রেরি (uok.edu.pk/admissions/2016/prospectus.pdf)। রয়েছে বিভাগটির নিজস্ব প্রকাশনাও। প্রতিষ্ঠানটির uok.edu.pk/faculties/bengali/ben-pub.pdf লিংকটিতে দেওয়া ফাইলে বাংলা ভাষার ওপর ১২টি প্রকাশনার তালিকা জার্নালের নাম ও প্রকাশের সালসহ দেওয়া হয়েছে। প্রকাশনাগুলো ঘেঁটে দেখা যায়, বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ও তাঁর সাহিত্যকর্ম নিয়ে বিভাগটির আগ্রহ প্রবল। মূল্যায়ন করা হচ্ছে লালন সাঁইয়ের কর্মও। তবে এখানে অনুপস্থিত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, যদিও তিনি বাংলা সাহিত্যে রচনার জন্য নোবেল স্বীকৃতি পেয়েছেন।

করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব ভাষার স্বতন্ত্র বিভাগ রয়েছে সেগুলো হচ্ছে—আরবি, বাংলা, ইংরেজি, ফারসি ও উর্দু। শিক্ষার্থীদের আগ্রহের বিচারে এগিয়ে আছে ইংরেজি। এর পরই আছে আরবি ও উর্দু। বাংলা ও ফারসির অবস্থান নিচের দিকে। বাংলায় আসন ৪০টি।

ডেইলি টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রথম বিভাগীয় প্রধান ছিলেন অধ্যাপক সৈয়দ আলী আহসান; পরে স্বাধীন বাংলাদেশে তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশবিদ্যালয়ের উপাচার্য হন। দ্বিতীয় বিভাগীয় প্রধান ছিলেন অধ্যাপক মোহাম্মদ ফারুক, যিনি পরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে যোগ দেন। তৃতীয় বিভাগীয় প্রধান এবং প্রথম বিভাগীয় চেয়ারম্যান ছিলেন অধ্যাপক সৈয়দ আলী আশরাফ; যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগেরও প্রধান ছিলেন। তিনি ১৯৭৩ সালে পাকিস্তান ছেড়ে ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন। আরো পরে ১৯৮৯ সালে তিনি ঢাকায় দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন বলেও জানায় পাকিস্তানের দৈনিকটি।

 

সৌজন্যে: ইত্তেফাক

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0035948753356934