মোবাইল ফোনে শাফী ইমাম ওরফে সাঈদীর (২১) সঙ্গে কলেজছাত্রী নাসরিন খাতুনের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে তাঁরা পালিয়ে বিয়ে করেন। শাফীর পরিবার বিয়ে মেনে না নেওয়ায় নাসরিনদের বাড়িতেই অবস্থান করতে থাকেন শাফী। দুই মাস পর একদিন শাফী পালিয়ে যান এবং যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। এ অবস্থায় নাসরিনের পরিবার চাপ দিলে বিয়ের কথা অস্বীকার করে বসেন শাফী।
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে নালিশ করলে ক্ষিপ্ত হয়ে শাফীর পরিবার উল্টো নাসরিন ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে প্রতারণা মামলা করে। কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার ঘটনা এটি।
নির্যাতিত নাসরিন খাতুন রৌমারীর নটানপাড়া গ্রামের লাজু মিয়ার মেয়ে ও রৌমারী ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। আর শাফী ইমাম ওরফে সাঈদী উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নের বড়াইকান্দি গ্রামের মাওলানা আবু তালেবের ছেলে।
নাসরিন খাতুন বলেন, ‘অনেক স্বপ্ন নিয়ে ওর (শাফী) সঙ্গে প্রেম করেছি। আশা ছিল সুখের সংসার গড়ে তোলার।
এ লক্ষ্যে তার কথায় রাজি হয়ে চলতি বছরের ২ জানুয়ারি মা-বাবার চোখ ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে যাই আমরা। কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের কাজী নুর ইসলামের অফিসে বসে নিকাহ রেজিস্ট্রির পর বিয়ে হয় আমাদের। এরপর আমার বাবার বাড়িতে দীর্ঘ দুই মাস একসঙ্গে থাকি। আমাকে ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর বুঝতে পারি, ওর (শাফী) উদ্দেশ্য অসৎ ছিল, মনে শয়তানি ছিল। আমার সঙ্গে কোনো যোগাযোগই করে না ও। আমার সব তো শেষ। ও যদি আমাকে গ্রহণ না করে তাহলে গলায় দড়ি দিয়ে মরা ছাড়া আর কোনো পথ নেই আমার।’
নাসরিনের বাবা লাজু মিয়া অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার মেয়েকে বিয়ে করে ছেলেটা আমাদের বাড়িতেই থাকল। বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠানও করলাম। চেয়ারম্যান, মেম্বার, এলাকার সব মানুষই তাদের বিয়ের ঘটনাটি জানল। অথচ ছেলেপক্ষ এখন বলছে আমরা নাকি তাদের ফাঁসানোর চেষ্টা করছি। এ নিয়ে আমাদের পাঁচজনকে আসামি করে আদালতে প্রতারণা মামলা করেছে। এ কোন দুনিয়াতে বাস করছি আমরা!’
শাফীর বাবা মাওলানা আবু তালেব বলেন, ‘মেয়ের মামা মিজানুর রহমানের সাথে আমাদের বিরোধ রয়েছে। এ কারণে তারা বিয়ের নাটক করেছে। এ জন্য আমি মেয়ে ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছি।’
ওই বিয়ে প্রসঙ্গে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান বঙ্গবাসী, সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম শালু ও শৌলমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিল জানান, শাফী ইমাম ওরফে সাঈদীর সঙ্গে নাসরিনের বিয়ের কথা তাঁরা শুনেছেন। বিয়েটি ছেলের পরিবারকে মেনে নিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু এখন তাঁরা শুনছেন শাফী বিয়ের কথা অস্বীকার করছেন।