বান্দরবানের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য ঠেকাতে শিগগিরই মাঠে নামছে প্রশাসন।
একইসঙ্গে যেসব শিক্ষক ২০১২ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রণীত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য বন্ধ নীতিমালা মানবেন না তাদের চাকরি থাকবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি।
রোববার (১৩ আগষ্ট) বিকেলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জেলা আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভায় এসব হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।
সভায় বান্দরবান প্রেসক্লাবের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বাচ্চুর উত্থাপিত অভিযোগের ভিত্তিতে আলোচনা চলাকালে পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আপনারা খবর নেন, কোনো শিক্ষক যদি নীতিমালা না মেনে কোচিং করায়, তাহলে তার বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লেখেন। তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেও লেখেন। জেলা প্রশাসনের যারা আছেন বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় যারা আছেন তারা খোঁজ নেন, ওই শিক্ষকদের যদি কোচিং করানো অবস্থায় পাওয়া যায় তাহলে উনার প্রতিষ্ঠান প্রধান এবং শিক্ষা অফিসার দায়ী থাকবেন।
এদিকে বান্দরবান জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক জানান, নীতিমালা বহির্ভূত কোচিং বন্ধে শিগগিরই ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে নামবে।
জেলা শিক্ষা অফিসার সোমা রানী বড়ুয়া জানান, ইতোমধ্যে কোচিং বাণিজ্যে জড়িত শিক্ষকদের একটি তালিকা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আরো যদি কেউ কোচিং করিয়ে থাকেন, তাদের তালিকাও প্রণয়ন করা হবে।
বান্দরবানে বেশ কয়েকটি সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কিছু শিক্ষক দীর্ঘদিন ধরে নানা জায়গায় বাসা ভাড়া নিয়ে প্রাইভেট পড়াচ্ছেন বলে সম্প্রতি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে।
এছাড়াও ছোট ছোট কক্ষে ধারণক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট পড়ানোর ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। কোনো কোনো শিক্ষক এক ব্যাচে ৩০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থীকে এক কক্ষে পড়াচ্ছেন এমন দৃশ্যও দেখা গেছে। বিশেষ করে ইংরেজি, পদার্থবিদ্যা ও গণিতের শিক্ষকরা স্কুল বা কলেজে শিক্ষার্থীদের নানাভাবে চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে প্রাইভেট পড়তে বাধ্য করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আইনশৃংখলা সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন-পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়, সিভিল সার্জন ডা. অংশুই প্রু মার্মা, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল কুদ্দুছ, জেলা পরিষদ সদস্য লক্ষ্মীপদ দাস, আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কাজল কান্তি দাশ প্রমুখ। এছাড়া প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সভায় অংশ নেন।