দেশের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোর রাস্তার তীব্র জট বা বিপণিবিতানের কষ্ট-দেওয়া ভিড় তার প্রমাণ। নতুন কেনা পোশাক-জুতা বা অন্যান্য সামগ্রী নিয়ে শিশুদের আনন্দই বেশি। বড়রাও কম যান না। পোশাকগুলো ইতিমধ্যেই হয়তো দেরাজ খুলে অনেকবারই দেখা হয়ে গেছে। কাল হবে ভাঁজ ভাঙা।
ঈদ এলে রাজধানী থেকে গ্রামের বাড়ি ফেরার বিষয়টি অনেকেরই ভাবনার বড় অংশজুড়ে থাকে। দুটি কারণে এখানে ভাবনা শব্দটি যোগ হলো। এক, বাস-ট্রেন-লঞ্চ-উড়োজাহাজ; যাতেই যাওয়া হোক না কেন, সেসবের কাঙ্ক্ষিত টিকিট মিলবে কি না, তা নিয়ে একটা ভাবনা থাকে। আরেক ভাবনা হলো বাড়ি ফেরার পথটি কতটা সুগম হবে। চার ঘণ্টার যাত্রা ১৫ থেকে ১৬ ঘণ্টা হয়েছে, এমন অভিজ্ঞতা তো কমবেশি অনেকেরই আছে। তবে এবার যাত্রাপথ, অন্তত সড়কপথের যাত্রা অন্যবারের চেয়ে ভালো ছিল। চট্টগ্রামে রাস্তা চার লেন করার সুফল মিলেছে। উত্তরবঙ্গে নির্মাণাধীন রাস্তা বড় ভাবনার কারণ হতে পারত যদি বৃষ্টি হতো। ভাগ্য ভালো, বৃষ্টি হয়নি। তাই এ পথে যাত্রাও অপেক্ষাকৃত স্বস্তিদায়ক হয়েছে।
ঘাটগুলোতে কিছু কিছু জায়গায় বাড়তি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ ছিল। তবে নৌযাত্রাপথও ভালো ছিল। ট্রেনে দু-একটি ট্রেন সময়মতো না ছাড়লেও বেশির ভাগ ট্রেনই সময় ধরে চলেছে। ঈদে বাড়ি ফেরার আনন্দের মুহূর্তে বিষাদের ছায়া ফেলে রংপুরের পীরগঞ্জের ভয়াবহ দুর্ঘটনা। পোশাক কারখানার স্বল্প আয়ের শ্রমিকেরা সিমেন্টবোঝাই একটি ট্রাকে করে যাচ্ছিলেন। দুর্ঘটনায় যায় ১৮টি প্রাণ। দেশের আরও কয়েকটি জায়গাতেও ঘটে দুর্ঘটনা।
এসব কষ্টদায়ক নানা ঘটনা আমাদের পীড়িত করেছে। তবে এসব নানা কষ্ট-যন্ত্রণা-বেদনার অভিজ্ঞতা ভুলতে চাইবে মানুষ কাল। বছরের অন্তত এই একটি দিনকে বর্ণিল করে তুলতে সব প্রস্তুতি শেষ। এবার সেই আনন্দে অবগাহনের অপেক্ষা।