নীলফামারী জলঢাকা উপজেলার রশিদপুর স্কুল এন্ড কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের সরকারের বিনামূল্যের বিতরণের বই পড়ে আছে যত্রতত্র। আর ভূয়া শিক্ষার্থীর তথ্য দিয়ে চাহিদার অতিরিক্ত বই উত্তোলন করে বিপাকে পড়তে হয়েছে প্রতিষ্ঠানটিকে। চাহিদার অতিরিক্ত বই উত্তোলন ও যত্রতত্র সরকারি বই ফেলে রাখায় প্রধান শিক্ষকে শোকজ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ই মে) সরেজমিন জানা যায় রশিদপুর স্কুল এন্ড কলেজ সরকার ঘোষিত ১ জানুয়ারি বই উৎসব পালনের জন্য জলঢাকা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস হতে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণের জন্য বিনামূল্যের বই উত্তোলন করেন। বই উত্তোলনের জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীর চাহিদা মোতাবেক বইয়ের তথ্য প্রেরণ করেন। সেই চাহিদা অনুযায়ী উপজেলা শিক্ষাকর্তা বই প্রদান করেন। কিন্তু বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ভুয়া শিক্ষার্থীর তথ্য প্রেরণের মাধ্যমে অতিরিক্ত বই উত্তোলণ করে ফেলে রেখেছেন রশিদপুর উত্তর পাড়া এতিমখানা হাফিজিয়া মাদরাসা কক্ষে। দীর্ঘদিন যাবৎ বইগুলো এভাবে পড়ে থাকলেও কারও জানা ছিল না।
স্কুল ম্যানেজিং কমিটি সদস্য বলেন ৯ মে আনুমানিক বিকাল ৩টার সময় অপরিচিত একব্যক্তি বাজারে এসে ডিজিটাল পাল্লা খোঁজ করেন। এসময় তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করেন পাল্লা দিয়ে কি করবেন। তিনি বলেন এতিমখানায় কিছু বই বিক্রয় হবে তা ওজন দেওয়ার জন্য। বিষয়টি জানতে পেরে স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সদস্য রাজ্জাকুল ইসলাম ঘটনাস্থলে দেখতে পান প্রায় ৪ থেকে ৫ হাজার বই সেখানে পড়ে আছে। তিনি খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারেন বইগুলো রশিদপুর স্কুল এন্ড কলেজের।
এসময় বিষয়টি বেঘতিক দেখে বই ক্রয় করতে আসা ব্যাবসায়ী কৌশলে কেটে পড়েন। এ বিষয়ে রাজ্জাকুল ইসলাম এবং ইয়াছিন আলী শুভ প্রধান শিক্ষকের কাছে জানতে চাইতে বলেন বিদ্যালয়ে জায়গা না থাকায় মাদরাসায় কক্ষে বইগুলো রাখা হয়েছে। বই বিক্রয়ের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন। এ বিষয়ে আমরা উপজেলা ও জেলা শিক্ষাকর্তাসহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করি।
জলঢাকা রশিদপুর স্কুল এন্ড কলেজ প্রধান শিক্ষক বলেন বিদ্যালয়ে জায়গা না থাকায় বইগুলো সেখানে রাখা আছে। বই বিক্রয়ের বিষয়টি সত্য নয়।
উপজেলা শিক্ষাকর্মকতা আশরাফুজ্জামান বলেন বিষটি জানতে পেরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। সেখানে দেখা যায় বিতরণ পরবর্তী আনুমানিক সাড়ে ৪ হাজার বই এতিমখানার কক্ষে রাখা হয়েছে। এসময় জানতে চাওয়া হয় সরকারের বিনামূলের বই ভূয়া শিক্ষার্থীর তথ্য দিয়ে চাহিদার অতিরিক্ত গ্রহণ করে যত্রতত্র ফেলে রাখা কতটুকু গ্রহণযোগ্য। তিনি বলেন ভূয়া তথ্য দিয়ে চাহিদার অতিরিক্ত বই গ্রহন ও সরকারি বই যত্রতত্র ফেলে রাখায় প্রধান শিক্ষক মাহিদুল ইসলামকে শোকজ করা হয়েছে। বর্তমানে ঘটনাস্থল থেকে বই জব্দ করে উপজেলা গোডাউনে আনা হয়েছে।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল বলেন, বিষয়টি সরেজমিন তদন্ত সাপেক্ষে প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য উপজেলা শিক্ষাকর্মকর্তাকে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জানাতে চাহওয়া হয় চাহিদার অতিরিক্ত বই উত্তোলণ সম্পর্কে তিনি বলেন কিভাবে একটি বিদ্যালয় নিয়মিত শিক্ষার্থীর অতিরিক্ত বই উত্তোলন করেছেন তাও তদন্ত করা হবে।