কলেজটি প্রতিষ্ঠার বয়স ৪৯ বছর। শিক্ষার্থী প্রায় সাড়ে চার হাজার। কিন্তু তাঁদের থাকার জন্য নেই কোনো ছাত্রাবাস। চাহিদার তুলনায় নেই শিক্ষক। তিন বিষয়ে কোনো শিক্ষকই নেই। এ ছাড়া সীমানাপ্রাচীর না থাকায় বহিরাগতদের উৎপাত, কলেজ প্রাঙ্গণে জলাবদ্ধতা, টয়লেট নোংরাসহ নানা সমস্যা।
গতকাল বুধবার নড়াইলের লোহাগড়া সরকারি আদর্শ মহাবিদ্যালয়ে এসব সমস্যা তুলে ধরে পরিবেশ ও শিক্ষাবান্ধব ক্যাম্পাস তৈরির দাবিতে ক্লাস বর্জন করেছে শিক্ষার্থীরা।
কলেজের প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেল, ১৯৬৮ সালে কলেজটি প্রতিষ্ঠিত। কলেজে উচ্চমাধ্যমিক, স্নাতক ও চারটি বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) কোর্স চালু রয়েছে। কলেজে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান এবং পরিসংখ্যানে কোনো শিক্ষক নেই। এ ছাড়া আটজন শিক্ষকের পদ শূন্য। এনাম কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী স্নাতক (সম্মান) কোর্সে প্রতিটি বিষয়ে আটজন শিক্ষক থাকার কথা থাকলেও বাংলা, সমাজবিজ্ঞান ও হিসাববিজ্ঞানে আছেন তিনজন করে শিক্ষক। রাষ্ট্রবিজ্ঞানে আছেন একজন।
গতকাল দুপুরে ক্লাস বর্জনরত শিক্ষার্থীরা জানান, এসব সমস্যা ছাড়াও কলেজ মাঠে জলাবদ্ধতার জন্য ছয় মাস খেলাধুলা বন্ধ থাকে। কলেজে ভালো মিলনায়তন নেই। রয়েছে শ্রেণিকক্ষ–সংকট। এতে পাঠদান কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। কিন্তু সমাধানের কোনো উদ্যোগ নেই। তাই তাঁরা ক্লাস বর্জন করেছেন। দ্রুত এর সমাধান না হলে পরবর্তী সময়ে কঠোর আন্দোলন করা হবে।
দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী আবুজার শেখ বলেন, কলেজের সামান্য প্রশাসনিক উদ্যোগেই পরিবেশ ও শিক্ষাবান্ধব ক্যাম্পাস তৈরি করা সম্ভব। স্নাতকের শিক্ষার্থী এখলাস এবং স্নাতক (সম্মান) কোর্সের শিক্ষার্থী রাবেয়া ও ইয়াসমিন জানান, কলেজে কোনো ছাত্রাবাস না থাকায় বেশি ব্যয় করে মেসে থাকতে হয়। কলেজের বাইরে বসবাস করায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে হয়। শিক্ষার্থীদের জন্য বাসা ভাড়া পাওয়াও দুষ্কর।
এসব বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ শরীফ এনামুল কবির বলেন, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা হয়েছে। ছাত্রাবাস, সীমানাপ্রাচীর ও শিক্ষক-সংকটের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে প্রায়ই লেখা হয়। জুন মাসে কলেজের পরিচ্ছন্নতাকর্মী অবসরে যাওয়ায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় সমস্যা হচ্ছে। তবে বিকল্প ব্যবস্থা কিছুটা করা হয়েছে। এ ছাড়া অন্য সমস্যাগুলোর সমাধানের ব্যাপারে শিগগিরই উদ্যোগ নেওয়া হবে।