হাতে কোন তথ্য প্রমাণ ছিল না। শুধু সন্দেহের বশে স্কুল পড়ুয়া এক ছাত্রীর বিরুদ্ধে ৫০০ টাকা চুরির অভিযোগ তোলা হয়। পরে স্কুলে যাওয়ার পথে এলাকাবাসীরা প্রকাশ্যে রাস্তায় ওই ছাত্রীর জামা খুলে তল্লাশি চালায়। এ অপমান সহ্য করতে না পেরে অভিমানে আত্মহত্যা করে ওই ছাত্রী।
এমনই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে ভারতের হাওড়ার পাঁচলার হাউলিবাগানে। নিহত ওই তরুণীর নাম সঙ্গীতা পড়াল। সে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী।
গত মঙ্গলবার পাশের বাড়িতে গল্প করতে গিয়ে কিছুক্ষণ খেলাধুলা আর গল্প করে সেখান থেকে ফিরে আসে। কিন্তু এরপরই প্রতিবেশীরা জানায়, ৫০০ টাকার একটি নোট খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পরে স্কুলে যাওয়ার সময় সঙ্গীতার রাস্তা আটকায় প্রতিবেশীরা।
৫০০ টাকা এগারো বছরের সঙ্গীতাই চুরি করেছে- এমন অভিযোগ তুলে রাস্তার মধ্যেই তার জামা কাপড় খুলে তল্লাশি চালানো হয়। এ সময় তরুণীটিকে ‘চোর’ সম্বোধন করে কটূক্তিও করেন অনেকে। কিন্তু তল্লাশি চালিয়ে তার থেকে কিছুই পাওয়া যায়নি।
এই ঘটনার পরই ভেঙে পড়ে সঙ্গীতা। স্কুলে সেদিন সহপাঠীদের সঙ্গেও কোন কথা বলেনি সে। বাড়ি ফিরেই দরজা বন্ধ করে দেয়। বাড়ির লোকেরা ডাকাডাকি করলেও কোন সাড়া দেয়নি সে। কিছুক্ষণ পরে পোড়া গন্ধ পেয়ে চমকে যান বাড়ির লোকেরা। ততক্ষণে অবশ্য যা হওয়ার তা হয়ে গেছে। কারণ নিজের গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেয় সঙ্গীতা।
পরে তাকে উদ্ধার করে গাববেরিয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই সময়ই তার শরীরের প্রায় নব্বই শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। মঙ্গলবার রাতেই তাকে কলকাতার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। এরপর বৃহস্পতিবার রাতেই তার মৃত্যু হয়।
সঙ্গীতা মারা যাওয়ার পর ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন মেয়েটির পরিবারের লোকেরা। দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে সঙ্গীতার পরিবার।
এদিকে এ গোটা ঘটনায় স্তম্ভিত এলাকার বাসিন্দারাও। সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন।