চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নতুন কমিটির সহসম্পাদক হয়েছেন মো. জাহাঙ্গীর আলম নামের এক ব্যক্তি। ক্যাম্পাসে তিনি জাহাঙ্গীর আলম রাসেল নামে পরিচিত। তবে অভিযোগ উঠেছে, তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, মো. জাহাঙ্গীর আলম ২০১৩ সাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্রাবাসে অবস্থান করে আসছেন। অভ্যন্তরীণ কোন্দল বা বিবাদে তাঁকে ক্যাম্পাসে সোচ্চার দেখা যায়। তিনি কখনো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হননি, কিংবা ভর্তির সুযোগ পাননি। অথচ নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র দাবি করে সভা-সমাবেশে সরব থাকছেন তিনি।
বহিরাগত হয়েও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কমিটিতে জায়গা পাওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে গত মঙ্গলবার রাতে মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমি ইনস্টিটিউট অব মডার্ন ল্যাঙ্গুয়েজের (আধুনিক ভাষাশিক্ষা ইনস্টিটিউট) ছাত্র।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ বলে জানিয়ে ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দিয়ে সংযোগ কেটে দেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের নথিপত্র যাচাই করে মো. জাহাঙ্গীর আলম কিংবা জাহাঙ্গীর আলম রাসেল নামের কোনো শিক্ষার্থীর নাম পাওয়া যায়নি।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের পরিচালক সাইফুল ইসলাম চৌধুরী গত বুধবার বলেন, ‘আমাদের অনার্স ও এক বছর মেয়াদের ভাষাশিক্ষা কোর্সের শিক্ষার্থীদের নথি যাচাই করা হয়েছে। আমাদের ইনস্টিটিউটে অনার্স বা এক বছরমেয়াদি কোর্সে মো. জাহাঙ্গীর আলম কিংবা জাহাঙ্গীর আলম রাসেল নামের কোনো শিক্ষার্থী নেই।’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি আলমগীর টিপু বলেন, ‘জাহাঙ্গীর আলম রাসেল আমাদের সেক্রেটারির সঙ্গে থাকেন। তিনি (রাসেল) আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের ছাত্র বলে শুনেছি। রাসেলের ছাত্রত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠলে আমরা বিষয়টি যাচাই করে কেন্দ্রকে জানাব। কেন্দ্র তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বিও মো. জাহাঙ্গীর আলমকে আধুনিক ভাষাশিক্ষা ইনস্টিটিউটের ছাত্র বলে দাবি করেন। কিন্তু ইনস্টিটিউটের কোনো কোর্স বা সেশনে এই নামের কোনো ছাত্র নেই বলে জানালে তিনি কাগজপত্র দেখে এ ব্যাপারে কথা বলবেন বলে জানান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোহাম্মদ আলী আজগর চৌধুরী বলেন, ‘জাহাঙ্গীর আলম বহিরাগত হলে ক্যাম্পাসে থাকতে পারবেন না। আমরা এ বিষয়ে পুলিশকে জানাব। পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’
১৮ জুলাই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ২০১ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বগিভিত্তিক সিএফসি ও ভিএক্স নামের দুটি সংগঠন আছে। জাহাঙ্গীর সিএফসি গ্রুপের সদস্য হিসেবে পরিচিত। ২০১৪ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর দুটি সংগঠনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ওই সময় জাহাঙ্গীরকে সিএফসির পক্ষে তৎপর দেখা গেছে।
সম্প্রতি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বগিভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করেছেন।