ছাপাখানায় যাওয়ার আগেই প্রশ্ন ফাঁস: জিজ্ঞাসাবাদে তিন ভাই - দৈনিকশিক্ষা

ছাপাখানায় যাওয়ার আগেই প্রশ্ন ফাঁস: জিজ্ঞাসাবাদে তিন ভাই

নিজস্ব প্রতিবেদক |

হাতে লেখা প্রশ্নপত্র ছাপাখানায় নেয়ার পথেই ফাঁস হচ্ছে। এটি করছেন সরকারি কিছু কর্মচারী। মূলত মোটা অংকের আর্থিক চুক্তির ভিত্তিতেই হাতে লেখা প্রশ্নের ছবি তুলে হোয়াটসঅ্যাপ, ভাইবারসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি চক্রের কাছে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। ওই চক্র এসব প্রশ্ন বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের অর্থ। রাজধানীর ইন্দিরা রোড থেকে তিন সহোদরসহ চক্রের ১৪ সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর তাদের জিজ্ঞাসাবাদে এ তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

শনিবার (১০ই ফেব্রুয়ারি) রাতে রাজধানীর ইন্দিরা রোড থেকে আমান উল্লাহ, বরকত উল্লাহ ও আহসান উল্লাহ নামে তিন ভাইসহ চক্রের ১৪ সদস্যকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে প্রশ্ন ফাঁসে ব্যবহূত বেশকিছু ডিভাইসসহ ২ লাখ ২৪ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। পরে আদালতের অনুমতিসাপেক্ষে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের হেফাজতে নেয় ডিবি।

জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য মিলেছে জানিয়ে ডিবির দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে সম্পৃক্ত অন্য চক্রগুলোর মতো নয় এ চক্রটি। এদের কৌশল পুরোপুরি ভিন্ন। এরা মূলত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গ্রুপ খুলে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য বিজ্ঞাপন প্রচার করে। পরে ওই গ্রুপে পরীক্ষার তিন থেকে চারদিন আগে দেয়া হয় প্রশ্ন। তবে ওই প্রশ্ন থাকে নকল। আসল প্রশ্ন দেয়া হয় পরীক্ষা শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে। আর তা থাকে হাতে লেখা প্রশ্ন।

ওই কর্মকর্তা আরো জানান, চক্রটি মূলত চারটি অংশে বিভক্ত হয়ে কাজ করে। এর শেষ পর্যায়ে থাকে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অগ্রিম অর্থ নেয়া প্রশ্ন সরবরাহকারীরা। তৃতীয় স্তরের সদস্যরা ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপসহ সামাজিক নানা মাধ্যমে গ্রুপ খুলে পরীক্ষার্থীদের যুক্ত করে। আর দ্বিতীয় স্তরের সদস্যরা প্রশ্ন প্রণয়ন কমিটির সভা থেকে ছাপাখানায় নেয়ার পথে হাতে লেখা প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করে। প্রথম স্তরের সদস্যরা পুরো কাজটির সমন্বয় করে। তবে এ চার স্তরের উপরে থাকে রাঘব বোয়ালরা। অবশ্য তারা এখনো অধরাই রয়ে গেছে।

মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহজাহান সাজু জানান, প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত মূলহোতাদের আইনের আওতায় আনতে কাজ করছে ডিবির বেশ কয়েকটি টিম। প্রশ্ন ফাঁস বন্ধে জড়িতদের গ্রেফতারের পাশাপাশি যেসব অভিভাবক এ চক্রের সঙ্গে যোগাযোগ করে সন্তানদের জন্য প্রশ্ন কিনছেন, তাদেরও আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।

মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট আরেক কর্মকর্তা জানান, প্রশ্ন ফাঁস ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে এ বাবদ টাকা লেনদেনের তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে ৩০০ সিম বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িতদের পাশাপাশি প্রশ্ন কিনছেন এমন অর্ধশতাধিক অভিভাবককে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার শেখ নাজমুল আলম বলেন, প্রশ্ন ফাঁস চক্রের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন স্তরের অনেককেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মূলহোতাদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। তাদের আইনের আওতায় আনা না গেলে প্রশ্ন ফাঁস বন্ধ করা যাবে না।

আরো ৭ শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার: প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আরো সাত শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। রোববার রাত থেকে শুরু করে পরবর্তী ৩ ঘণ্টায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এদের মধ্যে একজন চট্টগ্রামের রাউজানের একটি স্কুলের শিক্ষার্থী। বাকি ছয়জনকে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

অভিযানে অংশ নেয়া নবাবগঞ্জ থানার এসআই মো. আরাফাত হোসেন জানান, এসএসসি গণিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গত শনিবার নবাবগঞ্জ থেকে দুজন শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতেই রোববার গভীর রাতে ছয় শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।

প্রাথমিকে ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ জুনের মধ্যে: প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha প্রাথমিকে ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ জুনের মধ্যে: প্রতিমন্ত্রী পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা দাবি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের - dainik shiksha পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা দাবি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের ঝরে পড়াদের ক্লাসে ফেরাতে কাজ করছে সরকার - dainik shiksha ঝরে পড়াদের ক্লাসে ফেরাতে কাজ করছে সরকার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি, ভাইবোন গ্রেফতার - dainik shiksha প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি, ভাইবোন গ্রেফতার ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি - dainik shiksha ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন প্রায় শূন্যের কোটায় - dainik shiksha শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন প্রায় শূন্যের কোটায় ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে - dainik shiksha ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0030841827392578