আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখার নতুন কমিটির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামী ৩০ মার্চ। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ নিশ্চিত করেছেন সম্মেলনের তারিখ।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রলীগের কমিটি গঠনের প্রায় সাড়ে চার বছর পেরিয়ে গেলেও গঠন করা হচ্ছে না নতুন কমিটি। এক বছর মেয়াদী কমিটি সাড়ে চার বছর অতিক্রম করায় শাখার চেইন অব কমান্ড ভেঙে পড়েছে। সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করার পর পুনরায় চাঙ্গা হচ্ছেন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। সম্মেলনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
কমিটি গঠনের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ গত বছর ৬ সেপ্টেম্বর সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করলেও তা অনুষ্ঠিত হয় নি। ফলে মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটি দিয়েই চলছে ছাত্রলীগের এ শাখা সংগঠনটি। এতে সংগঠনটির কার্যক্রমে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। একদিকে মেয়াদহীন কমিটির নেতাদের দাপট অন্যদিকে নতুন কমিটি না হওয়ায় হতাশ ছিলো তরুণ নেতা-কর্মীরা। ২০১২ সালের ৩ অক্টোবর অনেকটা কাকতালীয় ভাবে জবি ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নেতৃত্বে আসেন এফ এম শরিফুল ইসলাম ও এস এম সিরাজুল ইসলাম। এই কমিটির নেতাদের বিরুদ্ধে রয়েছে ভর্তি বাণিজ্য, দখল, চাঁদাবাজি, নারী লাঞ্ছনা, শিক্ষকদের মারধর, প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া কেন্দ্রীয় কমিটিকে বৃদ্ধাঙ্গলি দেখিয়ে মানব বন্ধন করা সহ নানা অভিযোগ। ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর বহুল আলোচিত ও নৃশংসতম বিশ্বজিৎ হত্যাকা- ও ঘটে এ কমিটির আমলেই। এ মামলায় ছাত্রলীগের ৮ জনের ফাঁসি ও ১৩ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বর্তমান কমিটির বেশিরভাগ নেতারই ছাত্রত্ব শেষ, অনেকে বিবাহিত, ব্যবসায়ী ও চাকুরীজীবী। গঠনতন্ত্রকে বৃদ্ধাঙ্গলি দেখিয়ে চলছে শাখা সংগঠনটি। কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কমিটির মেয়াদ বাড়ানোর যে আনুষ্ঠানিকতা রয়েছে সেটুকুও সম্পন্ন করেন নি কেন্দ্র। নেতাকর্মীরা বলছেন, মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির কারণে তারা ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের কোনো কর্মকান্ডে উপস্থিত থাকেন না। মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির নেতারা এক প্রকার কর্মী শূন্য হয়ে পড়েছিল। নতুন কমিটি ঘোষণায় আবারো প্রাণ ফিরে পাচ্ছে নতুন কমিটির পদ প্রত্যাশীরা। এখন পদ প্রত্যাশী নেতারা পথ চেয়ে আছে ৩০ মার্চের দিকে।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ জবি কমিটি নিয়ে গণমাধ্যমকে জানান,‘৩০ মার্চ জবি ছাত্রলীগের সম্মেলন হবে। লবিং-তদবির করে কোন লাভ হবে না। নতুন নেতৃত্বে আসবে ক্লিন ইমেজের ব্যাক্তি তথা, যারা নিয়মিত ছাত্র, যাদের বয়স ২৯ বছরের কম, যারা অবিবাহিত এবং যাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই তারাই নেতৃত্বে আসবে।’
জবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি এফএম শরীফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সম্মেলনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। আশা করি সম্মেলনের দিনের আগেই সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে।’
সম্মেলনের ব্যাপারে জবি ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক এস.এম. সিরাজুল ইসলাম বলেন,‘৩০ মার্চ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের প্রথম জাক-জমকপূর্ন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, এটা অবশ্যই অনেক আনন্দের বিষয়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি. কে প্রধান অতিথি করা হয়েছে এই সম্মেলনে।
সম্মেলনে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পছন্দ অনুযায়ী জবি ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করা হবে।’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কেন্দ্রীয় কমিটির কয়েক জন দায়িত্বশীল নেতার সাথে কথা বলে জানা যায়‘সুপার ফাইভ’ কমিটি ঘোষণা হতে পারে।
নতুন কমিটিতে স্থান পেতে নেতা কর্মীরা ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের কাছে তদবির শুরু করেছেন। নিয়মিত যাতায়াত করছেন কেন্দ্রীয় নেতাদের বাড়িতে। নতুন কমিটিতে ভাইটাল পদে যাদের সম্ভাবনা রয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছে খান মো: মিজানুর, সাইদুর রহমান জুয়েল,সাইফুলাহ ইবনে আহমেদ সুমন,কামরুল ইসলাম, হারুন অর রশিদ, আনিসুর রহমান শিশির, মাহবুবুর আলম রবিন, জহির রায়হান আগুন,তানভীর রহমান খান প্রমুখ।