জাতীয়করণের জন্য প্রস্তাবিত কুমিল্লা জেলার ১০টি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল এবার খুবই হতাশাজনক হয়েছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে ৭টি কলেজে পাসের হার ২৫ শতাংশেরও নিচে।
গত রোববার এইচএসসি পরীক্ষার ফল ঘোষণা করা হয়। এবার কুমিল্লা বোর্ডে পাসের হার ৪৯ দশমিক ৫২। জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র ৬৭৮ জন। দেশের আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে কুমিল্লার স্থান সবার নিচে।
এ জেলায় জাতীয়করণের জন্য প্রস্তাবিত ১০টি কলেজ হলো কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার লালমাই ডিগ্রি কলেজ, নাঙ্গলকোট উপজেলার হাছান মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজ, মনোহরগঞ্জ উপজেলার নীলকান্ত ডিগ্রি কলেজ, তিতাস উপজেলার মেহনাজ মীম আদর্শ কলেজ, মেঘনা উপজেলার মানিকারচর বঙ্গবন্ধু কলেজ, হোমনা উপজেলার হোমনা ডিগ্রি কলেজ, মুরাদনগর উপজেলার শ্রীকাইল কলেজ, চান্দিনা উপজেলার দোল্লাই নোয়াবপুর কলেজ, ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার নাগাইশ বঙ্গবন্ধু কলেজ ও বুড়িচং উপজেলার কালিকাপুর আবদুল মতিন খসরু কলেজ।
কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের কম্পিউটারকেন্দ্রের জ্যেষ্ঠ সিস্টেম অ্যানালিস্ট বিকাশ চন্দ্র মল্লিক জানান, নীলকান্ত ডিগ্রি কলেজ থেকে এ বছর ২২৬ জন পরীক্ষা দিয়েছে। পাস করেছেন মাত্র ২২ জন। পাসের হার ১০ শতাংশের কম।
লালমাই ডিগ্রি কলেজ থেকে ২০৬ জন পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছেন ২২ জন। পাসের হার ১০ দশমিক ৬৮। ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, লালমাই ডিগ্রি কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে ২৭ জন পরীক্ষা দিয়েছে। ৯ জন পাস করেছেন। মানবিকে ১০৫ জন পরীক্ষা দিয়ে ৮ জন এবং ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ৭৪ জন পরীক্ষা দিয়ে মাত্র ৫ জন কৃতকার্য হয়েছেন।
হাছান মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজ থেকে ৩৫৩ জন পরীক্ষা দিয়েছে। পাস করেছেন ৪১ জন। মেহনাজ মীম কলেজ থেকে ৩০০ জন পরীক্ষা দিয়ে ৫৮ জন পাস করেছেন। পাসের হার ১৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ। শ্রীকাইল কলেজ থেকে ২৯৫ জন পরীক্ষা দিয়েছে। ৬১ জন পাস করেছেন। পাসের হার ২০ দশমিক ৬৮। মানিকারচর বঙ্গবন্ধু কলেজ থেকে ২৩৪ জন পরীক্ষা দিয়ে ৫০ জন পাস করেছেন। হোমনা ডিগ্রি কলেজ থেকে ৪৭৬ জন পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছেন ১১৫ জন। পাসের হার ২৪ দশমিক ১৬ শতাংশ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাতটি কলেজের মধ্যে তিনটি কলেজের অধ্যক্ষ বলেন, ভর্তি হওয়ার পর অনেক শিক্ষার্থী নিয়মিত ক্লাস করে না। মুঠোফোনে খবর দিয়েও তাদের কলেজে আনা যায় না। তাই খারাপ ফল হয়েছে।
ফল বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের ৩ জন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, জাতীয়করণের জন্য প্রস্তাব পাঠানো কলেজগুলোর অধ্যক্ষ ও পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা। তাঁরা যোগ্য ব্যক্তিদের শিক্ষক পদে নিয়োগ দিচ্ছেন না। তাই কলেজের পড়াশোনা ভালো হচ্ছে না।
কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কায়সার আহমেদ বলেন, আগামী দিনগুলোতে কলেজগুলো যেন ভালো করতে পারে, সে জন্য কাজ করা হবে। এ ছাড়া কেন কলেজগুলো খারাপ করল সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।