বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারিদের ন্যায্য পাওনা বার্ষিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি, বৈশাখী ভাতা, পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা ও বাড়ি ভাড়া প্রদানসহ শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণের দাবিতে অবস্থান ধর্মঘট পালন করেছে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি।
বুধবার (২৬শে জুলাই) সকাল ১১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ও বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির যৌথ উদ্যোগে এ অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করা হয়।
কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি মুহাম্মদ আবু বকর সিদ্দিক। এছাড়া সারা দেশের সব জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করা হয়।
এসময় শিক্ষক নেতৃবৃন্দ বলেন, মহান জাতীয় সংসদে শিক্ষানীতি-২০১০ পাস হয়েছে। এ শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন হলে দেশে অসাম্প্রদায়িক, বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি ভিত্তিক যুযোপযোগী শিক্ষাব্যবস্থা প্রবর্তন করা সম্ভব হবে। বর্তমানে যে নীতিতে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করা হচ্ছে তাতে শিক্ষা ক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি বৈষম্য আরো বৃদ্ধি পাবে।
শিক্ষক নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একসময়ে বলেছিলেন, আমার দল ক্ষমতায় গেলে শিক্ষক-কর্মচারিদের দাবী আদায়ের জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করতে হবে না। পরিতাপের বিষয় আমলাতান্ত্রিক জটিলতার মারপ্যাচে ফেলে শিক্ষক-কর্মচারিদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। শিক্ষা জাতীয়করণের দাবী পূরণ না হওয়ায় আমরা আমাদের ন্যায়সঙ্গত দাবীর স্বপক্ষে দীর্ঘদিন যাবৎ সংবাদ সম্মেলন, মানববন্ধন, বিক্ষোভ সমাবেশ, জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্মারকলিপি প্রদান, উপজেলা ও থানা সদরে সমাবেশ, জেলা সদরে সমাবেশ, বিভাগীয় সমাবেশ ও স্মারকলিপি প্রদান করেছি।
অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. নূর মোহাম্মদ তালুকদার, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মোঃ আবুল কাশেম, বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মোঃ জাহাঙ্গীর, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি রঞ্জিত কুমার সাহা, অধ্যক্ষ মোঃ বজলুর রহমান মিয়া, আলী আসগর হাওলাদার, বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক এম. এ বারী, প্রফেসর ড. আজিজুর রহমান, অধ্যক্ষ মোঃ আবু বকর চৌধুরী, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মোঃ কাওছার আলী শেখ, অধ্যক্ষ মোঃ সিদ্দিকুর রহমান শামীম, অধ্যক্ষ আকমল হোসেন, অধ্যক্ষ রনজিৎ কুমার দে, অধ্যক্ষ ময়েজ উদ্দিন, অধ্যক্ষ রুহুল আমিন, বেগম নুরুন্নাহার, অধ্যাপক মিজানুর রহমান মজুমদার, মনি হালদার, হেনা রাণী রায়, মোঃ ইকবাল হোসেন, মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন, আবু জামিল মোঃ সেলিম প্রমুখ শিক্ষক নেতৃবৃন্দ।
আগামী ৩০ জুলাই এর মধ্যে দাবী পূরণ না হলে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আগামী ৩১শে জুলাই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মবিরতি পালন করা হবে। এছাড়া ১লা থেকে ২০শে আগস্ট পর্যন্ত শিক্ষা জাতীয়করণের দাবীর স্বপক্ষে সারা দেশের বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারি ও অভিভাবকদের স্বাক্ষর সংগ্রহ এবং ১০ই সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী বরাবর শিক্ষক ও অভিভাবকদের স্বাক্ষর সংযুক্ত স্মারকলিপি প্রদান করা হবে জানান শিক্ষক নেতৃবৃন্দ।
এরপরেও যদি শিক্ষক-কর্মচারীদের ন্যায্য দাবী মানা না হয়, তবে সারাদেশের হতাশ ও বিক্ষুব্ধ শিক্ষক-কর্মচারিবৃন্দ অবিরাম ধর্মঘট ও আমরণ অনশনে যেতে বাধ্য হবে বলে হুশিয়ারি দেন শিক্ষক নেতারা।