জাল সনদের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত জামালপুরের বিয়ারা পলাশ তলা উচ্চ বিদ্যালয়ের সেই ভুয়া কম্পিউটার শিক্ষক জয়নাল আবেদিন এমপিওতে নাম অন্তর্ভুক্তির জোড় চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা যায়, ভুয়া শিক্ষক জয়নাল আবেদিনের সনদ জালিয়াতির বিষয়ে সর্বশেষ দৈনিক শিক্ষাডটকমে ‘ভালোই আছেন জামালপুরের সেই ভুয়া শিক্ষক’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর পরই ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ময়মনসিংহ অঞ্চলের উপপরিচালক অভিযোগের ভিত্তিতে আবারও তদন্তের জন্য জেলা শিক্ষা অফিসে চিঠি পাঠায়।
তবে অভিযোগ আছে তদন্ত কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে জয়নাল আবেদিন তার পক্ষে তদন্ত প্রতিবেদন পাঠান। আর এ তদন্ত প্রতিবেদন দেখিয়ে ২০১৭ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসের এমপিওতে জয়নাল আবেদিন তার নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন।
এর আগে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, বিয়ারা পলাশতলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ ও স্কুলের সভাপতি মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নিয়োগ পরীক্ষায় জয়নাল আবেদিনকে প্রথম দেখিয়ে চাকরিতে যোগদান করান।
এই নিয়োগের পর প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী রোকসান খাতুন জয়নাল আবেদীনের বিএসসি সনদটি জাল বলে অভিযোগ এনে তার নিয়োগ বাতিলের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন জয়নাল আবেদিন যে সনদ ও আইডি নম্বর দিয়ে চাকরিতে যোগদান করেছেন তা এশিয়ান ইউনির্ভাসিটি থেকে পাস করা শারমিনা নাসরিনের সনদ ও আইডি নম্বর।
অভিযোগ আমলে নিয়ে শিক্ষা অফিস একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত কমিটি এই অভিযোগটি সত্য বলে প্রতিবেদন জমা দেন।
এই খবর দেশের একমাত্র শিক্ষা বিষয়ক অনলাইন পত্রিকা দৈনিক শিক্ষা ডটকমে প্রকাশিত হলে তারা বিপাকে পড়ে যায়। এরপর তারা মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে আগের আইডি পরিবর্তন করে নতুন করে এশিয়ান ইউনির্ভাসিটি থেকে আবার একটি ভুয়া সনদ জোগার করেছেন। আবার সেই ভুয়া সনদে প্রধান শিক্ষক সত্যায়িত করে উপজেলা শিক্ষা অফিসে জমাও দেন।
আবার অন্যদিকে জানা যায়, মাউশির আঞ্চলিক অফিস থেকে এশিয়ান ইউনিভার্সিটির কাছে জয়নাল আবেদিনের সার্টিফিকেটের ভেরিফিকেশন রিপোর্ট চেয়ে তাদেরকে চিঠি পাঠায়। তবে ইউনিভার্সির্টি কর্তৃপক্ষ এই চিঠির কোন উত্তর না পাঠালে আবার প্রতারণার ফাঁদ পাতে প্রতারক জয়নাল আবেদিন।
গোপন সূত্রে জানা যায়, নিজেই ইউনিভার্সিটির পক্ষ হয়ে ভুয়া ভেরিফিকেশন রিপোর্ট তৈরি করে তা জেলা শিক্ষা অফিসের পিয়নের মাধ্যমে জমা দিয়ে দেয়।
প্রতিদ্বন্দ্বি পার্থী রোকসানা জেলা প্রশাসক বরাবর ভুয়া সনদধারীর নিয়োগ বাতিলের দাবিতে আবারো লিখিত আবেদন করেন।
জেলা প্রশাসক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাসেল সাবরিনকে বিষয়টি তদন্তের দায়িত্ব দেন। এরপর ২০১৬ খ্রিস্টাব্দের ৪ এপ্রিল বিদ্যালয়ের সভাপতি, প্রধান শিক্ষক ও ভুয়া সনদধারী জয়নাল আবেদীনকে সনদের সত্যতার পক্ষে সকল কাগজ পত্র নিয়ে স্বশরীরে হাজির থাকার নির্দেশ দেন জেলা প্রশাসক অফিস। কিন্তু সভাপতি, প্রধান শিক্ষক ও জয়নাল আবেদীন কাগজ পত্র ছাড়া দেখা করে বলেন, আমাদের কাছে কোন কাগজ নেই।’