পূর্বের নিয়ম অনুযায়ী ভর্তি পরীক্ষার দাবিতে মানববন্ধন করেছে মেডিকেল ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী। সম্প্রতি ভর্তিতে অংশ নেয়ার ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন মোট জিপিএ-৯ এবং ভর্তি পরীক্ষা ৩০০ নম্বরে নেয়ার নীতিগত সিদ্বান্ত নিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে আগের মতো মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের শর্তে সর্বনিম্ন জিপিএ-৮ এবং ভর্তি পরীক্ষা ২০০ নম্বরে নেয়ার দাবিতে মানবন্ধন করেছে মেডিকেল ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা।
বুধবার সকালে অনুষ্ঠিত মানবন্ধনে অংশ নেয়া ভর্তিচ্ছু তৌফিকুর রহমান তুষার বলেন, জিপিএ বাড়ানোর ফলে অনেক শিক্ষার্থী আবেদনই করতে পারবেন না। দেখা গেছে, অনেকের স্বপ্নই, সে ডাক্তার হবে। জিপিএ বাড়ানোর কারণে তারা শুরুতেই ঝড়ে পড়বে। আমাদের দাবি- জিপিএ’র ভিত্তিতে নয়, মেধার ভিত্তিতে ভর্তি হওয়ার সুযোগ চাই। জিপিএ-৮ ই বহাল চাই।
৩০০ নম্বরের মধ্যে এসএসসি এবং এইচএসসি’র জিপিএ থেকে ২০০, বাকি ১০০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে তুষার বলেন, ৩০০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষার মধ্যেও জিপিএ’কেই প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। অথচ এ জিপিএ কিভাবে অর্জিত হয়েছে তা সবার জানা। আমরা চাই সরকার ভর্তি পরীক্ষার নম্বর বাড়িয়ে দিক, জিপিএ নয়। নম্বর বাড়ানো হলে মেধা-যোগ্যতার প্রতিযোগিতা হবে।
ভর্তিচ্ছুদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে নির্ধারিত এসএসসি ও এইচএসসি’র জিপিএ’র ২০০ নম্বরের মধ্যে, এসএসসিতে প্রাপ্ত জিপিএ’কে ১৫ দিয়ে গুণ করতে হবে। যেমন-কেউ যদি জিপিএ-৫ পায়, ভর্তি পরীক্ষায় জিপিএ’র নম্বর দাঁড়াবে ৭৫। এইচএসসিতে প্রাপ্ত জিপিএ’কে গুণ করতে হবে ২৫ দিয়ে, যেমন-কেউ যদি জিপিএ-৫ পায়, ভর্তি পরীক্ষায় তার নম্বর দাঁড়াবে ১২৫। এ হলো- এসএসসি, এইচএসসি মিলে ২০০ নম্বর।
ভর্তিচ্ছুদের দাবি এখানেও জিপিএ’কেই প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। আহমেদ সালসাবিল নামে এক ভর্তিচ্ছু বলেন, আমি এসএসসি’তে জিপিএ-৫ পেয়েছি, এইচএসসিতে জিপিএ-৪। বর্তমান নিয়মানুযায়ী আমি পরীক্ষা দিতে পারেবা। কিন্তু পরীক্ষা দেয়ার আগেই যারা ডাবল প্লাস পাওয়া, তাদের থেকে ২৫ নম্বর পিছিয়ে থেকে পরীক্ষার হলে বসছি। যেখানে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা মানে .২৫ ও ভাগ্য গড়ে দিতে পারে।
এর ফলে বৈষম্য আরো বাড়বে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঢাকা বোর্ডে প্রায় ২২ হাজার এ প্লাস পাইছে। বরিশাল বোর্ডে সব গ্রুপ মিলিয়ে ৭০০’র মতো। এক্ষেত্রে ও গ্রাম-শহর, ঢাকার সঙ্গে অন্য বোর্ডেগুলোর বিশাল একটি বৈষম্য তৈরি হবে।
গতবছর ২০০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভর্তিচ্ছুরা চাচ্ছে এবারও গতবারের মতো পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হোক। ২০০ নম্বরের মধ্যে ১০০ ভর্তি পরীক্ষার, বাকি ১০০ এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার জিপিএ। সে সময় এসএসসি’র জিপিএ’কে ৮দিয়ে গুণ করা হতো। কেউ জিপিএ-৫ পেলে ভর্তি পরীক্ষায় তার নম্বর দাঁড়াতো ৪০। এইচএসসিতে জিপিএ’কে ১২ দিয়ে গুণ করা হতো। কেউ জিপিএ-৪ পেলে তার ভর্তি পরীক্ষায় নম্বর হতো ৪৮। অর্থাৎ ডাবল প্লাস পাওয়া ভর্তিচ্ছু থেকে জিপিএ ৯ পাওয়া শিক্ষার্থী পিছিয়ে থাকতো ১২ নম্বরে। বর্তমান ভর্তি পদ্ধতি কার্যকর হলে পরীক্ষার আগেই জিপিএ-৯ পাওয়া শিক্ষার্থীকে ২৫ নম্বরে পিছিয়ে থাকতে হবে।
এসব কারণে ভর্তিচ্ছুদের দাবি জিপিএ’র বিচারে নয় মেধার বিচারে মেডিকেলে ভর্তি হওয়ার সুযোগ দেয়া হোক।