শিক্ষার্থীদের মাসের বেতন বাড়ানোর (টিউশন ফি) প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন রাজধানীর উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা। রোববার রাজধানীর কাকরাইলে প্রতিষ্ঠানটির মূল ফটকের সামনের রাস্তায় তাঁরা এই কর্মসূচি পালন করেন। এতে ওই এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়।
অভিভাবকেরা অভিযোগ করেছেন, ভর্তি ও পুনর্ভর্তির সময় তাঁরা বেতন বই নিতে এসে দেখেন যে প্রায় সব ক্লাসের শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতন বাড়ানো হয়েছে, যা প্রায় দ্বিগুণ। বেতন কমানোর জন্য ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কাছে একটি স্মারকলিপিও দিয়েছেন তাঁরা। অভিভাবকেরা বলছেন, বেতন না কমালে তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
এ বিষয়ে উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবুল হোসাইন গতকাল তাঁর দপ্তরে সাংবাদিকদের বলেন, নতুন পে-স্কেলকে মোকাবিলার জন্য তাঁরা এ বেতন বৃদ্ধি করেছেন। এটা ছাড়া তাঁদের আর কোনো উপায় ছিল না। তাঁর দাবি দ্বিগুণ নয়, বেতন ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। ইংরেজি মাধ্যমে একটু বেশি বাড়ানো হয়েছে। তারপরও বেতন কীভাবে কমানো যায়, সে জন্য প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা কমিটির সভাপতি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেননের সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করবেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বেতন বাড়ানোর বিষয়ে অভিভাবকদের সঙ্গে আলোচনা হয়নি। তবে অস্থায়ী (অ্যাডহক) কমিটিতে থাকা অভিভাবক প্রতিনিধির সম্মতিতেই বেতন বাড়ানো হয়েছে। তিনি কোনো প্রতিবাদ করেননি।
প্রতিষ্ঠানটিতে বর্তমানে শিক্ষক ও কর্মকর্তা আছেন ৪১৩ জন। এর মধ্যে শিক্ষক আছেন প্রায় ৩৫০ জন। এখানে শিক্ষার্থীসংখ্যা নয় হাজার ৩০০।
গতকাল দুপুরে স্কুলের ফটকের সামনে তুহিন আলম নামের এক অভিভাবক বলেন, তাঁর সন্তান এখানে চতুর্থ শ্রেণিতে ইংরেজি ভার্সনে পড়ে। গত বছর তাঁর সন্তানের মাসিক বেতন ছিল ১ হাজার ৩০০ টাকা। এ বছর তা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ৫৫০ টাকা।
বাংলা মাধ্যমে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, তাঁর সন্তানের গতবার মাসিক বেতন ছিল ৬৫০ টাকা। এ বছর তা বাড়িয়ে এক হাজার টাকা করা হয়েছে।
ইংরেজি মাধ্যমে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, গেলবার তাঁর সন্তানের মাসে বেতন ছিল ১ হাজার ৯৮০ টাকা। এবার বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ৯০০ টাকা।
এ সময় অন্য ক্লাসের আরও কয়েকজন শিক্ষার্থীর অভিভাবকও বেতন বাড়ানো নিয়ে একই ধরনের অভিযোগ করেন। সেখানে অভিভাবকদের ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়। অভিভাবকদের এ আন্দোলনের কারণে কাকরাইল এলাকায় যানবাহন চলাচল ব্যাহত হয়।