সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজে সাধারণ সরকারি কলেজ শিক্ষকদের অধ্যক্ষ পদে পদায়ন অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায় আপীল বিভাগও বহাল রেখেছেন। প্রধান বিচারপতি এম এ ওয়াহাব মিয়ার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পাঁচজন বিচারপতির ফুলবেঞ্চে গতকাল ১১ জানুয়ারি শুনানী শেষে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন।
সরকারি টিটিসিসমূহ বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান হলেও তা বিবেচনায় না রেখে ঢালাওভাবে সাধারণ কলেজের শিক্ষকদের পদায়নের ফলে শিক্ষার মান দিন দিন অবনতি এবং টিটিসিতে পিএসসির মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ ও হতাশা দেখা দেয়ার প্রেক্ষিতে রিট দায়ের করা হয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিসিএস নিয়োগ বিধিমালা-১৯৮১ অনুসরণ না করে সাধারণ কলেজের বিএড/এমএড ডিগ্রিবিহীন শিক্ষকদের সরকারি টিটিসিতে অধ্যক্ষ পদে পদায়ন করে আসছিলো। টিচার্স ট্রেনিং কলেজের উপযুক্ত শিক্ষকবৃন্দের ন্যায্য অধিকারকে উপেক্ষা করে পদায়ন ও পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত করায় সংক্ষুব্ধ হয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন।
সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজের পক্ষে রিটকারিদের অন্যতম প্রফেসর ড. শেখ মো. রেজাউল করিম দৈনিকশিক্ষাডটকমকে বলেন, হাইকোর্টের বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি এ কে এম শহিদুল হক গত ১৪ই ডিসেম্বর এক আদেশে রাজশাহী, খুলনা ও চট্টগ্রাম টিচার্স ট্রেনিং কলেজগুলোতে সাধারণ কলেজের তিনজন অধ্যাপকের অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন স্থগিত করেন এবং কেন এ পদায়ন অবৈধ হবে না এই মর্মে সরকারের প্রতি চার সপ্তাহের রুল জারি করেন। এরপর পহেলা জানুয়ারি আপীল বিভাগের চেম্বার জজ মাননীয় বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন এর আদালতে সরকার ও পদায়নপ্রাপ্ত অধ্যক্ষগণ ড. ওলীউল আলম, শেখ হারুনর রশীদ ও স্বপন চৌধুরী হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেন।
রেজাউল করিম দৈনিকশিক্ষাডটকমকে বলেন, চেম্বার জজের আদালতে পর পর কয়েকদিন শুনানীর পর ৯ই জানুয়ারি তারিখে হাইকোর্টের আদেশের ওপর স্থিতাবস্থা আদেশ দিয়ে আপিল বিভাগের ফুল বেঞ্চে শুনানীর জন্য পাঠান। প্রধান বিচারপতি এম এ ওয়াহাব মিয়ার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতি ১১ই জানুয়ারি শুনানী শেষে টিচার্স ট্রেনিং কলেজের আবেদনকারীদের পক্ষে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন।
অপর এক রিটের প্রেক্ষিতে, হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করে উক্ত তিনটি কলেজের অধ্যক্ষ পদে যোগদান করায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হয়েছে।
বিচারপতি মোঃ আশফাকুল ইসলাম এবং বিচারপতি কে. এম কামরুল কাদের-এর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ খুলনা টিটিসি ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারী করেছেন। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে তাদেরকে হাইকোর্টে হাজির হতে বলা হয়েছে।