ডাকসু নির্বাচনের জন্য আর কত অপেক্ষা? - দৈনিকশিক্ষা

ডাকসু নির্বাচনের জন্য আর কত অপেক্ষা?

দৈনিক শিক্ষা ডেস্ক |

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের জন্য আর কত অপেক্ষা করতে হবে? এই নির্বাচন অনুষ্ঠান না করার যুক্তিই-বা কী? শুধু ডাকসু নয়, সারা দেশেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন বন্ধ রয়েছে। এখন যাঁরা ছাত্রছাত্রী, তাঁরা ভবিষ্যতে দেশ পরিচালনা করবেন, আমাদের নেতৃত্ব দেবেন। তাঁদের ছাত্র সংসদ নির্বাচন বা এই গণতান্ত্রিক চর্চা থেকে দূরে রেখে আমরা আসলে কী অর্জন করতে চাই?

এটা সত্যিই বিস্ময়কর যে পাকিস্তানের অগণতান্ত্রিক শাসনের সময়ে, জিয়াউর রহমান ও এরশাদের মতো সামরিক স্বৈরশাসকদের আমলে ডাকসু নির্বাচন হয়েছে আর নব্বই-পরবর্তী ‘গণতন্ত্র’ এই নির্বাচনকে কার্যত গিলে ফেলেছে। গত ২৭ বছরে কোনো সরকার ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নেয়নি। এমনকি সামনে যে হবে, এমন কোনো ইঙ্গিতও নেই কোনো তরফে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক সমিতি নির্বাচন, কর্মকর্তা সমিতির নির্বাচন বা কর্মচারী সংগঠনের নির্বাচন—সবই হয়। শুধু ডাকসু বা ছাত্র সংসদের নির্বাচন হয় না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার বিভিন্ন ক্ষেত্রে ছাত্র সংসদের প্রতিনিধিত্বের বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৩ সালের অধ্যাদেশে সুনির্দিষ্টভাবে বলা আছে। অথচ দিনের পর দিন তা উপেক্ষিত হয়ে আসছে। এ নিয়ে কোনো কথা বলতে গেলে ছাত্রছাত্রীরা কী পরিস্থিতির মধ্যে পড়েন, তা সম্প্রতি টের পাওয়া গেল সিনেটে উপাচার্য নির্বাচনের জন্য প্যানেল নির্বাচনের দিন। সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি রাখার দাবি জানিয়ে ছাত্রছাত্রীরা জড়ো হলে শিক্ষকেরা তাতে দৃষ্টিকটুভাবে বাধা দেন।

আমরা মনে করতে পারি যে এ বছরের মার্চ মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে রাষ্ট্রপতি ডাকসু তথা ছাত্র সংসদ নির্বাচনের গুরুত্বের কথা তুলে ধরেছিলেন। তিনি বলেছেন, ‘ডাকসু নির্বাচন ইজ আ মাস্ট। নির্বাচন না হলে ভবিষ্যৎ নেতৃত্বে শূন্যতার সৃষ্টি হবে।’ তিনি আরও বলেছেন, গণতন্ত্রের ভিতকে মজবুত করতে হলে দেশে সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে তুলতে হবে, ছাত্ররাজনীতির মাধ্যমেই সেই নেতৃত্ব তৈরি হবে। রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের সূত্র ধরে বলা যায়, ছাত্র সংসদ নির্বাচন বন্ধ করে রাখার অর্থ দাঁড়াচ্ছে দেশকে পর্যায়ক্রমে নেতৃত্বশূন্য করার পথে এগিয়ে নেওয়া।

ডাকসুসহ সব ধরনের ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে নব্বই-পরবর্তী সরকারগুলোর এই অবস্থানের কারণটি স্পষ্ট। যখন যে দলই ক্ষমতায় থেকেছে, তারা কখনো ভরসা পায়নি যে বিশেষ করে ডাকসু নির্বাচনে তাদের সমর্থক ছাত্রসংগঠন জিতবে। অথচ সব সরকারের আমলেই সরকারি দলের ছাত্রসংগঠনগুলো দাপটের সঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে হাজির থাকে। নিজেরাই কোন্দল, মারামারি ও খুনোখুনিতে জড়িয়ে পড়ে।

ডাকসু নির্বাচন নিয়ে ছাত্ররা আবার সোচ্চার হতে শুরু করেছেন। এই নির্বাচন নিয়ে আর টালবাহানা নয়। আমরা আশা করব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে এই নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবে। একই সঙ্গে গণতন্ত্রচর্চা ও নেতৃত্ব বিকাশের স্বার্থে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদ নির্বাচন আয়োজনে সরকার এগিয়ে আসবে। ডাকসু দিয়ে এর শুরুটা হোক।

সৌজন্যে: প্রথম আলো

প্রাথমিকে ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ জুনের মধ্যে: প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha প্রাথমিকে ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ জুনের মধ্যে: প্রতিমন্ত্রী পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা দাবি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের - dainik shiksha পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা দাবি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের ঝরে পড়াদের ক্লাসে ফেরাতে কাজ করছে সরকার - dainik shiksha ঝরে পড়াদের ক্লাসে ফেরাতে কাজ করছে সরকার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি, ভাইবোন গ্রেফতার - dainik shiksha প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি, ভাইবোন গ্রেফতার ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি - dainik shiksha ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন প্রায় শূন্যের কোটায় - dainik shiksha শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন প্রায় শূন্যের কোটায় ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে - dainik shiksha ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0032849311828613