তাইলে গুলি কইরা মাইরা দেন আমারে: তনুর বাবা - Dainikshiksha

তাইলে গুলি কইরা মাইরা দেন আমারে: তনুর বাবা

দৈনিক শিক্ষা ডেস্ক |

pic-2

কুমিল্লার কলেজ ছাত্রী সোহাগী জাহান তনুকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনা নিয়ে দেশে বিক্ষোভ প্রতিবাদ চলছে। বিবিসি বাংলার প্রবাহ টিভি অনুষ্ঠানের জন্যে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তনুর বাবা ইয়ার হোসেন বলেন, ‘মেয়েটা ক্যান্টনমেন্টের ভেতর মারা গেছে, এটা বলতে পারবো না স্যার, তাইলে গুলি কইরা মাইরা ফালান। যদি না বলতে পারি তাইলে গুলি কইরা মাইরা দেন আমারে।’

গত সপ্তাহে কুমিল্লা সেনানিবাস এলাকায় তনুর মৃতদেহ উদ্ধারের পর দেশটির মূলধারার গণমাধ্যমে সংবাদ না এলেও অনলাইনে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।

তনু হত্যাকাণ্ডে শুরুর দিকে ফেসবুকে যারা প্রতিবাদ করেছেন, তাদের মধ্যে অন্যতম নাট্য ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দীন ইউসুফ। তিনি বলেন, ‘কবর দিয়ে আবার সেই লাশ আপনারা তুলে ফেলছেন তাহলে আপনাদের অনেক কাজ না করেই আপনারা তাড়াহুড়া করেছেন। কেন? জনগণের মনে তো এই প্রশ্নগুলো আসবেই।’

তিনি বলেন, ধীরগতি আর সিদ্ধান্তহীনতা সরকার এবং সেনাবাহিনী দুই তরফ থেকেই হয়েছে।

তনুর ব্যাপারে সেনানিবাস থেকে নাসির উদ্দীন ইউসুফকে কথা বলতে নিষেধ করা হয়েছে এমন শিরোনামেও খবর প্রকাশ করে কয়েকটি অনলাইন পত্রিকা।

যদিও এটি সত্য নয় বলে জানান ইউসুফ। তিনি বলেন, ‘অনেক জায়গায় ছড়িয়েছে যে আমার ওপরে চাপ আছে। আমি কোনো চাপে নেই। আমি খুব পরিষ্কার, আমি কোনো চাপে নেই। সেনসিটিভ জায়গাটা হচ্ছে- আমাদের বুঝতে হবে এটা ক্যান্টনমেন্টের এরিয়ার মধ্যে ঘটেছে।’

এদিকে তনু হত্যার পরদিন থেকেই বিক্ষোভ করছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের শিক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, গণজাগরণ মঞ্চ, বাম ছাত্র সংগঠনসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরাও প্রতিবাদ বিক্ষোভ করে যাচ্ছে।

বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলছেন, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তনু হত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত তাদের লাগাতার আন্দোলন চলবে।

ভিক্টোরিয়া কলেজ ক্যাম্পাসে আন্দোলনরত একজন ছাত্রী বলেন, ‘এই জন্যই আমাদের এ আন্দোলন যে, একটা প্রটেক্ট এরিয়ার মধ্যে একটা মেয়ে কিভাবে ধর্ষিত হয়, তাকে তারপরে খুন করা হয়?’

অপর এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে আবার ওর ময়না তদন্ত হবে। কেন? প্রথম তাইলে যে ময়না তদন্ত হয়েছে সেটার কী হয়েছে?’

কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার শাহ আবিদ হোসেন বলেন, তারা প্রাথমিকভাবে অনুসিদ্ধান্তে এসেছেন তনুকে হত্যা করা হয়েছে এবং সে ধর্ষিতও হতে পারে।

তিনি বলেন, ‘সেনা কর্তৃপক্ষ যে তথ্যগুলো আমাদেরকে দিবে, তার ওপর নির্ভর করেই আমাদেরকে কিন্তু কাজ করতে হবে। কারণ আমার কিন্তু ওখানে গিয়ে ইন্ডিসক্রিমিনেটলি… আমার ওই একসেসটা নাই যে আমি জিজ্ঞাসা করব। সেনানিবাসের মধ্যে কিন্তু বেশকিছু বিধিবদ্ধ বিষয় প্রতিপালন করেই কাজ করতে হয়। এটাও তার ব্যতিক্রম নয়।’

কোনো কিছু আড়াল করারও কোনো ইচ্ছা পুলিশের নেই বলে দাবি করে কুমিল্লার পুলিশ সুপার।

তনুর বাবা ইয়ার হোসেন ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী।

ঘটনার নবম দিনে তনুর বাবার সাক্ষাৎকার নিতে চাইলে ইয়ার হোসেন জানান, অনুমতি ছাড়া তাদেরকে সেনানিবাস থেকে বের হতে দেয়া হচ্ছে না।

পরে ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের সিইও’র সঙ্গে যোগাযোগ করলে কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে তাকে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড অফিসে নিয়ে আসা হয়।

সেখানে তনুর বাবা কথা বলেন বিবিসির সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমার মেয়েরেতো আমি তুলছি, কিভাবে তুলছি আমি দেখছি। তার কোনো গলায় কাটা ছিল না। মুখটা থেতলানো আছিলো, কানডি দিয়া রক্ত আইছে, মাথার এই জাগাডা (পেছনে) উঁচা আছিলো, উঁচা উঁচা একটু ফুলা এই…’

তনুকে কোথায় পাওয়া পাওয়া গেছে এ নিয়ে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর বিবৃতি দিয়ে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট সংলগ্ন সীমানা প্রাচীর নেই এরকম এলাকার বিবরণ দেয়।

তবে ইয়ার হোসেন একটি বিষয় জোর দিয়ে বলে আসছেন যে, মেয়েকে তিনি সেনানিবাস এলাকা থেকেই উদ্ধার করেছেন।

তিনি বলেন, ‘এহনো কই- তহনো কই, আমিতো কারও নাম বলতেছি না। হ্যাঁ মেয়েডা এখানে মারা গেছে, এডাতো বলতে হবে আমার। মেয়েডা ক্যান্টনমেন্টের ভেতর মারা গেছে, এটা বলতে পারবো না স্যার, তাইলে গুলি কইরা মাইরা ফালান। যদি না বলতে পারি তাইলে গুলি কইরা মাইরা দেন আমারে।’

তনু হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে কুমিল্লা সেনা কর্তৃপক্ষের সাক্ষাৎকার চেয়ে যোগাযোগ করা হলে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর থেকে সাক্ষাৎকার দেয়া আপাতত সম্ভব নয় বলে বিবিসিকে জানানো হয়।

ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি - dainik shiksha ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে - dainik shiksha ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে মাকে ভরণপোষণ না দেয়ায় শিক্ষক গ্রেফতার - dainik shiksha মাকে ভরণপোষণ না দেয়ায় শিক্ষক গ্রেফতার ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0035490989685059