এক ছাত্রের সঙ্গে আরেক ছাত্রের গায়ে ধাক্কা লাগার মতো তুচ্ছ বিষয় নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা ডিগ্রি কলেজে। এতে দুই দল শিক্ষার্থীর মধ্যে ঘণ্টাব্যাপী পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলে। এতে কলেজের অধ্যক্ষ ও ছয়জন আহত হন। এ ঘটনায় চার দিন কলেজের পাঠদান স্থগিত রাখা হয়েছে।
কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল সকাল সাড়ে ১০টায় কলেজে এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে অপর এক শিক্ষার্থীর গায়ে ধাক্কা লাগে। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। বিষয়টি তখন সমাধান হয়ে গেলেও এর রেশ ধরে কিছুক্ষণ পর দুই দল শিক্ষার্থী সংঘর্ষে জড়ায়। পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। দুই পক্ষকে শান্ত করতে গিয়ে আহত হন কলেজের অধ্যক্ষ মন্টু বিকাশ চাকমা। এ সময় আতঙ্কিত সাধারণ শিক্ষার্থীরা কলেজের বিভিন্ন কক্ষে অবস্থান নেয়। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিয়ে কলেজ ক্যাম্পাস থেকে বের করে আনা হয়। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে কলেজ কর্তৃপক্ষ আগামীকাল মঙ্গলবার সর্বদলীয় বৈঠক আহ্বান করেছেন।
দীঘিনালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপসহকারী চিকিৎসা কর্মকর্তা মো. রাশেদ বলেন, কলেজে সংঘর্ষের পর ছয়জন ছাত্রকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়। এরা হলেন জেনিথ চাকমা (২০), বিধান চাকমা (১৯), জাহেদুল ইসলাম(২৪), সাইফুল ইসলাম (২০) সাইদুল ইসলাম (২০) ও মো. ইব্রাহিম(১৭)। এঁদের মধ্যে জাহেদুল ইসলাম ও সাইফুল ইসলাম হাসপাতালে ভর্তি আছে। তবে তাঁদের অবস্থা গুরুতর নয়। আহত অন্যদের চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
দীঘিনালা ডিগ্রি কলেজের উপাধ্যক্ষ তরুণ কান্তি চাকমা বলেন, দুই ছাত্রের মধ্যে কথা-কাটাকাটি থেকে এই ঘটনার সূত্রপাত। শিক্ষার্থীদের শান্ত করতে গিয়ে অধ্যক্ষ নিজেই আহত হয়েছেন। এরপরও উত্তেজনা প্রশমনে সব ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। ১০ আগস্ট পর্যন্ত কলেজের পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে ডিগ্রি পরীক্ষা ঠিক সময়ে অনুষ্ঠিত হবে। শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ৮ আগস্ট উপজেলার সব রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে সভার আহ্বান করা হয়েছে।
দীঘিনালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সামসুদ্দীন ভূঁইয়া বলেন, ঘটনার পরপরই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সমস্যা সমাধানে কলেজ কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিচ্ছে। কলেজ এলাকায় পুলিশ টহল দিচ্ছে।
এ ব্যাপারে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের উপজেলা শাখার সভাপতি রাজ্যময় চাকমা বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এমন সংঘর্ষের ঘটনা দুঃখজনক। ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
ছাত্রলীগের দীঘিনালা কলেজ শাখার সভাপতি রবিউল ইসলাম দাবি করেন, এই ঘটনায় কলেজে ছাত্রলীগের ছয়জন কর্মী আহত হয়েছেন। তিনি দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।