জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে একটি অখ্যাত কলেজ থেকে তৃতীয় বিভাগে এল এল বি পাস করেছেন শিক্ষা ভবনের আইন কর্মকর্তা মো: আল আমিন সরকার! ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দের ওই পরীক্ষা ২০০০ খ্রিস্টাব্দে অনুষ্ঠিত ও একই বছর ফল প্রকাশ হয়। শিক্ষা বিষয়ক দেশের একমাত্র অনলাইন জাতীয় পত্রিকা দৈনিকশিক্ষাডটকমের অনুসন্ধানে এসব তথ্য জানা যায়।
কুমিল্লার হোমনায় জন্মানো আল আমিন সরকার মূলত বি সি এস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের সহকারী অধ্যাপক। বিএনপি-জামাত জমানায় ২০০২ খ্রিস্টাব্দে তিনি অর্থনীতির প্রভাষক হিসেবে শিক্ষা ক্যাডারে যোগ দিয়ে রায়পুর সরকারি কলেজে শিক্ষকতা শুরু করেন।
নাম প্রকাশে অনিচছুক শিক্ষা অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা দৈনিকশিক্ষাকে বলেন, সাড়ে আট হাজারের বেশি মামলায় জর্জরিত মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর ক্রমাগত মামলায় হেরেই চলছে। আইনে দক্ষ ও অভিজ্ঞ হিসেবে আল আমিন সরকারের মেধা ও মননকে কাজে লাগাতে সাড়ে তিন বছর আগে আইন কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়!
অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, টাকার বিনিময়ে আইনী মতামত দেয়ায় বিস্তর অভিযোগ আইন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। রাজধানীর গুলশান, বনানী বিদ্যা নিকেতন, গুলশান মডেল স্কুল এন্ড কলেজ ও মানিকগঞ্জের দরগ্রামসহ কয়েকডজন প্রতিষ্ঠানের পক্ষে টাকার বিনিময়ে আইনি মতামত দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরকারের পক্ষে মামলায় লড়াই করার পরিবর্তে প্রতিপক্ষকে সুযোগ দেয়ার অভিযোগ রয়েছে।
আইন পড়াশোনায় তৃতীয় বিভাগপ্রাপ্ত একজন কর্মকর্তা কিভাবে শিক্ষার মতো হাজার হাজার জটিল মামলা লড়বেন? কোন বিবেচনায় তাকে নিয়োগ দেয়া হলো? এসব প্রশ্নের জবাবে অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের চলতি দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক ড. এস এম ওয়াহিদুজ্জামান আজ বৃহস্পতিবার ভোরে দৈনিকশিক্ষাকে বলেন, “আল আমিনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে কয়েকবছর আগে। আল আমিন আইন ভালো বোঝেন।”
১০ পার্সেন্ট কোটায় বি সি এস শিক্ষা ক্যাডারে নিযোগ পাওয়া ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, “আইন শাখায় নিয়োগের সময় দেখা হয়েছে আইন ভালো বোঝে কী-না? আল আমিনের সেই যোগ্যতা রয়েছে। তাই তাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। মূলত আল আমিন একজন শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা। শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার সব যোগ্যতা তার রয়েছে।”
ক্রমাগত প্রশ্নফাঁস আর ফলজালিয়াতির অভিযোগ ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের পদ থেকে মুন্সীগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজে বদলি করা হয় ওয়াহিদুজ্জামানকে। এক বছরের ব্যবধানে ২০১৪ খ্রিস্টাব্দে মুন্সীগঞ্জ সরকারি কলেজ থেকে শিক্ষা অধিদেপ্তরের পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) পদে ও চলতি বছরের জুলাই মাসে মহাপরিচালকের চলতি দায়িত্ব পেয়েছেন ওয়াহিদুজ্জামান।