দুর্যোগ মোকাবিলা : শিক্ষা ক্ষেত্রে হতে পারে নতুন ক্যালেন্ডার - Dainikshiksha

দুর্যোগ মোকাবিলা : শিক্ষা ক্ষেত্রে হতে পারে নতুন ক্যালেন্ডার

চৌধুরী শারমিন শামস্ মনি |

প্রতি বছর বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের বিশেষ করে নদী বিধৌত কয়েক শ স্কুল বন্ধ রাখতে হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মূলত বন্যার কারণে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়ে থাকে। সেই বন্ধের ঘটনা ঘটে বছরের মাঝামাঝি সময়। যখন পড়াশোনার জন্য বিশেষ যত্ন আর বাচ্চাদেরও বিশেষ আগ্রহ সৃষ্টি হয়, তখনই। কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি উঠে বন্ধ হয়। আবার কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দুর্যোগকবলিত মানুষের আশ্রয়স্থল হয়ে ওঠে। ফলে শিক্ষার্থীদের স্কুল যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। আর এতে স্বাভাবিকভাবেই পিছিয়ে পড়ে তারা। এমনিতেই দুর্গম আর প্রান্তিক স্কুলগুলোর শিক্ষার্থীরা নানা কারণেই কিছুটা পিছিয়ে থাকে। তার ওপর এমন দুর্যোগ আর দুর্ভোগের ফলে আরো পেছোতে থাকে তারা। মেধা আর আগ্রহ থাকলেও স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় এগুতে না পারায় তাদের পাঠ্যক্রমও শেষ করা যায় না।

২.

প্রতিবছর বন্যা আসে। স্কুল বন্ধ হয়। ক্লাস বন্ধ হয়। আর অসমাপ্ত কিংবা অর্ধসমাপ্ত জ্ঞান নিয়ে বেড়ে ওঠে আমাদের হাজারও শিশু। বন্যাকালীন এমন সমস্যা নিয়ে হয়তো অনেক কথা হয়। সভা হয়। আসে অনেক প্রস্তাব। কিন্তু বাস্তবে সেই সুপারিশ কতটুকু বাস্তবায়ন হয় তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। সেইসব সুপারিশের অনেক কিছুই আছে প্রশাসনিক। আবার অনেক কিছুই শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবক-ম্যানেজিং কমিটি কেন্দ্রিক। একটু আন্তরিকতা কিংবা স্বাভাবিক কাজের বাইরে একটু চিন্তা করতে পারলে হয়তো কিছুটা সমাধান করা যায় প্রান্তিক অবস্থানে। তবে রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত আর আইনি কিছু বিষয় থাকে যা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেই উদ্যোগ নিতে হবে।

অনেক সুপারিশ আর পরামার্শের ভিড়ে কিছু সুপারিশ চিন্তা করা যেতে পারে। কিংবা বাস্তবায়নে উদ্যোগও নেওয়া যেতে পারে—

১.বন্যা আক্রান্ত অর্থাত্ নদী তীরবর্তী ও চরাঞ্চলের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর একটি তালিকা তৈরি করতে হবে। সেটা হতে হবে বন্যা আসার আগেই।

২.শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর অবকাঠামোগত বর্ণনা এবং সম্পদের বর্ণনা সংবলিত তালিকা তৈরি হওয়া দরকার।

৩. সেইসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের তালিকা এবং অভিভাবকদের মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করতে হবে। যদিও উপবৃত্তির কারণে প্রাইমারি সেকশনের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের এখন মোবাইল নাম্বার তালিকাভুক্ত। কিন্তু অন্যসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেরও অভিভাবকদের তালিকা করা যেতে পারে।

৪. যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি ওঠে সেসব তো বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু আশ্রয়কেন্দ্র হিসাবে ব্যবহূত হওয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বিশেষ পাঠদান করা যেতে পারে। তা সেখানে অবস্থান করা যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেরই শিক্ষার্থী হোক না কেন।

৫.হতে পারে নৌকায় ভ্রাম্যমাণ পাঠ দান।

৬.পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা অত্যন্ত জরুরি। স্বাস্থ্যসম্মত না হলে শিশুরা ক্লাসে গিয়ে অসুস্থ হয়ে যেতে পারে। এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, জনস্বাস্থ্য বিভাগের সহযোগিতা নেওয়া যেতে পারে।

৭. বন্যায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের জন্য নেওয়া যেতে পারে অতিরিক্ত ক্লাস।

৮.পরবর্তী ছুটির দিনগুলোতে হতে পারে বিশেষ ক্লাস।

৯. দৈনন্দিন নিয়মিত ক্লাসের চেয়ে একটা বা দুটো ক্লাসও বেশি নেওয়া যেতে পারে।

১০. ক্লাসের ডিউরেশন (ব্যাপ্তি) কমিয়ে নতুন নতুন ক্লাস করা যেতে পারে।

১১. পাঠ্যক্রম সাজানোয় পরিবর্তন এনে বন্যার আগে কিংবা পরে তা এগিয়ে নেওয়া যেতে পারে।

সর্বোপরি শিক্ষা বিভাগের নির্দেশক্রমে ঐসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হতে পারে পাঠদানের নতুন ক্যালেন্ডার। অর্থাত্  বন্যাপূর্ব, বন্যাকালীন এবং বন্যা পরবর্তী নদী কেন্দ্রিক বা বন্যা আক্রান্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য আলাদা ক্যালেন্ডার তৈরি করা যেতে পারে।

এমন আরো নানা উদ্যোগের মধ্য দিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা আমাদেরই করতে হবে। যেখানে বিশেষ ভূমিকা নিতে হবে শিক্ষক, অভিভাবক, এএসএমসি, শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা আর রাজনৈতিক ও সামাজিক সকল কর্মীকেই।

কুড়িগ্রাম

দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0044021606445312