খণ্ডকালীন শিক্ষক দিয়েই চলছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭০ শিক্ষার্থীর শিক্ষা কার্যক্রম। ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে চালু হয় ফোকলোর স্টাডিজ, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও মার্কেটিং বিভাগ তিনটি। কিন্তু দুই বছরেরও বেশি সময় অতিবাহিত হলেও এখনো এ তিন বিভাগে কোনো শিক্ষক নিয়োগ দিতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
অন্য বিভাগ থেকে ধার করা শিক্ষকে চলছে এ তিন বিভাগের শিক্ষা কার্যক্রম। শিক্ষক স্বল্পতা ও নির্ধারিত বিষয়ের উপর খণ্ডকালীন শিক্ষকের আয়ত্ত কম থাকায় যথাযথ পাঠদান করতে পারছেন না ওইসব শিক্ষকেরা এমন অভিযোগ তিন বিভাগের অধিকাংশ শিক্ষার্থীর।
এ তিন বিভাগের মধ্যে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. সাইদুর রহমানকে ফোকলোর স্টাডিজ, লোক-প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. রাকিবা ইয়াসমিকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের এবং ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. জাকারিয়া রহমানকে মার্কেটিং বিভাগের সভাপতির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তবে দু’বছর পার হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত এ তিন বিভাগের জন্য শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল হাকিম সরকারের সিদ্ধান্তে ইউজিসির অনুমোদন স্বাপেক্ষে নতুন তিনটি বিভাগ খোলা হয়। তবে আড়াই বছর অতিবাহিত হলেও ওই সকল বিভাগের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারি নিয়োগ হয়নি। শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ এবং নিয়োগ বোর্ডের তারিখ ঘোষণা করেও কোনো এক অদৃশ্য কারণে আটকে আছে এই বিভাগগুলোর শিক্ষক নিয়োগ।
তিন বিভাগেই অন্য বিভাগ থেকে ধার করা শিক্ষক দিয়ে চলছে পাঠদান। এতে আর্থিকভাবে ওইসব শিক্ষকেরা লাভবান হলেও শিক্ষার ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ছেন শিক্ষার্থীরা।
তিন বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ধার করা অধিকাংশ শিক্ষকেরা নির্দিষ্ট সিলেবাসের উপর যথেষ্ট অভিজ্ঞ না হওয়ায় ঠিকমত পাঠদান করতে পারছে না। এছাড়াও এসব শিক্ষকদের নিজ বিভাগের ক্লাস পরীক্ষায় নিয়মিত অংশ নিয়েই অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে এসব বিভাগের ক্লাস পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। এতে নিজ বিভাগও এসব বিভাগের দুই পক্ষের ক্লাস পরীক্ষায় অংশ নিতে তাদের যেমন হিমশিম খেতে হয় তেমনি মাঝেমাঝেই ওইসব শিক্ষকের সিডিউল বিপর্যয়ের ফলে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি ও ভোগান্তির সম্মূখিন হতে হয় বলেও অভিযোগ করেন তারা।
এছাড়াও রয়েছে এ তিন বিভাগের ক্লাস রুম সঙ্কট চরমে। মার্কেটিং বিভাগের ক্লাস রুম থাকলেও ফোকলোস স্টাডিজ বিভাগের ক্লাস হয় টিএসসিরি বারান্দায়। আর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ক্লাস হয় লোক প্রশাসন বিভাগের নিকট থেকে ধার নেয়া একটি কক্ষে।
এ বিষয়ে ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক সাইদুর রহমান বলেন, বিভাগটি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য শিক্ষক নিয়োগ অত্যন্ত জরুরি।
এ বিষয়ে মার্কেটিং বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক জাকারিয়া রহমান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে উপাচার্য মহোদয়কে লিখিত ও মৌখিকভাবে শিক্ষক নিয়োগের জন্য বলে আসছি। একই সঙ্গে দুই বিভাগের দায়িত্ব পালন অনেক চাপ হয়ে যায়। এতে শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের সান্নিধ্য না পাওয়ায় এক্সট্রা কারিকুলামের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারছে না।
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক হারুন উর রশিদ আসকারী বলেন, শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। অনতিবিলম্বে এসকল বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে।