দুই বছর এমপিও না দেয়ার শর্তে অতিরিক্ত শ্রেণি শাখায় নিয়োগপ্রাপ্ত মাধ্যমিকের শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির দাবিতে লাগাতার অবস্থান ধর্মঘটের চতুর্থ দিন চলছে আজ। রোববার (১৫ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই অবস্থান ধর্মঘট শুরু করেন নন এমপিও শিক্ষকরা।
অবস্থান ধর্মঘটে বক্তারা বলেন, এভাবে বছরের পর বছর বেতন না পেয়ে শর্তে নিয়োগ প্রাপ্ত সকল শিক্ষক তাঁদের পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। চাকরি আছে, বেতন নেই এই ভাবে আর কত বছর কত মাস। একই দেশে দু’ধরনের নিয়ম কারো কাম্য নয়। এমপিও বঞ্চিত শিক্ষকরা শিক্ষামন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে শিগগিরি এমপিও দেয়ার দাবি জানান।
বক্তারা আরো বলেন, আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই অবস্থান ধর্মঘট চালিয়ে যাবো। জুলাই মাসের মধ্যে যদি আমাদের এই এমপিওভুক্তির দাবি না মানা হয় তাহলে আগামী ২০ আগস্ট কাফনের কাপড় পরে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের গেটে পরিবার পরিজন নিয়ে আমরণ অনশন করবো।
অবস্থান ধর্মঘটে বক্তব্য রাখেন এরশাদুল ইসলাম, আবদুল মোতালিব, বাবু অর্জুন কুমার, নিজামুল হক, খোন্দকার সালাহউদ্দীনসহ অনেকে।এর আগে আরো তিনবার একই দাবিতে অনশন পালন করেছিল এ শিক্ষকরা।
এমপিও বঞ্চিত শিক্ষকদের নেতা আব্দুল মোতালিব বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অতিরিক্ত শ্রেণী শাখা খোলার অনুমোদন দেয়া হয়েছিল। সরকারের দেয়া শর্ত দুই বছর পার হলেও আমাদের এমপিওভুক্ত করা হয়নি। তিনি বলেন, আমরা শিক্ষামন্ত্রী ও মাউশির মহাপরিচালককে বিষয়টি অবহিত করা ছাড়াও তিনবার প্রেস ক্লাবের সামনে অনশন করেছি। এরপরও দাবি বাস্তবায়ন না হওয়ায় আবার আমরা অনশন করছি।
শিক্ষক নেতা এরশাদুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, আমাদের শিক্ষকদের বঞ্চিত করা হয়েছে। একই দেশে দুই ধরণের নিয়ম আমরা মানতে পারি না। এ ছাড়া ২০১১ সালের ১৩ নভেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী আমাদের এমপিও দিতে সরকারেরও কোন বাধা নেই। এরপরও আমাদের অবস্থা হয়েছে যে, চাকুরি আছে কিন্তু বেতন নেই।
গোপালগঞ্জ কাশিয়ানি শাজাইল গোপীমহল উচ্চ বিদ্যালয়ের বাংলার শিক্ষক দেবাশীষ মজুমদার বলেন, বাংলায় অর্নাস, মাস্টার্স ও বিএড করার পর সরকারি চাকরির বয়স থাকা সত্ত্বেও কাকা ভগীরথ মজুমদারের অনুরোধে এলাকার শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করার জন্য ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসে এ স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি নেই। আজও এমপিওভুক্তি না হওয়ায় মাত্র ১৫০০ টাকায় শিক্ষকতা করতে হচ্ছে। এত কম বেতনে মা-বাবা, স্ত্রী-সন্তান নিয়ে অনেক কষ্টে খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছি।