নষ্ট হলো জীবনের দশটি বছর - Dainikshiksha

নষ্ট হলো জীবনের দশটি বছর

নিজস্ব প্রতিবেদক |

Nurse

২০০৬ সালে যারা নার্সিং পাস করেছে, তাদের অর্ধেকের চাকরি হয়েছে। ব্যাচ, মেধা ও জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে তারা চাকরি পেয়েছেন। তাদের চাকরি হয়েছে ২০১৩ সালে। ২০০৬ সালে নার্সিং পাস করে যাদের চাকরি হয়নি, তারাও জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে চাকরির আশায় বসে ছিলেন। নার্সের চাকরিতে ব্যাচ মেধা ও জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়।

কিন্তু সম্প্রতি পরীক্ষার মাধ্যমে নার্স নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। আর এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর ২০০৬ সালে পাস করে যাদের চাকরি হয়নি তারাসহ এ পর্যন্ত যারা পাস করেছেন তারা চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন। তারা ওই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বাতিলের দাবিতে রাস্তায় নেমেছেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গত তিনদিন ধরে অবস্থান ধর্মঘট পালন করছেন।

নার্সরা বলছেন, পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগের কথা সেই ২০০৬ সালে কেন বলা হয়নি। এখন ২০১৬ সালে এসে কেন পরীক্ষার মাধ্যমের নিয়োগের কথা হচ্ছে। তাহলে কেন আমাদের জীবনের ১০টি বছর নষ্ট করা হলো?

২০০৬ সালে পাস করা ফেরদৌসি বলেন, ‘এমনিতেই রাস্তায় আসিনি। আমাদের রাস্তার নামতে বাধ্য করা হয়েছে। যখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে যায়, তখন আর কিছুই করার থাকে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘যদি ২০০৬ সালেই আমরা জানতে পারতাম যে পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ তাহলে আমরা সেইভাবে প্রস্তুতি নিতাম। কেন আমাদের ১০টি বছর নষ্ট করা হলো। তখন চাকরি পেলেও এখন চাকরির বয়স ১০বছর হয়ে যেত। ২০০৬ সালে পাস করাদের অর্ধেক অর্থাৎ ৪ হাজার ১০০ জন জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয় ২০১৩ সালে। বাকি অর্ধেকের মধ্যে আমিও একজন। আমরা তো সেই থেকেই চাকরির আশায় বসে আছি।’

রিনা আক্তার বলেন, ‘নার্সিং পড়েই কী আমরা অপরাধ করেছি? চাকরির আশায় বসে থেকে নষ্ট হলো জীবনের দশটি বছর।’

২০০৮ সালে পাস করা হালিমা আক্তার বলেন, ‘আমরা নার্সিং পড়েছি। অন্য কোনো কাজ আমরা জানি না। আমাকে কী এখন কেউ ব্যাংকে চাকরি দেবে, আমাকে কেউ সাংবাদিকতায় বা শিক্ষকতায় চাকরি দেবে। দেবে না।’

রাজশাহী মেজিক্যাল থেকে ২০০৮ সালে পাস করা প্রভাতি বলেন, ‘এই একটি চাকরিই ছিল যেখানে ঘুষ লাগতো না। এখন পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ দিতে চাইছে শুধু ঘুষ বাণিজ্যের জন্য।’

আন্দোলনের অংশ নেওয়া সাবিনা ইসলাম রাহি বলেন, ‘নার্সিং পাস করলে চাকরি নিশ্চিত এটা জেনেই তো নার্সিং পড়েছি। যদি জানতাম যে পরীক্ষা দিয়ে নিয়োগ পেতে হবে তাহলে পড়তাম না। অন্য কোনো বিষয়ে পড়তাম।’

বাংলাদেশ ডিপ্লোমা বেকার নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বলেন, আমরা কোন অযৌক্তিক দাবি নিয়ে রাস্তায় নামিনি। প্রধানমন্ত্রীও প্রতিশ্রতি দিয়েছিলেন। আমাদের বিষয়টি হয়তো এখনো প্রধানমন্ত্রীর কান পর্যন্ত পৌঁছায় নি। আমাদের সাথে এমন অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী জানতে পারলে হয়তো তিনি আমাদের দাবি মেনে নিতেন।’

বাংলাদেশ বেসিক গ্র্যাজুয়েট নার্সেস সোসাইটির সভাপতি রাজীব কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘এখনো ২১ হাজার বেকার নার্স রয়েছে। তাদের ব্যাচ, মেধা ও জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতি চাকরি দেওয়ার পর পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগের বিষয়টি ভাবা উচিত ছিল।’

গত ২৮ মার্চ পিএসসি ৩ হাজার ৬১৬ সিনিয়র স্টাফ নার্স পদের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়। এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বাতিল ও আগের মতো জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে নার্স নিয়োগ দেওয়ার দাবিতে প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে বেকার নার্সরা।

নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি - dainik shiksha সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা - dainik shiksha ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0067331790924072