নিয়ম না মেনে ৪৩ শিক্ষককে বদলির অভিযোগ - দৈনিকশিক্ষা

নিয়ম না মেনে ৪৩ শিক্ষককে বদলির অভিযোগ

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি |

সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার যমুনা নদীর চরাঞ্চলের ছয়টি ইউনিয়নের বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪৩ শিক্ষককে বিধিবহির্ভূতভাবে বদলির অভিযোগ উঠেছে। একসঙ্গে এত শিক্ষক বদলি হওয়ায় চরাঞ্চলের প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।

অভিযোগ উঠেছে, উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতিকে পাশ কাটিয়ে অনৈতিক সুবিধার বিনিময়ে শিক্ষকদের বদলি করা হচ্ছে। বিভাগীয়ভাবে সরাসরি আরও দুজন শিক্ষককেও অন্য জেলায় বদলি করা হয়েছে।

এদিকে শিক্ষকদের বদলির এ সিদ্ধান্ত বাতিল চেয়ে উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

ওই লিখিত অভিযোগ ও কয়েকজন শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ২৮ মার্চ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কমিটি এক জরুরি সভায় ৪৩ জন শিক্ষককে প্রতিস্থাপন সাপেক্ষে চরাঞ্চল থেকে অন্যত্র বদলির সিদ্ধান্ত নেয়। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে পরের দিনই জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে রেজল্যুশনসহ সিদ্ধান্ত পাঠানো হয়। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ওই সিদ্ধান্তের আলোকে বদলির আদেশ দেন।

উপজেলা পরিষদ ও শিক্ষকদের একটি সূত্র জানায়, উপজেলা চেয়ারম্যান বিদেশে থাকায় তিনি ২৯ মার্চ সভার দিন নির্ধারণ করেছিলেন। কিন্তু কমিটির অন্য সদস্যরা মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে সভাপতির অনুপস্থিতিতে এক দিন আগেই সভা করেন। এমনিতেই চরাঞ্চলে শিক্ষক কম। তাই এভাবে বদলি করায় চরাঞ্চলের শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

২৭টি বিদ্যালয়ে কম শিক্ষক থাকলেও নিয়ম লঙ্ঘন করে সেখানে বদলি করা হয়েছে। এর মধ্যে উত্তর বুরুঙ্গী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুজন কর্মরত থাকলেও দুজনকেই, চর মানিকদাইড় বিদ্যালয়ে তিনজনের মধ্যে দুজনকে ও দক্ষিণ সালাল বিদ্যালয়ে তিনজন শিক্ষকের মধ্যে দুজনকে বদলি করা হয়েছে। এ ছাড়া বিশুড়িগাছা বিদ্যালয়ে দুজন এবং উজান মেওয়াকোলা নব্য সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঘোড়াগাছা, পারখুকশিয়া, খাসরাজবাড়ী, ভাটি মেওয়াকোলা, যুক্তিগাছা, রেহাই শুড়িবের, ভেটুয়াখোলা বাঁশজান, দক্ষিণ মহিমাপুর নব্য সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তিনজন করে শিক্ষক থাকলেও একজনকে বদলি করা হয়েছে। প্রতিস্থাপন সাপেক্ষে বদলি করা হলেও বেশির ভাগ বিদ্যালয়ে এখনো কেউ যোগ দেননি।

ফুলজোর বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবেদা সুলতানা বলেন, তাঁর বিদ্যালয়ে জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে এক শিক্ষককে বদলি করা হয়েছে।

খাসরাজবাড়ী ইউনিয়নের রাজবাড়ি দক্ষিণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেহানা খাতুন বলেন, তাঁর বিদ্যালয়ে অনুমোদিত পাঁচজনের বিপরীতে চারজন শিক্ষক কর্মরত। এর মধ্যে একজন প্রশিক্ষণে। কিন্তু বিভাগীয়ভাবে মরিয়ম খাতুন নামের এক শিক্ষককে বদলি করা হয়েছে। তিনি ছাড়পত্র না নিয়েই ১৭ এপ্রিল চলে গেছেন।

কাজীপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও শিক্ষা কমিটির সদস্যসচিব ময়নুল হাসান বলেন, মার্চ মাসের মধ্যেই বদলি কার্যকর করার নিয়ম থাকায় জরুরিভাবে সভা করা হয়েছে। সভায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), ভাইস চেয়ারম্যানসহ অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। কোনো অর্থনৈতিক সুবিধাও নেওয়া হয়নি।

ইউএনও সাইফুল ইসলাম বলেছেন, ইউএনও হিসেবে জরুরি সভা আহ্বান করার নিয়ম রয়েছে। এ ছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান ও সদস্যসচিবের নির্দেশেই সভা করা হয়েছে। এখানে নিয়মবহির্ভূত কাজ হয়নি।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কমিটির সভাপতি মোজাম্মেল বলেন, দেশের বাইরে থাকায় ২৯ মার্চ সভার দিন ধার্য করেছিলাম। কিন্তু অনৈতিক সুযোগ-সুবিধা পেতে কমিটির অন্য সদস্যরা এক দিন আগেই সভা করেন। তাঁরা জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আনুপাতিক হার ও চারজন শিক্ষকের নিচে বদলির নিয়ম না থাকলেও করেছেন। একসঙ্গে এত শিক্ষককে বদলি করায় চরাঞ্চলের শিক্ষাব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়েছে। বদলির আদেশ বাতিলের জন্য জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে জানানো হলেও তিনি ব্যবস্থা নেননি।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দিক মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, উপজেলা কমিটির সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা যে তালিকা পাঠিয়েছেন, সে অনুযায়ী বদলির আদেশ দেওয়া হয়েছে। এখানে অনিয়ম হয়নি।

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0040650367736816