পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভলিবল খেলতে গিয়ে স্বাগতিক দলের সমর্থকদের ছোড়া ঢিলের আঘাতে আহত হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী।
শনিবার আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ভলিবল প্রতিযোগিতার সেমিফাইনাল চলাকালে ওই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ নেতাদের মদদে এই হামলা হয় বলে অভিযোগ করেছেন আহতরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দলের ম্যানেজার রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কামরুল হাসান বলেন, “৫ সেটের খেলার এক পর্যায়ে ২-২ সেটে সমতা ছিল। তখন স্বাগতিক দলের সমর্থকরা আমাদের উপর হামলা করে।
“পাশেই কনস্ট্রাকশনের কাজ চলছিল, সেখান থেকে ইট, পাথরের টুকরা ছোড়া হয় আমাদের উপর। এ অবস্থায় আমাদের পক্ষে খেলা আর সম্ভব ছিল না বলে আমরা সেখান থেকে চলে আসি।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টিমের খেলোয়াড় হাসান আল মামুন বলেন, “ওরা বৃষ্টির মতো পাথর ছুড়েছে। আমরা সবাই আহত হয়েছি। হামলার মুখে আমরা খেলা ছেড়ে দিতে বাধ্য হই। পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মোসায়দুল ইসলাম সাদী এবং সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলামের মদদে হামলা হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে সাদী বলেন, “সেখানে আমরা প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারিসহ ছাত্রলীগের সবাই ছিলাম। ওদের উপর কোনো হামলা হয়নি।”
ফেইসবুকে আহত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টিমের খেলোয়াড়দের ছবি আসার কথা জানালে তিনি বলেন, “ভলিবল খেলা ফোমের উপর হয় না, এটা মাটিতে হয়। খেলতে গিয়ে পড়ে ওরা আঘাত পেয়েছে।”
আর সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম বলেন, “হোস্ট হিসেবে আমরা ওদের যতটুকু পারা যায় আপ্যায়ন করেছি। ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে ওদের সব রকমের সাহায্য করেছি। ওরা পড়ে গিয়ে আঘাত পেয়েছে এবং নিশ্চিত পরাজয় বুঝতে পেরে খেলা ওয়াকওভার দিয়েছে।
“গতবার ঢাবিতে অনুষ্ঠিত খেলায় ওরা আমাদের টিমকে মাঠেই নামতে দেয়নি। আমরা কিন্তু এমন করিনি।”
যোগাযোগ করা হলে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. হারুন উর রশিদ বলেন, “আমি এখন ঢাকায় আছি। ঘটনাটি আমি শুনেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে তদন্ত কমিটি গঠন করে এই ব্যাপারে ব্যবস্থা নেব।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, “আমি ঘটনাটি শুনেছি। এটি খুবই নিন্দনীয়। আমাদের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকরা টিম নিয়ে ফিরে আসলে তাদের সাথে আলোচনা করে আমারা ব্যবস্থা নেব।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দলের খেলোয়াড়দের অভিযোগ, প্রতিপক্ষ পবিপ্রবি টিমের ছয়জন খেলোয়াড়ের মধ্যে পাঁচজনই সেনাবাহিনী, পুলিশ ও আনসারের সদস্য।
খেলায় প্রথম তিন সেটে ঢাবি টিম ২-১ এ এগিয়ে থাকে। চতুর্থ সেটে দর্শক সারি থেকে ইট পাথর ছোড়া শুরু হলে খেলায় ২-২ সেটে সমতায় আসে।
তারপরই খেলা চালিয়ে যাওয়া ‘সম্ভব নয়’ জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দলের ম্যানেজার কামরুল হাসান টিম নিয়ে ‘ওয়াক আউট’ করেন।