পরীক্ষার খাতা দেখার নিয়মে কোনও পরিবর্তন হয়নি বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
বুধবার (২রা আগস্ট) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের আয়োজনে শিক্ষা ভবনের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের কনফারেন্স হলে ই-ফাইলিং ও গণশুনানি কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, আমরা কোনো নতুন নিয়ম প্রবর্তন করিনি। এমনকি পরিবর্তনও করিনি। আমরা শুধুমাত্র কার্যকর করেছি। আগে খাতা দেখার যে নিয়ম ছিল তা কার্যকর ছিল না। আমরা যখন ক্ষমতায় এসেছিলাম তখন শিক্ষাব্যবস্থা যথেষ্ট ঘোলাটে ছিল। তা বুঝে উঠতেই আমাদের অনেক সময় কেটে গেছে। এখন আমরা অনেক রহস্য উদঘাটন করেছি এবং সমাধান করছি। খাতা দেখার বিষয়টিও সে রকমই একটা বিষয়।
শিক্ষাখাতে দুর্নীতির কোনো জায়গা নেই উল্লেখ করে মন্ত্রী আরও বলেন, দুর্নীতির বিষয়টি পুরোপুরি পরিবর্তন করতে না পারলেও অনেকাংশে দূর করতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের কার্যক্রম সারাবিশ্বে সমাদৃত হয়েছে। ঘুষ যে দেবে তাকে আমরা কিছু বলব না। কিন্তু ঘুষ যে নেবে তার কোনো ক্ষমা হবে না। শাস্তি তাকে পেতেই হবে। এরইমধ্যে এ রকম দৃষ্টান্ত আমরা স্থাপন করতে পেরেছি।
বক্তব্যের শুরুতে শোকের মাসের বিবৃতি দিতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের শত্রুরাই জাতির জনককে হত্যা করেছিলো। তারা এখনও চায় দেশের ক্ষতি করতে। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর যে শাসন ব্যবস্থা আমরা দেখেছি সেখানে আমাদের সন্তানরা পাঠ্যবইয়ের মাধ্যমে ভুল শিখেছে। সঠিক ইতিহাস অর্জন করতে না পারলে আমাদের আসল উন্নতি কোনদিনই সম্ভব না।
পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক আহমেদ সাজ্জাদ রফিকের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই কার্যক্রমের পরিচালক ও যুগ্ম সচিব ড. মো. আব্দুল মান্নান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: সোহরাব হোসাইন, যুগ্ম সচিব আহমেদ শামীম আল রাজীসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অন্য কর্মকর্তারা।
বক্তারা বলেন, এর আগে আপনারা দেখেছেন ফাইলের কারণে কত ধরণের সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। আমরা সে সমস্যার পরিত্রাণ চাই। আর প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার চাই। কেননা ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন আমরা সবাই দেখি। এ ব্যবস্থার মাধ্যমে দ্রুততার সঙ্গে ফাইল নেওয়া ও নিষ্পত্তি করা সম্ভব। এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনের ক্ষেত্রে ঘুষের যে অপবাদ আমাদের আছে তা ঘুচানো সম্ভব গণশুনানির মাধ্যমে। ভুক্তভোগীরা সরাসরি তাদের সমস্যার কথা জানাতে পারবেন এবং সমাধানও দ্রুত হবে।
এছাড়া কর্মকর্তারা কিংবা মন্ত্রী নিজেও ঢাকার বাইরে কিংবা দেশের বাইরে থাকলেও ফাইল ইন্টারনেটে দেখে দ্রুত সিদ্ধান্ত জানাতে পারবেন বলেও জানান বক্তারা। এতে ফাইল কেন্দ্রিক কাজে ‘পেন্ডিং’ কথাটি একেবারে মুছে ফেলা সম্ভব হবে বলে আশা করেন তারা।
এ সময় শিক্ষা কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতের লক্ষ্যে মন্ত্রী ই-ফাইলিং ও গণশুনানি কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ১১টি স্কুল ও কলেজের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সরাসরি ভিডিওর মাধ্যমে অভিযোগ ও পরামর্শ গ্রহণ করেন। সারাদেশের স্কুল-কলেজগুলোর সঙ্গে এ কার্যক্রম চলমান থাকবে। এছাড়া সরকারি ফাইলকেন্দ্রিক সমস্যা দূর করা ও দ্রুত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ই-ফাইলিং কার্যক্রম চালু হয়।