পরীক্ষা কেন্দ্রে ছাত্রনেতাদের তাণ্ডব - Dainikshiksha

পরীক্ষা কেন্দ্রে ছাত্রনেতাদের তাণ্ডব

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

পাবনার সাঁথিয়ায় পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা চলাকালে পরীক্ষা কেন্দ্রে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতাদের ঢুকিতে না দেওয়ায় তুলকালাম কাণ্ড ঘটিয়াছে বলিয়া জানা যায়। নাগডেমড়া ইউনিয়নের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে ৭/৮ জন নেতা-কর্মী পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশের চেষ্টা করিলে পুলিশ তাহাদের বাধা দেয়। ইহাতে একজন পুলিশ কনস্টেবলকে বেধড়ক পিটাইয়া আহত করা হয়। যাহার নেতৃত্বে এই অপকর্ম সংঘটিত হইয়াছে সে নাগডেমড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং এই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের ছোটভাই। খবর পাইয়া পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সেখানে হাজির হন এবং চেয়ারম্যানের প্রতি প্রশাসনিক চাপ সৃষ্টি করেন। ইহাতে চেয়ারম্যান এই ঘটনায় সম্পৃক্ত তাহার ভাই ও ভাতিজাকে পুুলিশের হাতে তুলিয়া দিতে বাধ্য হন।

এই ধরনের ঘটনা নূতন নহে। প্রায়শ আমরা স্থানীয় এক শ্রেণির প্রভাবশালী ব্যক্তি ও তাহাদের আত্মীয়-স্বজনের দম্ভমূলক আচরণ প্রত্যক্ষ করি। ইহা সকল সরকারের আমলেই কমবেশি ঘটিয়াছে। প্রশ্ন হইল, তাহারা এইভাবে ধরাকে সরা জ্ঞান করিবার দুঃসাহস পায় কোথায়? বস্তুত আইন বা নিয়ম-কানুনকে যাহারা এইভাবে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে, তাহাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয় না বলিয়া এই পরিস্থিতি যুগ যুগ ধরিয়া চলিয়া আসিতেছে। এখন বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাধিবার কাজটি কে করিবেন? পুলিশেরও ধৈর্যের সীমা আছে। তাহারা কেন অন্যায়ভাবে মার খাইবেন? তাহারা নিজেরাই যদি নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন, তাহলে জনগণের নিরাপত্তা নিয়া ভাবিবেন কখন?

অভিযোগ আছে, ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের একশ্রেণির নেতা-কর্মী হলের সিট বিক্রয় করিতেছে টাকার বিনিময়ে। সেখানে হল কর্তৃপক্ষ নীরব। কেননা তাহারাও ক্ষমতার একই ভরকেন্দ্র হইতে আশীর্বাদপুষ্ট। অবশ্য ষাট দশকেও যে সিট বাণিজ্য ছিল না তাহা নহে। এখন এই দুষ্টচক্র হইতে বাহির হইয়া আসিয়া ন্যায়ের দণ্ড প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা অনেকে ভাবেন। ভাবেন হলগুলিতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার কথাও। কিন্তু যেখানে শিক্ষার্থীদের ন্যায়সংগত অধিকার প্রতিষ্ঠায় হল সংসদ ও কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদই অকার্যকর, সেখানে এই ধরনের দাবি তোলাটাকে অনেকে অরণ্যে রোদন হিসাবে বিবেচনা করিতেই পারেন। এই রকম পরিস্থিতিতে সাঁথিয়ার এই ঘটনাটি অনেকের কাছে মামুলি বিষয় মনে হইতে পারে।

কিন্তু গভীরভাবে দেখিলে এই প্রবণতার পরিণাম ভয়াবহ। এমনিতেই দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় নানা সংকট বিরাজ করিতেছে। তাহার উপর পরীক্ষা কেন্দ্রে বহিরাগতদের প্রবেশ করিতে দিলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হওয়াই স্বাভাবিক। ইহা পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের পথকে আরো সহজ করিয়া দিতে পারে। শুধু তাহাই নহে, একশ্রেণির ছাত্র নেতা-কর্মীদের সীমালঙ্ঘন এমন পর্যায়ে পৌঁছাইয়া গিয়াছে যে, তাহারা আজকাল খোদ শিক্ষকের গায়ে হাত তুলিতেও দ্বিধা করে না। তাহারাই এখন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকদের গায়ে হাত তুলিবার ধৃষ্টতা দেখাইতেছে। আমরা ইহার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং দুর্বৃত্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করি।

সৌজন্যে: ইত্তেফাক

দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.007519006729126